২০০৯ সালে ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়র’ ছবির জন্য দু’টি অস্কার এসেছিল রহমানের ঝুলিতে। —ফাইল চিত্র
আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি অ্যাকাডেমি পুরস্কার দেওয়া হবে আগামী ১২ মার্চ, লস এঞ্জেলেসের এক প্রেক্ষাগৃহে। ভারত থেকে তিনটি বিভাগে মনোনয়ন মিলেছে পুরস্কারের। মৌলিক গান, পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র এবং স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র। উপস্থাপক হিসাবে থাকবেন বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন।
এই আবহে অ্যাকাডেমি অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডলে খ্যাতনামী সঙ্গীত পরিচালক এআর রহমানের অস্কার পুরস্কার গ্রহণ সংক্রান্ত বক্তব্য ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। ভিডিয়োটিতে শোনা যায় রহমানের অনবদ্য অভিজ্ঞতার কথা। ২০০৯ সালে ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়র’ ছবির জন্য দু’টি অস্কার এসেছিল তাঁর ঝুলিতে।
প্রথম বার যখন তাঁর নাম ধরে ডাকা হয়েছিল, তিনি তামিল ভাষায় উচ্চারণ করেছিলেন একটি বাক্য, যার অর্থ, এর সব কৃতিত্বই ঈশ্বরের।
রহমান জানিয়েছেন, পুরস্কার গ্রহণের আগে তিনি চমৎকার নৈশভোজে গিয়েছিলেন। সংশয় প্রকাশ করে রহমান বলেছিলেন, “ভারতের সকলে আনন্দ করেছিল কি না, আমি জানি না। কিন্তু যখন আমার নাম ডাকা হয়েছিল, ভাবছিলাম, এটা কি সত্যি? না কি স্বপ্ন? আমায় যে হেতু তার পরেই পারফর্ম করতে হত, নিজেকে বুঝিয়েছিলাম, বেশি উচ্ছ্বাসের কোনও কারণ নেই, নিজের অনুষ্ঠানটা নষ্ট করলে চলবে না।’’
দ্বিতীয় বার সেরা গানের জন্য তাঁকে মঞ্চে ডাকা হলে তিনি বলেছিলেন, “সারা জীবন ধরে ভালবাসা ও ঘৃণার মধ্যে আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমি ভালবাসাই বেছে নিয়েছি। তাই এখন আমি এখানে। ঈশ্বরের অসীম দয়া।”
রহমান সেই মুহূর্তের স্মৃতি মনে করে বলেন, “আমি বলেছিলাম, ছবির মূল সুর আশাবাদ, কারণ বিশ্ব তখন অর্থনৈতিক টালমাটালের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। মানুষের ঘরে ঘরে দুর্ভোগের বাতাবরণ। সেই সময়ে ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়র’-এর মতো ছবি দেখলে সবাই আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন, ছবিটি এমন ভাবেই তৈরি।”
তবে তা নিয়ে দানা বেঁধেছিল বিতর্ক। রহমানের দাবি, তাঁর বক্তব্যকে কেউ কেউ ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। ধর্মের নিক্তিতে মাপা হয়েছিল তাঁর ভাবনাকে। কিন্তু রহমান বলেন, “এটি যে কোনও শিল্পীর কথা এবং এই মানসিকতাই তাকে শিল্পী তৈরি করে। তারা ভালবাসা দিতে চায়, ভালবাসা দেওয়ারই বিষয়, নেওয়ার নয়।”
রহমানের অস্কার জেতাও প্রায় ১৩ বছর হয়ে গেল। শিল্পীর অস্কার জেতার দিন উপোস থাকার গল্প অনেকেরই জানা। তবে অস্কার নিয়ে ভারতে ফেরার সময় বেগ পেতে হয়েছিল তাঁকে। জামাকাপড়ের ব্যাগে ভরে নিয়েছিলেন দু’টি অস্কার। তবে বিমানবন্দরে পৌঁছনো মাত্র তাঁকে আটকান নিরাপত্তারক্ষী। প্রায় ১০০ জনের লাইনে তখন দাঁড়িয়ে রহমান। তবে ব্যাগবন্দি অস্কার দেখানো মাত্রই অন্য রূপ তাঁদের। প্রশংসা, শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দেন সকলে।