পরিচালক পায়েল কাপাডিয়া। ছবি: সংগৃহীত।
শনিবার সকালেই কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘আন সার্টন রিগার্ড’ বিভাগে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর সম্মান পেয়েছেন কলকাতার মেয়ে অনসূয়া সেনগুপ্ত। এ দিন রাতে ফের সুখবর। ভারতের নাম উজ্জ্বল করলেন আর এক কন্যা, তিনি পরিচালক পায়েল কাপাডিয়া। তাঁর ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ় লাইট’ সিনেমার জন্য গ্রাঁ প্রি পেলেন পায়েল। প্রায় তিরিশ বছর পর কোনও ভারতীয় ছবি কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম সারিতে মনোনয়ন পায়। কানের সর্বোচ্চ সম্মান পাম ডি’ওর অল্পের জন্য হাতছাড়া হলেও উৎসবের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান গ্রাঁ প্রি পুরস্কার জিতল পায়েলের ছবি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে যে মেয়ে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করলেন ও সম্মানিত হলেন, একদা পুণের এফটিআই (ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া)-এর প্রাক্তনী এই পায়েলেরই অনুদান আটকে দেয় সরকারি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সালটা ২০১৫। ফিল্ম স্কুলে পড়াকালনীই পায়েল প্রতিবাদ করেন এই খ্যাতনামী কলেজে নিযুক্ত চেয়ারম্যানের পদে নিয়োগ নিয়ে। হিন্দি টেলিভিশন অভিনেতা গজেন্দ্র চৌহানকে সেই সময় গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। সেই সময় প্রতিবাদে নামেন পড়ুয়ারা। চার মাস টানা প্রতিবাদ জানান তাঁরা। শেষমেশ ওই পদ থেকে ইস্তফা দেন ‘মহাভারত’ খ্যাত অভিনেতা গজেন্দ্র। সেই সময় আন্দোলনে শামিল ছিলেন পায়েল। ক্লাস বয়কট, অফিস ঘেরাও, মানবশৃঙ্খল তৈরি করে প্রতিবাদ জানানো— সব কিছুতেই যোগ দেন তিনি। সেই সময় সাত জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও ৩৫ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করে। তাতেই নাম ছিল পায়েলের। এর পর কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়েন তিনি। তাঁর অনুদান বন্ধ করে দেন এফটিআই কর্তৃপক্ষ। এমনকি, ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে’ যাওয়ার পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তবে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই কানের মঞ্চে সম্মানিত অন্ধ্রপ্রেদেশের মেয়ে পায়েল। পুরস্কার পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতায় মনোনীত হওয়াই আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। এটা তো কল্পনারও অতীত! সকলকে ধন্যবাদ।’’