‘অরাজনৈতিক’ প্রতিবাদ প্রসঙ্গে পিয়া চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থক না হওয়া মানেই অরাজনৈতিক হওয়া নয়। আমার মতে, ‘অরাজনৈতিক’ হওয়া মানে সমাজের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা। আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা, বা তার সঙ্গে যুক্ত বৃহত্তর অর্থনীতি, রাজনীতি বা সামাজিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখাই হল অরাজনৈতিক থাকা।
আমি ছোটবেলা থেকেই ভীষণ ভাবে রাজনৈতিক। আমার রাজনীতি হল, আমি কিছু আদর্শ, জীবনবোধ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে পৃথিবীটাকে দেখব এবং মতামত পোষণ করব। তার জন্য আমার কোনও দলের হয়ে কথা বলতে হবে, এমন কোনও নিয়ম নেই।
এই আন্দোলন পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের কাছে, তৃণমূল সরকারের কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর চাইছে এবং কিছু খুব স্পষ্ট দাবি রাখছে। বিরোধীরা তো থাকবেনই। তাঁরা বিভিন্ন ভাবে আন্দোলনকে প্রভাবিত করতে চাইবেন। এটা প্রত্যাশিত। বিরোধী পক্ষকে বলতে চাই, আমরা কোনও দল করি না, বা কোনও নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করি না। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো ভীষণ ভাবে রাজনৈতিক। দল সমর্থন করি না শুনলে তাঁরা বেজায় চটে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে আক্রমণ করছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বিরোধিতায় শুধু বাম-রাম চক্রান্ত দেখছেন। অর্থাৎ দলীয় রং, দলীয় পতাকার বাইরে কিছু দেখতে চাইছেন না তিনি। ঠিক তেমনই বিরোধী দলগুলি— সিপিএম বা বিজেপি সমর্থকেরা চাইছেন, তাঁদের দলের হয়ে যেন আমরা কথা বলি এবং সেটা না বললেই আমরা অরাজনৈতিক হয়ে যাচ্ছি তাঁদের চোখে।
কিন্তু এই আন্দোলনের বৃহদাংশ হল অদলীয় সুশীল সমাজ। এই আন্দোলনকে তার যথার্থ স্বীকৃতি দেওয়া হোক। এটা মূলত সাধারণ মানুষ, পশ্চিমবঙ্গবাসীর আন্দোলন।
(লেখক পেশায় সমাজকর্মী ও গায়িকা। মতামত নিজস্ব)