পল্লবীর মতো সাগ্নিকের আরও এক বান্ধবী সৌমি মণ্ডলের রহস্যমৃত্যু ঘটেছিল আট বছর আগে। —নিজস্ব চিত্র।
শুধুমাত্র পল্লবী দে-ই নয়, আট বছর আগে সাগ্নিক চক্রবর্তীর আরও এক বান্ধবীর অকালমৃত্যু ঘটেছিল। সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণেই আট বছর আগে সৌমি মণ্ডল নামে হাওড়ার জগাছার একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হয়েছিলেন বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের। পল্লবীর মৃত্যুর পর নতুন করে সামনে এসেছে সৌমির মৃত্যুর ঘটনা।
সৌমির বাবা অজয় মণ্ডলের বক্তব্য, ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ তাঁর মেয়ে সৌমির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ঘর থেকে। সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। অজয়ের দাবি, সৌমির সঙ্গে সাগ্নিকের প্রেম-ভালবাসা ছিল। সৌমি এবং সাগ্নিক দু’জনেই হাওড়ার জগাছার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন। এর পর তাঁরা ভর্তি হন ফোর্ট উইলিয়াম কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ‘আত্মহত্যা’ করেন সৌমি। সেই সময় দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন সাগ্নিক।
অজয়ের অভিযোগ, ‘‘সাগ্নিক চক্রবর্তীই আমাার মেয়ের মৃত্যুর জন্য একশো শতাংশ দায়ী। সাগ্নিকের সঙ্গে সৌমির প্রেম-ভালবাসা ছিল। আমাদের বাড়িতে ওর যাওয়া-আসা ছিল। আমি বারণ করতাম। কারণ সাগ্নিকের চরিত্র ভাল নয়। ও আমার মেয়ের সঙ্গে রাস্তাঘাটে দুর্ব্যবহার করত। পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল। অন্য ছেলেকে দিয়ে বিরক্ত করত। ওকে পুলিশের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। জগাছা থানার পুলিশের কাছে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু জগাছা থানার পুলিশ তা সমর্থন করেনি। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন ওদের মধ্যে বন্ধুতা তৈরি হয়েছিল। সেই সম্পর্কে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছিল। মেয়ের মৃত্যুতে আমরা ব্যথিত। তবে পল্লবীর বাবা-মা আজ সেই সাগ্নিককে বিচারের এক্তিয়ারে আনতে পেরেছেন। সাগ্নিক সরে গিয়েছিল সম্পর্ক থেকে। কিন্তু তার আগে ও অন্য একটি ছেলের সঙ্গে মেয়েকে জড়িয়ে দিয়েছিল। সেই টানাপড়েনেই ওর মৃত্যু হয়।’’
সৌমির মা ইলা মণ্ডল বলছেন, ‘‘ঐন্দ্রিলার কথা এখন নানা জায়গায় শুনতে পাচ্ছি। মনে হচ্ছে, ওকে গিয়ে মারি। এত মিথ্যা কথা কেন বলছে ও! ও তো আমার মেয়ের সময় থেকে সাগ্নিকের বন্ধু। আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর সাগ্নিককে নিয়ে ঐন্দ্রিলা আমাদের বাড়িতে এসেছিল। সে কী করে এখন ওই কথা বলে? আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য সাগ্নিক তো দায়ী বটেই। আমার মেয়ে ১৬ বছর বয়সে মারা গিয়েছে। ওরা বাইরে গন্ডগোল করেছে, মারপিট করেছে। এমন খবরও আমি পেয়েছি। সাগ্নিক আমার বাড়িতে দু’বেলা আসত। মেয়েকে টিউশনও ঠিক করে দিয়েছিল।’’