শরদিন্দুর অসমাপ্ত উপন্যাস পদ্মনাভর কলমে
সব ঠিক থাকলে ৩০ মে শ্যুট শুরু অরিন্দম শীলের নতুন ‘ব্যোমকেশ’-এর। নতুন ছবির বড় চমক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত উপন্যাস ‘বিশুপাল বধ’। তাকে চিত্রনাট্যে সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব পদ্মনাভ দাশগুপ্তের।
এমন গুরু দায়িত্ব পেয়ে কি হাঁসফাঁস দশা চিত্রনাট্যকারের? শ্যুট শুরুর আগে বিষয়টি জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল পদ্মনাভর সঙ্গে। তাঁর দাবি, ‘‘বিষয়টি একেবারেই সহজ ছিল না। শরদিন্দুবাবুর অসমাপ্ত লেখা শেষ করার দায়িত্ব বিশাল। তাই আমি আর পরিচালক আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করি, আমরা নিজেদের মতো করে শেষ করার চেষ্টা করব না। কারণ, কোনও সাহিত্যিক যখন গোয়েন্দা উপন্যাস লেখেন, তখন তিনি লিখতে লিখতেই অপরাধীর জন্ম দেন। এমন কিছু বৈশিষ্ট্য গল্পে ছড়িয়ে দিতে থাকেন যার সূত্র ধরে পরে জানা যায় কে প্রকৃত অপরাধী।’’ এর পরেই পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকার খুঁটিয়ে পড়তে থাকেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত উপন্যাস। বিশেষ লক্ষ্য রাখেন নামের উপরে। কারণ, ব্যোমকেশের স্রষ্টার লেখায় নামের ভূমিকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এ ভাবে ঔপন্যাসিকের লেখার সমস্ত দিক মাথায় রেখে চিত্রনাট্য শেষ করেন পদ্মনাভ। তাঁর আশা, দর্শকদের খুব খারাপ লাগবে না।
পদ্মনাভ এ-ও জানান, আরও একটি বিষয় তাঁকে এ ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে। তিনি উপন্যাসের আকারে ‘বিশুপাল বধ’ শেষ করার দায়িত্ব পাননি। তাঁকে চিত্রনাট্য লিখতে হবে। এবং ছবির প্রয়োজনে অনেক সময়েই সেটা করতে হয়। এই সুবিধেটুকু তাঁর কাছে মস্ত প্রাপ্তি, বক্তব্য চিত্রনাট্যকারের। তাই তিনি তাঁর মতো করে চিত্রনাট্য আকারে পুরোটা সাজাতে পেরেছেন। কেউ যদি উপন্যাস আকারে ‘বিশুপাল বধ’ লেখার অনুরোধ জানাত, তা হলে তিনি মোটেই রাজি হতেন না বলে সোজাসুজিই জানিয়েছেন পদ্মনাভ। কারণ, তাঁর লেখায় শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ম্যাজিক’ নেই।
এখনও ব্যোমকেশ এবং শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালির আবেগ। তাঁর অসমাপ্ত উপন্যাসের চিত্রনাট্য রূপ দেওয়ার সময় নিশ্চয়ই বুক ঢিপ ঢিপ— এক চুল এ দিক ও দিক হলেই কেলেঙ্কারির একশেষ? বিষয়টি অস্বীকার করেননি পদ্মনাভ। নির্দ্বিধায় বলেছেন, ‘‘বিতর্ক থাকবেই। এ নিয়ে বলে বা ভেবে লাভ নেই। সবাইকে একসঙ্গে খুশি করা সম্ভবও নয়। কিছু জনের কাছে নিন্দিত হব। কিছু জনের কাছে নন্দিত।’’ তবে প্রচুর গবেষণা এবং পরিশ্রমের পরে চিত্রনাট্য শেষ করে তৃপ্ত চিত্রনাট্যকার।