বিজ্ঞাপনে তাঁর সদ্যস্নাত চেহারা ঝড় তুলেছিল মহিলাদের হৃদয়ে। মডেলিংয়ের দুনিয়ায় তুমুল সাফল্যের পরে আত্মপ্রকাশ ছবিতে। কিন্তু সেখানে জনপ্রিয়তা তো দূর অস্ত্! দীপক মলহোত্র যেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে মিলিয়ে গেলেন বুদ্বুদের মতোই।
বেঙ্গালুরুর ছেলে দীপকের মডেলিং কেরিয়ার শুরু নিজের শহরেই। তার পর তিনি চলে আসেন মুম্বই। সেখানে বিজ্ঞাপনের অফারে তিনি ভেসে যান। প্রিন্ট ও বৈদ্যুতিন, দুই মাধ্যমেই দীপক ছিলেন বিজ্ঞাপন নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ।
শুধু পুরষদের ব্যবহার্য, এমন পণ্যের বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হত দীপকের জনপ্রিয়তাকে। তাঁর কাছে আসতে থাকে ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ। কিন্তু ছবিতে সই করা বিষয়ে প্রথম থেকেই দীপক খুব চুজি ছিলেন।
১৯৯১ সালে যশ চোপড়ার ছবি ‘লমহে’ তে প্রথম অভিনয় দীপকের। তাঁর অভিনীত চরিত্রের নাম ছিল সিদ্ধার্থ ভাটনগর। অনস্ক্রিন তাঁকে দেখতে দারুণ লাগলেও মাটি করে দেয় দুর্বল অভিনয়।
অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর কণ্ঠস্বরও অভিনয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তা ছাড়া চলচ্চিত্র সমালোচকদের মতে, দীপকের চেহারায় ভারতীয়ত্ব কম ছিল। বরং, বলিউডের তুলনায় তাঁর অনস্ক্রিন উপস্থিতি ছিল পাশ্চাত্য প্রভাব-ছোঁয়া।
‘লমহে’-এর পর কেরিয়ারের প্রথমেই তাঁর নামের পাশে বসে যায় ‘ব্যর্থ অভিনেতা’-র তকমা। যে দীপককে অ্যারামাস্ক সাবানের বিজ্ঞাপনে দেখেই মহিলারা মুগ্ধ হয়ে যেতেন, সেই দীপক-ই ছবিতে বিশেষ সুযোগ পেলেন না।
১৯৯৪ সালে ‘তেজস্বিনী’ ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এর পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞাপন ও বড়পর্দা, বিনোদনের দু’টি মাধ্যম থেকেই মিলিয়ে যান তিনি।
কাজের থেকেও দীপক আলোচিত বেশি হতেন লুবনা অ্যাডামসের সঙ্গে তাঁর প্রেমের কারণে। মডেল ও কোরিয়োগ্রাফার লুবনার সঙ্গে ১১ বছর তাঁর সম্পর্ক ছিল। লুবনা তাঁকে ডাকতেন ডিনো বলে।
শোনা যায়, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি তাঁরা বিয়ে করেন। তার পর পাড়ি দেন নিউ ইয়র্কে। অভিনয় থেকে বহু দূরে দীপক সেখানে ব্যস্ত তাঁর ব্যবসা নিয়ে।
দীপকের এক আত্মীয় সংবাদমাধ্যমে জানান, দীপক আমেরিকাতেই থাকেন। তবে প্রচারের আলোয় আসার কোনও ইচ্ছে নেই তাঁর।
বলিউড ছেড়ে যাওয়ার পর দীপককে নিয়ে ধোঁয়াশা ঘিরেই থাকে। সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দীপকের বর্তমান নাম এখন ডিনো মারত্তেল্লি। তিনি নাকি ইতালিতে থাকেন।
দীপকের বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন এবং দর্শকদের কৌতূহল রয়েই গিয়েছে। অতীতের জনপ্রিয় এই মডেল নিজেই তাঁর চারপাশ থেকে নীরবতার পর্দা উঠতে দেননি।