নুসরত জাহান এবং নিখিল জৈন।
নুসরতের বিবৃতির সরাসরি উত্তর দিলেন নিখিল জৈন। তিনি জানিয়েছেন, ‘বিয়ে নিয়ে আমার পরিবার এবং আমাকে যে দোষারোপ করা হচ্ছে, তার সত্যতা প্রকাশ করতেই এই বিবৃতি।’
১। আমি নুসরতের প্রেমে পড়েছিলাম। বিয়ের প্রস্তাবও আমিই দিই এবং নুসরত তা খুশি মনে গ্রহণ করে। আমরা পরিকল্পনা করি বিদেশে গিয়ে বিয়ে করার। সেই মতো ২০১৯ সালে তুরস্কে আমাদের বিয়ে হয় এবং বৌভাত হয় কলকাতায়।
২। আমরা স্বামী-স্ত্রীর মতোই থাকতাম। সমাজ সেই চোখেই আমাদের দেখেছিল। একজন দায়িত্ববান মানুষ এবং স্বামী হিসেবে যা করার আমি তাই করেছি। আমাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব সকলেই জানে আমি নুসরতের জন্য কী কী করেছি। ও যা করত, তাতেই আমার সমর্থন ছিল। কোনও দিন কোনও ধরনের শর্ত ওর উপর চাপাইনি। কিন্তু খুব কম সময়ের মধ্যেই নুসরত বদলে যায়। আমাদের দাম্পত্যেও খানিক ছেদ পড়ে।
৩। আমি বুঝতে পারি, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে একটা সিনেমার জন্য শ্যুট করতে গিয়েই আমার প্রতি আমার স্ত্রীর আচরণ সম্পূর্ণ বদলে যেতে শুরু করে। কেন, তার সব চেয়ে ভাল উত্তর ওর কাছেই আছে।
৪। আমরা যখন একসঙ্গে থাকতাম, নুসরতকে বারবার বলতাম আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করে নিতে। প্রত্যেকবার দেখেছি ও সেটা এড়িয়ে যেত।
৫। ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর ও আমাকে ছেড়ে চলে যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় ওর ব্যবহৃত সমস্ত মূল্যবান জিনিসপত্র, কাগজ এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি। ও বালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে। তার পরে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমরা আর কোনও দিন একসঙ্গে থাকিনি। ওর ফেলে যাওয়া যাবতীয় জিনিসপত্র এবং আয়কর সম্পর্কিত নথি সব কিছুই কয়েক দিনের মধ্যে ওর ফ্ল্যাটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এক নজরে নুসরতের বিবৃতি।
এক নজরে নিখিলের বিবৃতি।
৬। সংবাদমাধ্যমে এখন দেখছি, ওর চলে যাওয়া এবং আমাদের সম্পর্ক, প্রতারণা, সব বিষয়ে একের পর এক খবর। খুব খারাপ লাগা থেকেই থাকতে না পেরে ৮ মার্চ, ২০২১-এ আমি ওর বিরুদ্ধে আলিপুর আদালতে সিভিল স্যুট (দেওয়ানি মামলা) দায়ের করি।
৭। যেহেতু আমাদের সম্পর্কের বিষয় এখন আদালতের বিচারাধীন, ফলে আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনও ধরনের মন্তব্য করতে পারব না। আমি করতে চাইওনি। কিন্তু ওর গতকালের বিবৃতি আমাকে বাধ্য করেছে সত্যকে প্রকাশ করতে।
৮। আমাদের বিয়ের পর দেখেছিলাম নুসরতের উপর মোটা অঙ্কের গৃহঋণের বোঝা। ওই সমপরিমাণ অর্থ আমি আমার পারিবারিক অ্যাকাউন্ট থেকে ওর অ্যাকাউন্টে দিয়ে দিই। আমার এটাই ধারণা ছিল যে মাসিক কিস্তির মাধ্যমে ও সেই টাকা আমাদের পারিবারিক অ্যাকাউন্টে ফিরিয়ে দেবে। ও যে আমার পারিবারিক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছে, তা আসলে ওর ঋণের টাকাই ফিরিয়ে দিচ্ছিল। যা আমি বিশ্বাস করে ওকে দিয়েছিলাম। ওর তরফ থেকে এখনও অনেক টাকা বাকি আছে। ও বিবৃতিতে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে, সেগুলি মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন। এর মাধ্যমে আমি অপমানিত হয়েছি। এই আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমি যে কথা উল্লেখ করলাম, তার জন্য কোনও প্রমাণ আমাকে খুঁজতে হবে না। কারণ সব প্রমাণই আছে। আমার ব্যাঙ্ক এবং ক্রেডিট কার্ডের বিবৃতি এই সত্যকে সমর্থন করার জন্য যথেষ্ট। আমার পরিবার নিজের মেয়ে ভেবে নুসরতকে দু'হাত বাড়িয়ে গ্রহণ করেছিল। আমরা কেউই বুঝতে পারিনি এই দিন আমাদের দেখতে হবে।
৯। এই পরিস্থিতিতে আমি সমস্ত সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করছি, আমাকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও প্রশ্ন না করতে। এই বিষয় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং বর্তমানে আদালতের অধীন।