কীর্তি
প্র: লকডাউন পর্ব কেমন কাটছে আপনার?
উ: পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কাটানোর মতো সময় পাই না তেমন, এখন সেটা করতে পারছি। ঘরেই বেসিক এক্সারসাইজ়, যোগাসন, একটু-আধটু রান্নাবান্না, গান শোনা, সিরিজ় দেখা... আর পাঁচজনের মতো আমিও এ সব করেই কাটাচ্ছি লকডাউন। এমনিতেও আমি বাড়িতে থাকতেই সবচেয়ে বেশি ভালবাসি, তাই ঘরে বন্দি থাকা নিয়ে খুব একটা অভিযোগ নেই আমার।
প্র: ‘ফোর মোর শটস প্লিজ়!’-এর প্রথম সিজ়ন তো বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। দ্বিতীয় সিজ়নে নতুন কী পাবেন দর্শক?
উ: আমার চরিত্রটার (অঞ্জনা মেনন) কথা বলতে পারি। আরও অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে এ বার অঞ্জনা। আমার মনে হয় বাড়িতে থাকা দর্শক খুবই উপভোগ করবেন সিজ়ন টু। আসলে এই সিরিজ়ের পুরো টিমটাই প্রায় এই প্রজন্মের, কমবয়সি। তাই হইহই করে কাজ করেছি। কারও কোনও ব্যাগেজ নেই, কেউ নিজেকে সিরিয়াসলি নেয় না, সকলেই চিলড আউট।
প্র: সায়নী (গুপ্ত), মানবী (গাগরু), বাণীর (জে) সঙ্গে কত ভাল বন্ডিং তৈরি হল আপনার?
উ: উদয়পুর আর ইস্তানবুলে খুব টাইট শিডিউলের মধ্যেও মজা করেছি আমরা চার জন। আগের সিজ়নের চেয়েও এ বারে আমাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়েছে, যেটার প্রতিফলন পর্দাতেও ঘটবে বলেই আমার বিশ্বাস। আসলে মু্ম্বইয়ে ট্রাফিকেই এত সময় চলে যায় যে, শুটিংয়ের পরে একে অন্যের সঙ্গে কাটানোর মতো সময় পাওয়া যায় না। আউটডোরে বন্ডিংটা অনেক মজবুত হয়। একসঙ্গে থাকা, খাওয়া, আড্ডা... যেমন আমি আর মানবী খুব ভাল বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম ইস্তানবুলের আউটডোরের পর। চার দিন শুটিংয়ের চাপে নিঃশ্বাস ফেলার সময় পাইনি। তার পর আমি আর মানবী একটা বিচ টাউনে একসঙ্গে গার্লস ট্রিপে গিয়েছিলাম এক সপ্তাহের জন্য।
প্র: আপনার হাতে ওয়েবে পরপর কাজ। ফিল্মের ক্ষেত্রে মাল্টিস্টারারে বেশি দেখা যায়, লিড রোলের পরিবর্তে। ওয়েবের অফারকেই কি এগিয়ে রাখছেন এখন?
উ: দেয়ার আর মোর স্টারস ইন ফিল্ম, দেয়ার আর মোর অ্যাক্টরস ইন ওটিটি— এই কথাটা বিশ্বাস করি আমি। আর আমি স্টারদের চেয়ে অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করা বেশি পছন্দ করি। আই প্রেফার অ্যাক্টরস মোর ইন বলিউড ফিল্মস টু। লিড আরও বেশি করে করতে চাইব ঠিকই। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে লিড, সাপোর্টিং, স্পেশ্যাল অ্যাপিয়ারেন্স, ছোট কিংবা বড় চরিত্র নিয়ে বাছবিচার করার মানসিকতা নেই আমার। বরং বিভিন্ন ধরনের চরিত্র যাঁরা একইসঙ্গে করতে পারেন, তাঁদের অনেক বেশি শ্রদ্ধা করি।
আরও পড়ুন: কার্তিকের নতুন শো
প্র: অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয়কুমার, ইরফান খান, বিদ্যা বালনের মতো স্টারদের সঙ্গে কাজ করেছেন আপনি, যাঁরা অভিনেতা হিসেবেও বেশ দড়...
উ: মিস্টার বচ্চনের ডেডিকেশন আর কাজের প্রতি ইনভেস্টমেন্ট শেখার মতো। ওঁকে ‘পিঙ্ক’-এর সেটে দেখলে নিজেকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করত, আমি কি যথেষ্ট সিরিয়াসলি কাজটা করছি? অক্ষয় আবার ঠিক উল্টো, ভীষণ মজাদার। আমি সেটে সাধারণত সিরিয়াস থাকি, সেটা দেখলেই কোনও না কোনও ইয়ার্কি মেরে বলত, ‘ইতনা সিরিয়াসলি কিউঁ লেতি হ্যায়?’ মজার মুডে না থাকলে উনি একটা শটও দেবেন না! আর বিদ্যা বালনের শুধু অভিনয় বা স্ক্রিন প্রেজ়েন্স নয়, বহু বছর ধরেই খুব কাছ থেকে চিনি ওঁকে। শিশুদের মতো সরল মানুষ, একইসঙ্গে ভীষণ এলিগ্যান্ট। ‘মিশন মঙ্গল’-এ সুযোগ পেয়েছিলাম খুব কাছ থেকে শেখার। ইরফান খানের সঙ্গে ‘ব্ল্যাকমেল’-এর অভিজ্ঞতাও দারুণ। বিরাট মাপের অভিনেতা।
প্র: এর পর কী কী কাজ রয়েছে আপনার হাতে?
উ: একটা ওয়েব সিরিজ়ের সিজ়ন টু প্রায় শেষের দিকে, যেটার ব্যাপারে এখনই কথা বলতে পারব না। তবে এই ধরনের চরিত্রে আমাকে দর্শক এর আগে দেখেননি। অগস্ট-সেপ্টেম্বরে রিলিজ় হওয়ার কথা ছিল। তার পর আরও একটা সিরিজ় রয়েছে। ‘দ্য গার্ল অন দ্য ট্রেন’-এর রিমেকও রয়েছে হাতে। একটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিচার ফিল্মেও কাজ করেছি, যেটা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রিলিজ় করবে। এ ছাড়া পবন কৃপালনির একটা শর্টফিল্ম।
আরও পড়ুন: বলিউডের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অনুরাগ-সুজিত
প্র: ‘বার্ড অব ব্লাড’-এর প্রথম সিজ়ন তেমন ভাবে প্রশংসিত হয়নি। সাফল্য-ব্যর্থতায় কতটা প্রভাবিত হন আপনি?
উ: আগে অডিশনের ছোট ছোট রিজেকশনেই খুব প্রভাবিত হতাম। কিন্তু এখন সামলে নিতে শিখে গিয়েছি। আসলে পরপর কাজ থাকায় মন খারাপ করার সময়ও বিশেষ পাই না (হাসি)। প্রত্যেক দিন ঘুম থেকে উঠেই মনে হয়, ‘হোয়াটস নেক্সট’?