কৌশিক এবং তৃণা।
করোনা, লকডাউন, মন খারাপ…অথচ বিনোদনের ক্লান্তি নেই। একটি নতুন ধারাবাহিক, নতুন রিয়ালিটি শো-র পরে এ বার আসতে চলেছে স্টার জলসার আরও এক নয়া ধারাবাহিক ‘খড়কুটো’। মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে অভিনেত্রী তৃণা সাহা এবং কৌশিক রায়কে। এই প্রথমবার জুটি হিসেবে কাজ করছেন তাঁরা। তৃণাকে শেষ দেখা গিয়েছিল ‘কলের বউ’ ধারাবাহিকে। অন্যদিকে, কৌশিক অভিনয় করেছিলেন ‘ফাগুন বউ’-এ। ‘খড়কুটো’র চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং প্রযোজক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়।
এক মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প, যে পরিবারটি কিছু প্রাচীনপন্থী ধ্যানধারণাআঁকড়ে বাঁচে। সেই পরিবারেই প্রবেশ ঘটে গুনগুনের(তৃণা)। গুনগুন শিক্ষিতা, সুন্দরী, আধুনিকা। ওই পরিবারের কাছে অনেকটাই বেমানান। এর পর কী হয় তা এখনই খুলে বলতে নারাজ টিম খড়কুটো। ধারাবাহিকটির এমন নাম কেন? লীনা বললেন, “খড়কুটো মানে লাস্ট রিসর্ট, শেষ আশ্রয়। ওই পরিবারটির কাছে বাড়িটিই একমাত্র খড়কুটো। এ রকম অনেক পরিবার রয়েছে আমাদের চারপাশে।’’
কথায় কথায় জানা গেল, এই একটি ধারাবাহিকের জন্যই নাকি পাঁচ থেকে ছ’বার লুক সেটের ‘পরীক্ষা’ দিতে হয়েছিল তৃণাকে। অথচ তৃণা ভাল করে জানতেনই না ঠিক কোন ধারাবাহিকের জন্য অডিশন দিচ্ছেন তিনি। বললেন, “শুধু জানতাম লীনাদি’র কাজ। মন দিয়ে করার চেষ্টা করেছি।” তবে প্রোমো শুটের দিন সেটে ঢুকে চমকে গিয়েছিলেন তৃণা। হাসতে হাসতে বললেন, “কেন চমকাব না? কী সব স্টারকাস্ট। দেখেই তো ভয় লেগে যায়। আমার উল্টো দিকে কৌশিকদা, তুখোড় একজন অভিনেতা। চন্দনদা রয়েছেন, রত্নাদি রয়েছেন, সোহিনীদি, অম্বরীশদা…সবাই নিজের নিজের জায়গায় সেরা।”
ধারাবাহিকে নয়া লুক
টলিউডের তিন-চার জন বেশ পরিচিত মুখের ডাক পড়েছিল গুনগুন চরিত্রটির জন্য। যদিও সবাইকে টপকে ট্রফি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন ‘কলের বউ’,থুড়ি তৃণা। ওদিকে কৌশিকের চরিত্রের নাম সৌজন্য। রক্ষণশীল বাড়ির ছেলে সে। বোন রাতে পার্টি করতে যাবে একেবারেই পছন্দ নয় তাঁর। কৌশিক বলছিলেন, “আসলে সৌজন্য খুব বাড়িমনস্ক। ওই যে, বাড়িই তার খড়কুটো। তার বড় হয়ে ওঠাই এরকম।”
তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, “তথাকথিত হিরোসুলভ তো আমি নই। আমি চরিত্রাভিনেতা। কিন্তু লীনাদির উপর সেই ভরসাটা রয়েছে, যে সিন দেবেন সবটা ভেবেই।’’
একদিকে সুন্দরী নায়িকা, অন্যদিকে তাবড় সব অভিনেতা, কৌশিকের কাছে কতটা চ্যালেঞ্জিং? নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির প্রসঙ্গ টেনে আনলেন অভিনেতা। বললেন, “ওঁর একটা সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম। উনি বলেছিলেন,‘সলমন খান যদি সূচে সুতো পরানোর একটা দৃশ্যে অভিনয় করেন তা হলে মানুষ ওঁকে দেখবে, কিন্ত আমি করলে সূচে সুতো অতটাই বিশ্বাস নিয়ে পরাতে হবে যাতে সূচ-সুতোর পাশপাশি মানুষ আমাকেও দেখে।’ আমারও ফিলজফি এটাই।’’একটু থেমে আবার বলতে শুরু করলেন কৌশিক,“আমার যদি কোনও সিনে অভিনয় একটু খারাপও হয়, বাকি এমন সব অভিনেতা রয়েছেন— সোহিনীদি, চন্দনদা, ওঁরাই আমায় এমন ঠেলবেন যে আপসে ভাল অভিনয় চলে আসবে।”
বিনোদনের রেলগাড়ি চলমান থাকলেও করোনার ভয়কে অগ্রাহ্য করা যায় না। কৌশিক বললেন, “সত্যি কথা বলতে ভয় যে নেই তা নয় তবে নিজেকে কীরকম কোভিড যোদ্ধা মনে হচ্ছে। কেন মনে হচ্ছে জানি না, তবে মনে হচ্ছে।“ অন্য দিকে তৃণার খুব কাছের মানুষ, প্রেমিক, বন্ধু ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের নিখিল অর্থাৎ নীল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দিন কয়েক আগেই। ব্যস্ততার মাঝেই তাঁর নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন তিনি। চিন্তা মাখা গলায় বললেন, “আসলে ওঁর এমনিতেই খুব ঠাণ্ডার ধাত। চিন্তা হচ্ছে। কিন্তু ও খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে”। আর নিজের ব্যাপারে চিন্তা হচ্ছে না? তাঁর সাফ জবাব, “একটা কথা বুঝেছি, নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাটা বাড়াতে হবে। খাওয়া দাওয়া করতে হবে ভাল করে। বাকি মাস্ক, স্যানিটাইজার তো আছেই”।