দুগ্গার ভূমিকায় সম্পূর্ণা মণ্ডল
গল্পের কেন্দ্রে এক মন্দির। দুর্গেশ্বরী মন্দির। সেই মন্দিরেই বড় হয় দুগ্গা। ছোটবেলায় দুগ্গা হায়ায় মা-বাবাকে। দুর্গেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত দুগ্গার জেঠুমণি। তিনিই দুগ্গার মা-বাবা, অভিভাবক। দুগ্গা জানে দেবী দুর্গেশ্বরী তার মা। বিপদে পড়লে এই মাকেই সে স্মরণ করে। বিশ্বাস, তার এই মা-ই তাকে রক্ষা করবে বিপদ থেকে। দুগ্গা শান্ত, দয়ালু, নম্র। দুর্গেশ্বরী মন্দিরই দুগ্গার একমাত্র আশ্রয়।আর এই মন্দিরটাই কিনা দখল করতে চায় উজ্জ্বয়িনী!
হ্যাঁ, উজ্জ্বয়িনী-ই গল্পের খলনায়িকা। সে-ই গল্পের নায়ক ওঙ্কারের ছোট কাকিমা। সে-ই হাতের মুঠোয় রাখতে চায় নায়কের জীবন। সে-ই স্বল্প মাত্রার বিষ প্রয়োগ করতে করতে ওঙ্কারের প্রতিদিনের জীবন করে তোলে অস্বাভাবিক। কারণ নায়কের বিশেষ ক্ষমতাকে সে চায় কাজে লাগাতে। আর দুগ্গার সঙ্গে আশ্চর্য মিল ওঙ্কারের। সে-ও ছোটবেলায় হারিয়েছে বাবা-মাকে। এরকমই এক গল্প নিয়ে দর্শকের সামনে আসতে চলেছে নতুন ধারাবাহিক ‘দুর্গা দুর্গেশ্বরী’।
ধারাবাহিকের দুগ্গা সম্পূর্ণা মণ্ডল। ‘রাসমণি’-র জগদম্বা থেকে দুগ্গা। কেমন লাগছে তাঁর? ইতিবাচক তাঁর সুর, “দুটো চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। ভালই লাগছে। জগদম্বা এবং দুগ্গার মধ্যে যে চেঞ্জেস সেটাকে যেন ভালভাবে করতে পারি। জগদম্বার মতো দর্শক যেন দুগ্গাকেও পছন্দ করে, সেটাই চাইব। আর বড়দের আশীর্বাদ চাইব।”
সম্পূর্ণাও কি দুগ্গার মতো শান্ত, নম্র? মুচকি হাসলেন তিনি, “একটু সেরকম, আর একটু দুষ্টুও আছি।”
কীরকম দুষ্টু? তিনি ভাবলেন খানিক। বললেন, “দুষ্টু বলতে... এই একটু বিরক্ত করি লোককে। কেউ যদি আমার সঙ্গে কথা না বলে তো যতক্ষণ কথা না বলবে তাকে বিরক্ত করব। তারপর... বেশিকিছু দুষ্টু না... মানে শান্তই... দুটো মিক্স।”
করুণাময়ী রানি রাসমণির জগদম্বাকে মিস করছেন? সম্পূর্ণার অনুভূতি, “মিস তো করছিই। কারণ ওটা আমার একটা প্রিয় চরিত্র ছিল। কিন্তু এখন দুগ্গাকেই পছন্দ করছি। এটাই ভালভাবে করতে হবে। দুগ্গাকেও যেন দর্শক মনে রাখে।”
এমবিএ করেছেন ধারাবাহিকের নায়ক বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবাসে চাকরিও। কিন্তু সব ছেড়ে অবশেষে অভিনয়ে। এই ধারাবাহিকে আপনার চরিত্র ঠিক কী রকম? তিনি বললেন, “চরিত্রটা একটু অন্য রকম।মানে এখনকার যে আধুনিক চরিত্রগুলো হয় ঠিক সে ধরনের নয়।আমার চরিত্রটা ছোট থেকেই একটু সাবপ্রেসড। ছোটবেলায়মা-বাবা মারা গিয়েছে। তার মা খুব বড় জ্যোতিষী ছিল। তো তারও কিছু ইনবর্ন গুণ আছে যা মায়ের কাছ থেকে শেখা এবং তার নিজস্ব ইনটুইশনও আছে।অন্যদের থেকে একটু আলাদা থাকে। কিন্তু চোখের সামনে কিছু ভুল দেখলে বলেও দেয়। সেটা তার জীবনে সমস্যা তৈরি করে।”
আরও পড়ুন- বনি-ঋত্বিকার ‘লাভ স্টোরি’-তে মজেছে নেটিজেনরা
এখনওপর্যন্ত যে সব দৃশ্য শুট হয়েছে তাতে দুগ্গার সঙ্গে দেখা হয়েছে? বিশ্বরূপ, “না না। এখনও অবধি যা গল্প হয়েছে আমাদের দেখা হয়নি। মা দুর্গার উপর দু’জনেরই প্রচণ্ড বিশ্বাস। তো আমার মনে হয় সেই সূত্র ধরেই কিছু একটা হবে। দেখা যাক।”
নায়িকা সম্পূর্ণার সঙ্গে দেখা হল? বিশ্বরূপ, “হ্যাঁ হ্যাঁ... ওকে আগে থেকেই চিনি। একসঙ্গে কাজও করেছি ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’-তে। সম্পূর্ণার বয়স খুবই কম। কিন্তু খুব পরিণত অভিনেত্রী। আর শুটিংয়ের ফাঁকে যখনই দেখা হয় সারাক্ষণ ওকে জ্বালাই। এভাবেই চলছে।”
জ্বালান? বিশ্বরূপ, “হা হা হা হা... হো হো হো হো... ওই আরকি, বাচ্চা তো... বাচ্চাদের একটু বিরক্ত করাই যায়। ‘বাচ্চা’ লিখবেন না কিন্তু। খেপে যাবে। আমাদের খুব অল্পদিন শুট শুরু হয়েছে। কিন্তু ইউনিট সদস্যদের মধ্যে বেশ ভাল বন্ডিং তৈরি হয়ে গিয়েছে।”
নায়ক বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়
চরিত্রটার সঙ্গে কি আপনার ব্যক্তিজীবনের মিল আছে? বিশ্বরূপ: “মিল তো কিছুই নেই। সেজন্যই চরিত্রটা প্রচন্ড চ্যালেঞ্জিং। কারণ আমরা তো আমাদের পার্সোনাল জীবনে প্রচন্ড আধুনিক। আশপাশে কিছু একটা অন্যায় হলেই সেটা নিয়েসরব হয়ে উঠি। কিন্তু এই চরিত্রটা সেভাবে বড় হয়নি। সে অন্যের উপর অন্যায় হচ্ছে বা ছোটকাকিমা কাউকে ঠকাচ্ছে দেখলে হয়তো কিছু বলে ওঠে। কিন্তু নিজের উপর যখন অন্যায় হয় তখন সে কিছু বলতে পারে না। এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই চরিত্রটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে গিয়েছে। মানে আমি খুব বেশিদিন ইন্ডাস্ট্রিতে নেই। তার মধ্যেও যে ক’টা কাজ করেছি চেষ্টা করেছি ডিফারেন্ট ডিফারেন্ট ক্যারেক্টার করার।”
কী কী কাজ করেছেন? বিশ্বরূপ জানাচ্ছেন,‘‘শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু’-তে চৈতন্যদেবের রোল করতাম। এটা আমার প্রথম কাজ। তারপর‘কালার্স বাংলা’র ‘এ আমার গুরু দক্ষিণা’ সিরিয়ালের লিড কাস্ট ছিলাম।তার পরে আমি টানা সিরিয়ালের কাজ করছিলাম না। কারণ আমার অনেকগুলো ওয়েব আর মুভির কাজ ছিল।সেগুলো শেষ করে এই সিরিয়ালে।”
কী ফিল্ম করেছেন? বিশ্বরূপ: “মুভি বলতে ‘৬১ নং গড়পার লেন’ করেছিলাম। বাকি মুভিগুলোর শুট হয়ে গিয়েছে। হয়তো এবছর রিলিজ করবে।”
আরও পড়ুন- সলমন ভক্তদের জন্য খারাপ খবর, ইদে আসছে না ‘কিক ২’
উজ্জ্বয়িনীকে দর্শক কেন পছন্দ করবেন?এই চরিত্রে অঙ্কিতা মাঝি শেয়ার করলেন, “চরিত্রটা নেগেটিভ হলেও খুবই দৃঢ়। অভিনয়ের সুযোগ আছে। এটুকু বলতে পারি,‘লার্জার দ্যান লাইফ’ একটা চরিত্র। মানে অন্য রকমের একটা ডাইমেনশন রয়েছে। সেটার কারণেই হতে পারে যে মানুষ চরিত্রটাকে পছন্দ করবেন।সব মিলিয়ে কাজ করে খুব মজা পাচ্ছি।”
সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে প্রতিদিন ধারাবাহিকটি দেখা যাবে স্টার জলসায়।