নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী।
ডিভোর্সের নোটিস পাঠিয়েছিলেন আগেই, এ বার তিন মাস আগে দায়ের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে উত্তরপ্রদেশের বুদানা থানায় অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকির বিরুদ্ধে বয়ান রেকর্ড করলেন অভিনেতার স্ত্রী আলিয়া সিদ্দিকি। এফআইআর-এ আলিয়ার অভিযোগ, সিদ্দিকি পরিবারের এক মহিলার উপর দিনের পর দিন শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে নওয়াজের ভাই মিনহাজুদ্দিন সিদ্দিকি। আলিয়া আরও জানান, এই ঘটনা জানতে পেরে তিনি তৎক্ষণাৎ তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জানালে তাঁরা বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য আলিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, বয়ানে আলিয়া দিনের পর দিন শ্বশুরবাড়িতে হওয়া তাঁর উপর লাঞ্ছনা-অত্যাচারের অভিযোগও এনেছেন বলে বুদানা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত ২৭ জুন মুম্বইয়ের এক থানায় স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন আলিয়া। কিন্তু এফআইআর-এ অপরাধের জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল নওয়াজের দেশের বাড়ি যা উত্তরপ্রদেশের বুদানায় অবস্থিত। আর সে কারণেই মুম্বই পুলিশের থেকে ওই মামলা হস্তান্তরিত হয়ে যায় বুদানা পুলিশের কাছে। সেখানেই আজ বয়ান রেকর্ড করলেন আলিয়া।
এ বছরেরই মে মাসে ডিভোর্স চেয়ে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকিকে নোটিস পাঠিয়েছিলেন আলিয়া। আলিয়া জানিয়েছিলেন, বেশ কিছু বছর ধরেই তাদের বিবাহিত জীবন সুখের যাচ্ছিল না। অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। তিনি আরও জানান, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও নাকি আলিয়ার পাশে বিন্দুমাত্র ছিলেন না নওয়াজ। আলিয়ার কথায়, “একা একা গাড়ি ড্রাইভ করে চেক আপে যেতাম। আমার ডাক্তার বলতেন, আমি পাগল। ডাক্তার বলতেন, আমি নাকি একমাত্র মহিলা যে এই অবস্থাতেও একা একা চেক-আপে আসে।’’এখানেই থামেননি আলিয়া। তাঁর যেদিন প্রসব বেদনা উঠেছিল সে দিনও নাকি পাশে পাননি স্বামীকে, এমনটাই অভিযোগ আলিয়ার। উপরন্তু সেই সময়টা নাকি প্রেমিকাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে গিয়েছেন নওয়াজ, দাবি করেছিলেন তিনি। এমনকি তাঁর অবর্তমানে নাকি মহিলারা বাড়িতে এসে থাকতেন নওয়াজের সঙ্গে, সে অভিযোগও করেন আলিয়া।
এর কিছু দিন পর আলিয়া সংবাদমাধ্যমে আবারও জানান, নওয়াজ সন্তান পালনের খরচ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। টাকার অভাবে নাকি প্রচণ্ড অনটনের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে। প্রথমে চুপ থাকলেও এর কিছু দিন পর মুখ খোলেন নওয়াজ। আইনজীবী আদনান শেখ মারফত পাল্টা নোটিস পাঠান স্ত্রীকে। নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছিল, ১৫ দিনের মধ্যে ডিভোর্স দাবি করেছেন নওয়াজের বিচ্ছিন্না স্ত্রী। সেই অনুযায়ী তার পর থেকেই সন্তানদের যাবতীয় খরচ এবং খোরপোশ দিচ্ছেন অভিনেতা। আলিয়ার আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে। যে ভাবে প্রকাশ্যে মানহানি করা হচ্ছে, তাতে প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করতে পারেন নওয়াজ। যদিও নওয়াজের নোটিস চুপচাপ হজম করেননি স্ত্রী।
আরও পড়ুন- ‘আমি এখানে নিরাপদ নই’, রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়ে বিস্ফোরক কঙ্গনা
উল্টে তিনি বলেন, “যাক, অবশেষে মুখ খুললেন নওয়াজ। আমি খুব খুশি। ব্যাপারটা যেন একপেশে লাগছিল!” আলিয়া এ-ও বলেন, “রোজগারের মতো মানসিক অবস্থায় নেই আমি। ফলে, সন্তানদের নিয়ে প্রায় পথে বসার অবস্থা হয়েছে। নওয়াজ সন্তানদের ব্যয়ভার বহন করছেন এই কথা সম্পূর্ণ ভুল।”
আলিয়ার জন্মগত নাম অঞ্জনাকিশোর পান্ডে। নওয়াজকে বিয়ে করার জন্য তিনি ধর্ম পরিবর্তন করে আলিয়া হন। যদিও এই কাজিয়ায় আবারও আগের নামে ফিরে গিয়েছেন তিনি, অন্তত টুইটার বলছে এমনটাই। তাঁদের দশ বছরের দাম্পত্যজীবন, রয়েছে দুই সন্তান।