রেখা এমন একজন অভিনেত্রী যাঁর সম্পর্কে বলিউডে বহু বার বহু কথা রটেছে। রেখাকে এক সময় ‘ঘর ভাঙানি’ বলেও দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারণ রেখা নাকি বারবারই তাঁর সহ অভিনেতাদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তেন।
প্রেম নিয়ে রেখার জীবন বিতর্কে ভরপুর। রেখার সিঁদুর পরা নিয়েও নানা গুঞ্জন শোনা যায়। সে সব নিয়ে নির্বিকার রেখা আপন শর্তেই জীবন কাটিয়েছেন বরাবর।
রেখার বহুল বিতর্কিত প্রেমজীবনের একাংশে রয়েছে এমন একটি সম্পর্ক যা হয়তো অনেকেই জানেন না। অভিযোগ, অতীতের এক প্রথম সারির অভিনেত্রীর স্বামী এবং সন্তানের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন রেখা!
এতে ওই অভিনেত্রী এতটাই বিরক্ত হয়েছিলেন যে এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্যামেরার সামনেই রেখাকে ‘ডাইনি’ পর্যন্ত বলে বসেন। এ নিয়ে সে সময় ইন্ডাস্ট্রিতে খুব জলঘোলা হয়েছিল। রেখা কিন্তু এ ক্ষেত্রেও পুরোদস্তুর নির্বিকারই ছিলেন।
ওই অভিনেত্রী ছিলেন নার্গিস। তাঁর স্বামী সুনীল দত্তের সঙ্গে ‘প্রাণ যায় পর বচন না যায়’, ‘নাগিন’-এর মতো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন রেখা।
সুনীলের সঙ্গে কয়েকটি ছবিতে কাজ করার পরই রেখার নাম জড়াতে শুরু করে তাঁর সঙ্গে। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁদের দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। যা নার্গিসের কানেও পৌঁছয়।
রেখার বয়স তখন মাত্র ২২ বছর। নার্গিস সংবাদমাধ্যমের সামনেই রেখার প্রসঙ্গ টেনে অত্যন্ত অপমানজনক কথা বলেছিলেন। ‘রেখার মতো মেয়েরা খুব সহজ উপলব্ধ’, ‘রেখার মতো মেয়েদের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন’— এমন নানা মন্তব্য করেন তিনি।
এ নিয়ে রেখাকেও অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু রেখার মুখে কখনও কোনও কুমন্তব্য শোনা যায়নি।
এই ঘটনার কয়েক বছর পর আবার রেখার নাম জুড়ে যায় নার্গিস এবং সুনীল দত্তের ছেলে সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে।
১৯৮৪ সালে সঞ্জয়ের সঙ্গে ‘জমিন আসমান’ ছবিতে অভিনয় করেন রেখা। ছবির শ্যুটিংয়ের সময় থেকেই তাঁরা একে অপরের ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছিলেন।
ছবির মুক্তির পর পরই তাঁদের সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হতে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রিতে। বিষয়টি নার্গিস এবং সুনীলের একেবারেই পছন্দ ছিল না। সঞ্জয়কে নাকি তাঁরা অনেক বুঝিয়েও ছিলেন। কিন্তু সে সময় মা-বাবার কথায় নাকি পাত্তা দেননি সঞ্জয়।
এমনও গুঞ্জন তাঁরা নাকি পালিয়ে বিয়েও করেছিলেন। রেখার সিঁদুর পরা নিয়ে যে সমস্ত গুঞ্জন শোনা যায় তার মধ্যে অন্যতম হল, রেখা নাকি অমিতাভ বচ্চনের জন্য সিঁদুর পরেন। কিন্তু এক সময় সিঁদুরের নেপথ্যে সঞ্জয়ের নামও উঠে আসতে শুরু করেছিল।
তবে সঞ্জয়ের সঙ্গে নাম জড়ানোর পর তাঁর বাবা সুনীল ছেলের থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছিলেন রেখাকে। রেখার বাড়ি গিয়ে তিনি সঞ্জয়ের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে বলেছিলেন। তার পর অবশ্য সঞ্জয় এবং রেখা দু’জনেই সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজেদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছিলেন।
১৯৮৭ সালে রিচা শর্মাকে বিয়ে করেন সঞ্জয়। ১৯৯৬ সালে মস্তিষ্ক টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় রিচার। তার পর ১৯৯৮ সালে রিয়া পিল্লাইকে বিয়ে করেন তিনি। ১০ বছর পর তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে মান্যতাকে বিয়ে করেন সঞ্জয়। তাঁদের এক ছেলে, এক মেয়ে।
রেখা ১৯৯০ সালে দিল্লির ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালকে বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেন। তার পর থেকে একাই জীবন কাটাচ্ছেন রেখা।
সম্প্রতি সঞ্জয়ের স্টেজ ৩ ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। পাশে রয়েছেন স্ত্রী মান্যতা।