সুশান্ত ও অঙ্কিতার সঙ্গে সন্দীপ। —ফাইল চিত্র।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে মহারাষ্ট্র পুলিশের বিরুদ্ধে। শিবসেনা ঘনিষ্ঠদের আড়াল করার অভিযোগও উঠেছে। তা নিয়ে এ বার পাল্টা গর্জে উঠল মহারাষ্ট্র সরকার। গোটা ঘটনায় প্রয়াত অভিনেতার বন্ধু তথা চিত্রনির্মাতা সন্দীপ সিংহের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলল তারা।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’ ছবিতে টাকা ঢেলেছিলেন সন্দীপ। বিজেপির সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন বলিউডেরও একটা বড় অংশ। আবার সুশান্তকে মাদক সরবরাহেও তাঁর হাত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এই অবস্থায় বিজেপির সঙ্গে সন্দীপের যোগ সিবিআইয়ের খতিয়ে দেখা উচিত বলে দাবি করলেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জীবন নিয়ে ছবি করেছেন সন্দীপ সিংহ। বিজেপির সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক, তা খতিয়ে দেখুক সিবিআই। একই সঙ্গে বলিউডের মাদক যোগ নিয়েও তদন্ত হোক। এ ব্যাপারে অনেক অভিযোগ পেয়েছি আমরা। সিবিআইকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করব।’’
আরও পড়ুন: সবসময় ওকে বলতাম আমার একটা ছোট্ট সুশান্ত চাই: রিয়া
মহারাষ্ট্রের শিবসেনা ও এনসিপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার রয়েছে কংগ্রেসের। সন্দীপ সিংহের সঙ্গে বিজেপির সংযোগ আড়াল করতেই কি মুম্বই পুলিশের হাত থেকে তদন্ত সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এত চাপ আসছিল, প্রশ্ন তুলেছে জোটের তিন দলই। মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের মুখপাত্র সচিন সবন্ত বলেন, ‘‘এই ঘটনায় বিজেপি যোগ তো রয়েইছে। মাদক যোগ নিয়ে ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’র প্রযোজকের বিরুদ্ধে তদন্ত করুক সিবিআই। এটা অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। তার জন্যই কি সিবিআইকে আনার জন্য এত চাপ আসছিল? বলিউডে নামী প্রযোজকের তো অভাব নেই। তা সত্ত্বেও সন্দীপ সিংহের মতো এক জনকে মোদীর বায়োপিক তৈরি জন্য বেছে নেওয়া হল কেন?’’
বলিউড, মাদক এবং বিজেপির মধ্যে কী সংযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে মহারাষ্ট্র সরকারকে আর্জি জানিয়েছেন সচিন সবন্ত। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে বলিউডের দহরম মহরমের কথা কারও অজানা নয়। প্রভাবসালী কাউকে আড়াল করতেই কি সিবিআইকে আনতে এত তৎপরতা শুরু হয়েছিল? সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা।’’
তবে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর সঙ্গে দলের কোনও সংযোগ থাকার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন মহারাষ্ট্র বিজেপির মুখপাত্র কেশব উপাধ্যায়। যে সন্দীপ সিংহের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলছে শিবসেনা ও কংগ্রেস, বাল ঠাকরেকে নিয়ে ছবি তৈরি করা পুত্রবধূ স্মিতা ঠাকরের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পুলিশের গাড়িতে করে সিবিআইয়ের কাছে রিয়া
গত ১৪ জুন বান্দ্রায় যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সুশান্ত, সেখান থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই জানা যায়। কিন্তু সুশান্তকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করে অভিনেতার পরিবার। সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা সরিয়ে নেওয়া এবং তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সুশান্তের বাবা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি সেই মামলা সিবিআইয়ের হাতে ওঠে। তাতে রিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে মাদকের বিষয়টি সামনে এসেছে। তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)।