‘মৌচাক’-এর ‘মৌ বোদি’ হয়ে আসছেন মনামী ঘোষ।
‘হইচই’-এর নতুন ওয়েবসিরিজে মনামী ঘোষ। ‘মৌচাক’-এর ‘মৌ বোদি’ হয়ে আসছেন তিনি। ‘দুপুর ঠাকুরপো’-র ‘উমা বৌদি’ ও ‘ঝুমা বৌদি’-র পরে ফের নতুন বৌদি-গাথা নিয়ে হাজির হবে ‘হইচই’? প্রথম দু’টি পোস্টার প্রকাশ্যে আসতেই জোর চর্চা শুরু নেটমাধ্যমে। নতুন চরিত্র নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেত্রী মনামী ঘোষ।
প্রশ্ন: ‘ঝুমা বৌদি’ এবং ‘উমা বৌদি’-র থেকে কতটা আলাদা ‘মৌ বৌদি’?
মনামী: একেবারেই আলাদা। পোস্টারে লেখা দেখে বা উপর উপর হয়তো মনে হচ্ছে ‘দুপুর ঠাকুরপো’-র সঙ্গে মিল রয়েছে। কিন্তু তা একেবারেই নেই। ‘মৌ’-কে কিন্তু সবাই নাম ধরেই ডাকে। এখানে ‘বৌদি’ ডাকের তত মাহাত্ম্য নেই। সেটা ওয়েবসিরিজ না দেখলে বোঝা যাবে না। স্বাভাবিক ভাবে আমরা ‘বৌদি’ বললেই বুঝি, একটু ন্যাকা, একটু আদুরে। আমার চরিত্রে সেই আবেদন নেই। অনেক সোজাসাপ্টা, কাঠখোট্টা। গল্পে অন্য আমেজ রয়েছে।
প্রশ্ন: অনেকে বলছেন পোস্টারে যৌন আবেদনের কথা বলা হচ্ছে? এটা কি দর্শক টানার কৌশল?
মনামী: হতে পারে। ওই যে বললাম উপর উপর দেখে অনেক কিছু মনে হতে পারে। কিন্তু যাঁরা সিরিজটি বানাচ্ছেন, যাঁরা টাকা ঢালছেন, যাঁদের ওটিটি মঞ্চে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে, দর্শক টানার কৌশল তাঁরা স্থির করেন। তাঁদের যদি মনে হয়, যৌন আবেদনকে সামনে রেখে দর্শক টানবেন, তবে সেটাই ঠিক। আর সেটাই যদি হয়ে থাকে, তবে তাঁরা সফল। দু’টি পোস্টারেই যে পরিমাণ সাড়া পড়েছে, তা অকল্পনীয়।
প্রশ্ন: এই কৌশল নিয়ে আপনার ব্যক্তিগত মত কী?
মনামী: আমি কোনও রকম বিতর্কে যেতে রাজি নই। নির্মাতাদের যেটা ঠিক মনে হয়েছে, সেটাই করেছেন।
প্রশ্ন: ‘মৌ বোদি’-র চরিত্রে অভিনয় করে কেমন লাগল?
মনামী: অপূর্ব অভিজ্ঞতা। আমার অভিনয় জীবনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে একটা। এ রকম চরিত্রে দর্শক মনামী ঘোষকে আগে দেখেননি। লটারি, টাকাপয়সা, পাড়াপড়শির ভূমিকা— সব নিয়ে একদম নতুন গল্প।
প্রশ্ন: নেটমাধ্যমে অত্যন্ত সক্রিয় বলে কঙ্গনা রানাউতকে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়। আপনিও তো খুবই সক্রিয়, সমালোচনার ভয় হয়?
মনামী: কটাক্ষ, আক্রমণ করা হয় আমাকেও। গত বছর লকডাউনে একটা নাচের ভিডিয়ো দিয়েছিলাম। কত মানুষ ভালবেসেছিলেন সেটা। কিন্তু যাঁরা অশ্লীল কথা বলবেন বলে বসে থাকেন, তাঁরা বলেন। আমি পাত্তা দিই না। আমার মন ভাল থাকে সেজেগুজে ইনস্টাগ্রামে ছবি দিলে। আমার ভাল লাগে অনুরাগীদের সঙ্গে কথা বলে। আমি বেশি সক্রিয় বলে মানুষ কটাক্ষ করবে, এই ভেবে কোনও দিনও নেটমাধ্যমে নিষ্ক্রিয় হব না আমি।
অভিনেত্রী মনামী ঘোষ।
প্রশ্ন: নেটমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে কোভিড রোগীদের সাহায্য করা নিয়ে ভেবেছেন?
মনামী: হ্যাঁ মাথায় রেখেছি। যাঁরা নেটমাধ্যমের সাহায্যে মানুষের জন্য হাসপাতালে শয্যা ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করছেন, তাঁদের কুর্নিশ। আমিও কোনও দিন সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই করব।
অভিনেত্রী মনামী ঘোষ।
প্রশ্ন: হলিউড অভিনেত্রী কেট উইনস্লেটের বক্তব্য পোস্ট করছেন কয়েক জন টলি-তারকা। বলা হয়েছে, নেটমাধ্যমে বেশি অনুগামী থাকলে, ছবিতে সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে বেশি। আপনার কি তাই মত?
মনামী: অনু্গামীর সংখ্যা বেশি হলে ছবিতে সুযোগ পাওয়া যায়, এমন দৃষ্টান্ত আমার কাছে নেই। অন্তত আমি তো আর এ ভাবে কাজ পাইনি। অনেক বছর ধরেই অভিনয় জগতে রয়েছি আমি। তবে হ্যাঁ, অনুগামীর সংখ্যা বেশি বলে বেশ কিছু অন্য ধরনের প্রস্তাব আমার কাছে আসে। সেটা কী রকম? ডিজিটাল মাধ্যম যখন ব্যবসার অন্যতম মঞ্চ হয়ে উঠেছে, একাধিক বড় নামকরা সংস্থাগুলি নিজেদের প্রচারের জন্য আমার সাহায্য চায়। শুধু আমি না, একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রীর কাছে এমন প্রস্তাব যায়, যাঁদের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে অনুগামীর সংখ্যা বেশি। সেই ব্যবসায়ীদের পণ্যের প্রচারে আমি সাহায্য করি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই অনুগামীর সংখ্যা বেশি হলে ব্যবসায়ীরা তাঁর কাছেই যাবে। এর সঙ্গে অভিনয়ের কোনও সম্পর্ক আছে বলে আমি শুনিনি।