মিঠুনের একটা ছোট সিদ্ধান্তই পাল্টে দিয়েছিল গোবিন্দর জীবন। ডিস্কো ডান্সারের বদলে ক্রমে দর্শকদের পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছিলেন স্ট্রিট ডান্সার।
সালটা ১৯৮৬। মিঠুন চক্রবর্তী তখন ইন্ডাস্ট্রির সুপারহিট নায়ক। তাঁর এতটাই চাহিদা ছিল যে তাঁকে সিনেমায় নেওয়ার জন্য পরিচালকদের মধ্যেও চলত লড়াই।
মিঠুনের সামনে তখন ফিল্মের ছড়াছড়ি। কোনটা করবেন আর কোনটা ছাড়বেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়াই ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে কঠিন।
তেমনই একটা সময়ে তাঁর কাছে প্রযোজক পহেলাজ নিহালনি এক ফিল্মের প্রস্তাব নিয়ে আসেন।
এমন বড় প্রযোজককে সরাসরি না বলতে পারেননি মিঠুন। কিন্তু তিনি তখন এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে তাঁর পক্ষে ফিল্মটি করাও সম্ভব ছিল না।
তারিখের পর তারিখই দিয়ে যাচ্ছিলেন মিঠুন। বাধ্য হয়ে পহেলাজ এক দিন মিঠুনের সঙ্গে দেখা করেন। নিরুপায় মিঠুন সৌজন্য বজায় রেখে ফিল্ম নিয়ে কিছু শর্ত দিয়ে বসেন প্রযোজকের সামনে।
বিষয়টি এমন যে এই ফিল্মে মিঠুন ছাড়াও শত্রুঘ্ন সিনহা ছিলেন। ডবল হিরো ফিল্ম তিনি করতে চাইছিলেন না। তাই স্ক্রিপ্টে কিছু বদল আনার কথা জানান মিঠুন।
প্রযোজক বুঝে গিয়েছিলেন যে মিঠুন আসলে ফিল্মটি করতে চাইছেন না। এত দিন তাঁকে ঘোরানোর পর শেষে মিঠুনের এই মনোভাবে অসন্তুষ্ট হন তিনি।
মনে মনে স্থির করে ফেলেন মিঠুনকে টক্কর দেবেন এমন কাউকে এই ফিল্মে তিনি নেবেন। কিন্তু তেমন নায়ক কোথায় যিনি নাচ এবং অ্যাকশন দুটোই সমান ভাবে করবেন?
ইন্ডাস্ট্রিতে ডিস্কো ডান্সারকে টক্কর দেওয়ার মতো কাউকেই খুঁজে পাচ্ছিলেন না পহেলাজ। এমন সময়েই তাঁর পরিচয় হয় গোবিন্দর সঙ্গে।
গোবিন্দ নাচের সিডি নিয়ে পহেলাজের অফিসে গিয়েছিলেন। পহেলাজের কোনও ফিল্মে কোরিওগ্রাফার হতে চেয়েছিলেন তিনি।
গোবিন্দর নাচ দেখে বিস্মিত হয়ে যান পহেলাজ। মিঠুনকে টক্কর দেওয়ার জন্য নায়কও পেয়ে গেলেন তখনই।
১৯৮৬ সালে আসে গোবিন্দর ফিল্ম ‘ইলজাম’। সুপারহিট এই ফিল্মটিই মিঠুনের করার কথা ছিল।
এই ফিল্মের গান ‘স্ট্রিট ডান্সার’ও সুপারহিট হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে ‘তন বদন’ ফিল্মে ডেবিউ করেন গোবিন্দ। কিন্তু ‘ইলজাম’ ছিল তাঁর কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট।
কেরিয়ার শুরু করার আগে মিঠুনকে গুরু মানতেন গোবিন্দ। নিজে সে কথা অনেক বার স্বীকারও করেছেন। সেই গুরুকেই এ বার টক্কর দিতে শুরু করেছিলেন তিনি।
গোবিন্দকে দর্শকেরা এতটাই পছন্দ করতে শুরু করেন যে বিনোদনের জন্য ডিস্কো ডান্সার আর তাঁদের কাছে অবিকল্প রইলেন না।