(বাঁ দিক থেকে) পিয়া সেনগুপ্ত, অরূপ বিশ্বাস, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
এ এক অন্য শহর। এ যেন ভিন্ন টলিউড। এত দিন যা অন্দরে ছিল এ বার তা-ই প্রকাশ্যে। দক্ষিণী বিনোদন দুনিয়ার দেখানো পথ বাস্তবায়িত করতে বলিউডের পর টলিউড-ও উঠেপড়ে লেগেছে। যার জেরে গত আট দিন ধরে ‘উইমেন্স ফোরাম’ বা ‘নারী সুরক্ষা কমিটি’র কথা ভেবেছে বাংলা বিনোদন দুনিয়া। চার দিন ধরে চিঠির বয়ান তৈরির পর বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত সব স্তরের মহিলা খ্যাতনামীদের সই সম্বলিত চিঠি এখন প্রকাশ্যে। যেখানে টেলি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান অরূপ বিশ্বাস, ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস, ইমপার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত, আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি রঞ্জিত মল্লিকের কাছে কমিটি গড়ার পাশাপাশি কয়েক দফা দাবিও জানানো হয়েছে। বিষয়টিকে সমর্থন জানিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী, পাওলি দাম, প্রযোজক রানা সরকার, অভিনেতা টোটা রায়চৌধুরী।
যাঁদের উদ্দেশে এই চিঠি, তাঁরা কী বলছেন? তাঁরা কি বিনোদন দুনিয়ার নীচের মহল থেকে উপরতলার প্রত্যেক নারীর সম্মানরক্ষার বিষয়টি নিয়ে ভাববেন? তাঁরা স্বয়ং কিংবা প্রতিনিধিদের দিয়ে কমিটি গ়ড়তে সহযোগিতা করবেন? কখনও রক্ষকই ভক্ষক হয়ে ওঠেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে আইনি পথে ন্যায় মিলবে? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল টেলি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ইমপার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত, আর্টিস্ট ফোরামের সম্পাদক শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের কাছে।
এঁরা তিনজনেই জানিয়েছেন, এখনও এই মর্মে কোনও চিঠি তাঁদের কাছে বা সংশ্লিষ্ট দফতরে আসেনি। সেই জায়গা থেকে মন্ত্রী অরূপের বক্তব্য, “এখনও চিঠি পাইনি। ফলে, চিঠির বক্তব্য সম্বন্ধে কিছুই জানি না। তাই না জেনে এ বিষয়ে মত দেওয়া অসম্ভব।” পাশাপাশি এ-ও জানান, চিঠি পাওয়ার পর দফতরের বাকিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। তার পর বক্তব্য রাখবেন।
পিয়া কিন্তু টলিউডের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, “প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পাশাপাশি একজন মেয়ে হিসেবে চাইছি, অন্যায়ের প্রতিবাদ হোক। অপরাধী শাস্তি পাক। সেই জায়গা থেকে এই ধরনের কোনও কমিটি তৈরির প্রস্তাব যদি বাংলা বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত নারীদের তরফ থেকে আসে, অবশ্যই বাকি সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসব।” তাঁর মতে, কিছু ঘটনা তাঁর কানেও এসেছে। তবে সরাসরি তাঁকে কেউ অভিযোগ জানাননি। আর এই ধরনের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তিনি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তবে মন থেকে চাইছেন, শুধু বিনোদন দুনিয়া নয়, যে কোনও কর্মক্ষেত্র নারীর জন্য সুরক্ষিত হোক। এ-ও জানিয়েছেন, রক্ষক ভক্ষক হলে তাঁর বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চিঠি পাননি আর্টিস্ট ফোরামের সম্পাদকও। দাবিদাওয়া বা কমিটি গঠনের কথা তিনি আনন্দবাজার অনলাইনের থেকেই প্রথম জেনেছেন। সেই জায়গা থেকে তাঁরও প্রায় একই সুর। শান্তিলাল বলেছেন, “আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠিটি আমাদের হাতে বা দফতরে আসা দরকার। তা হলে কথা বলতে সুবিধে হয়। তবে এই মর্মে কোনও চিঠি এলে সকলের আগে আমরা বিষয়টি বিবেচনা করব।” হেমা কমিটির মতো এখানেও কমিটি গঠন হলে হয়তো অনেক রাঘব বোয়াল কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন। কমিটির সদস্যরা তখন পিছু হটবেন না তো? শান্তিলালের দাবি, তিনি একা এই বিষয়ে মত দিতে নারাজ।
কেবল মুখ খোলেননি ফেডারেশন সভাপতি স্বরপ। যিনি এর আগে একাধিক বার আনন্দবাজার অনলাইনকে তাঁর মতামত জানিয়েছেন। এই বিষয়ে আপাতত তিনি নীরব দ্রষ্টা।