নুসরত, মিমি, প্রিয়ঙ্কা। প্রত্যেকে একে অন্যের কাজ নিয়ে উচ্ছ্বসিত। নিজস্ব চিত্র।
মিমি-নুসরতের বন্ধুত্ব কেমন আছে?
মিমি: বন্ধু! আই হেট হার!
নুসরত: আমরা তো কো স্টার। আর এই ছবিতে ওর সঙ্গে আমার তো কোনও সিন নেই।
প্রিয়ঙ্কা: (প্রচণ্ড হাসি) এই সারাক্ষণ চলেছে সেটে, বুঝলেন। এই ঝগড়া, এই রাগ।আমায় জিজ্ঞেস করুন ওদের বন্ধুত্বের কথা!
মিমি: আসলে কী জানেন তো, আমরা মিডিয়ায় এই বন্ধুত্বের বেশি প্রচার চাই না। নজর লেগে যাবে।তবে আমরা আমাদের মতোই আছি। এমন তো বহুবার হয়েছে রাস্তায় ঝগড়া করেছি। একবার বিদেশে শুট করতে গিয়ে খুব ঝগড়া হল। আমি ওকে ‘ইমম্যাচিওর’বললাম, ও আমার দিকে তেড়ে এল। কথা বন্ধ হল। হলে কী হবে? ওখানে একটাই মেক আপ ভ্যান ছিল যেটা আমি আর নুসরত শেয়ার করতাম। আমি রেগে নুসরতের মেক আপ কিট সরিয়ে আমারগুলো রাখলাম। রাগ দেখালাম।
নুসরত: প্লিজ, এর পর আমি বলব। আমার ওপর রাগ দেখিয়ে মুখ ঢাকা দিয়ে শুয়ে পড়ল। তারপর ছবি তোলার শখ হল ম্যাডামের। যাকে বলছিল, সে একেবারেই ছবি তুলতে পারে না। অবশেষে বলে কি না আমার ছবি তুলে দিবি?
মিমি: তার আগে বলেছিলাম, আমায় আগে সরি বল!
(সকলের হাসি)
প্রিয়ঙ্কা: ওদের বন্ধুত্ব সত্যি চেরিস করার মতো!
মিমি: (নুসরতের দিকে তাকিয়ে) প্রিয়ঙ্কা কিন্তু দিন দিন হট হয়ে যাচ্ছে না! জানেন তো, আমি হলে গিয়ে ওর বাংলা ছবি প্রথম দেখি। ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’।ও আমার গার্ল ক্রাশ!তবে হ্যাটস্ অফ, ও যেভাবে লড়াই করে বেরিয়ে এসেছে।
নুসরত: এই ‘ক্রিসক্রস’-এর প্রমোশনে কিন্তু সব সত্যি কথা বেরোচ্ছে।দেখছেন!
‘ক্রিশক্রশ’ ছবিতে ইন্ডাস্ট্রির গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ নায়িকা। এত নায়িকার ভিড়ে হারিয়ে যেতে পারেন মনে হয়নি?
নুসরত: আপনার প্রশ্নের মধ্যেই উত্তর আছে। গুরুত্বপূর্ণ নায়িকাদের একসঙ্গে লোকে দেখতে চায়।এই ছবিতে দর্শক যা দেখতে চায়, তাই আছে।
ছবির একটি দৃশ্যে নুসরত
কী দেখতে চায় দর্শক?
নুসরত: দর্শক এখন নিজেদের রিলেট করতে চায়। এ ছবি নারীর অত্যাচার, শোষণ, এ ভাবে কিন্তু সাজানো নয়। কিন্তু মেয়েদের বাস্তবের লড়াইটা ধরা পড়েছে এই ছবিতে।
মিমি: অনসম্বল্ কাস্ট নিয়ে আমার কোনও কালেই মাথাব্যথা ছিল না। ভাল চরিত্র আমার কাছে বরাবর মর্যাদা পেয়েছে। ‘ক্রিশক্রস’-এর মতো এত ভাল একটা স্ক্রিপ্ট আমি খুব কম দেখেছি। দর্শক এই ছবিতে নিজেকে দেখতে পাবেন।
প্রিয়ঙ্কা: এই ছবিতে মিমি, নুসরত আছে। ওদের নিজস্ব দর্শক এই ছবি দেখতে যাবে। অন্যদিকে জয়ার এখানে এবং বাংলাদেশের দর্শক ছবি নিয়ে আগ্রহী। আর সোহিনীরও একটা পুল আছে।
মিমি: নিজেরটা বল। জানেন, ওর প্রচুর ফ্যান ফলোয়ার।
প্রিয়ঙ্কা: আচ্ছা! আচ্ছা! আমি বলতে চাইছি প্রচুর দর্শককে এই ছবি হলমুখী করবে। আর যে কোনও মেয়ে নিজেকে এই গল্পে খুঁজে পাবে। আমি নিশ্চিত।
মিমি: একী! আপনার ফোন পড়ে গিয়ে এই অবস্থা হয়েছে নাকি? ভুল করে কেউ ফেলে দিয়েছে আর আপনি বলতে পারেননি তো? জানেন, এই ছবিতে এরকম ঘটনা অনেক আছে। আমাদের সঙ্গে এমন অনেক কিছু হয় যা আমরা পরিস্থিতির চাপে মেনে নিই, কিছু বলতে পারি না। সেই সব দেখবেন এই ছবিতে।
নুসরত: এই ছবিতে ইরা, সুজি, মিস সেন, মেহের, রূপা— এরা সবাই নিজেদের চেনা জায়গা থেকে এমন এক পরিস্থিতিতে আসে যেখানে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। কী করবে তারা? কেরিয়ার না পরিবার? প্রেম না স্বপ্ন? এরকম নানা প্রশ্নের সামনে দাঁড়ায় তারা।
মিমি: জয়ার চরিত্রটা ভীষণ ভাল। ও কিন্তু আগে এরকম চরিত্র করেনি। এত স্মার্ট একটা চরিত্র! জয়া খুব সুইট। আমি মজা করে ওকে ‘চাকর’বলি। তো, শুটে ও ভাবে ডেকেছি, লোকে ভেবেছে, এই রে ঝগড়া শুরু হল নাকি?
আরও পড়ুন: সমাজের সেন্সরশিপ নিয়ে মতামত দিতে স্তনের ছবি শেয়ার করলেন স্বস্তিকা
আপনার সঙ্গে নুসরতের দৃশ্য আছে না?
প্রিয়ঙ্কা: আমার সঙ্গে নুসরতের দারুণ দৃশ্য আছে। আমি প্রথমে ভাবছিলাম ওর সঙ্গে কীভাবে কথা বলব? দেখলাম ও নিজেই এগিয়ে এল। সহজ করে নিল সব।
মিমি: আমরা সহজই থাকি। এই সোশ্যাল মিডিয়া, মিডিয়া, এরা ভাবে নায়িকা মানেই ঝগড়ুটে!
‘ক্রিশক্রশ’-এ ক্যামেরা হাতেই দেখা মিলবে মিমির।
কেন সোশ্যাল মিডিয়ায় কী হয়?
মিমি: কী হয় না? ধরুন,‘ক্রিশক্রশ’আসছে, এরকম একটা ক্যাপশন দিয়ে আমি, নুসরত আর আমার, প্রিয়ঙ্কা, সোহিনীর ছবি দিলাম। তাতেও লোকে কি গালাগাল দিচ্ছে! আর প্রত্যেককে আলাদা করে! আরে প্রবলেমটা কী? সাইকো, পারভার্ট লোকজনে চারিদিক ভরে গেছে। একজন মহিলা আছেন, যিনি রোজ রেগে রেগে লেখেন আমায়, মিমি ইংরেজিটা শিখে কথা বল! আরে, আমি ইংরেজি নিয়েই পড়াশোনা করেছি! দিনের শেষে মজাই লাগে!
নুসরত: এত কৈফিয়ৎ দিচ্ছিস কেন?এই ইন্টারভিউয়ের পরও বাজে কথা শুনতে হবে। ছাড়। এখন নেগেটিভ পাবলিসিটির যুগ। ভাল কমেন্ট তো প্রচুর হয়। তার মধ্যে কেউ খারাপ লিখলে তবে তো চোখে পড়বে!
প্রিয়ঙ্কা: আমার শুটের ছবির তলায় অজস্র কমেন্ট আসে, এক ছেলের মা হয়ে এই পোশাক পরেন, লজ্জা করে না!
মিমি: মিডিয়াও কম যায় না! ঘুরতে ফিরতে আমাকে পেলেই বলবে, আচ্ছা ওই দিন (পড়ুন রাজ-শুভশ্রীর বিয়ের দিন) আপনার কী মনে হচ্ছিল? আরে, আমি ওই দিনটাই ভুলে গেছি। তখন মনে হয় বলি, ডিপ্রেশনের ওষুধ খেয়ে মরতে বসেছিলাম। খুশিতো?আরে, আমার কি আর কোনও কাজ নেই! ঘুরে ফিরে সেই এক প্রশ্ন! তার ওপর কতগুলো ইউটিউব চ্যানেল হয়েছে যা খুশি বানিয়ে বলতে থাকে।
আরও পড়ুন: ''ছেলের মা হয়ে এ কী পোশাক?'' এমন কথাও শুনতে হয় নায়িকাকে
কিন্তু একটা কথাও ঠিক। নায়িকারা বিয়ে নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে লুকোচুরি খেলে।
মিমি: দেখুন,কোনও লুকোচুরি নেই। আমি বলে দিচ্ছি আমার জ্যোতিষী বলে দিয়েছে এ বছরের মধ্যে যদি আমার বিয়ে না হয়, আর নাকি হবে না। আর এ বছরের মধ্যে আমার বিয়ে হচ্ছে না! ক্লিয়ার? শুনুন না...আপনাদের সাইটে একটা বিজ্ঞাপন দিন না, সুন্দর করে।
নুসরত: ভাবুন সুন্দরী নায়িকার বিয়ের বিজ্ঞাপন। লোকে বলবে, ওই ‘লাইন’টা খারাপ! সিনেমার নায়িকা ঘরের বউ হয় কখনও!
নুসরত, আপনি তো শুনেছি লুকিয়ে বিয়ে করেছেন!
নুসরত: পয়সা দিয়ে কোনওস্বার্থে খবর করা হয়েছিল। আমি তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম। তারা যথারীতি দিতে পারেনি। তবে আমি বিয়ে করব।সবাইকে জানাবো। আমার অনেক প্ল্যান!