ছকভাঙা: আগাম রবীন্দ্রজয়ন্তীতে র্যাম্প শো। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
মিউজিক সিস্টেমে বাজছে, ‘তোমার খোলা হাওয়া...।’ চারপাশে আলোর ঝলক। র্যাম্পে হাঁটছেন মডেলরা। পরনের পোশাকে ঠাকুরবাড়ির এ কাল-সে কাল।
পঁচিশে বৈশাখের দু’দিন আগেই অন্য ঢঙে কবিপ্রণামের আয়োজন করা হয়েছিল শহর মেদিনীপুরে। রবিবারের সেই সান্ধ্য উপস্থাপনা বুঝিয়ে দিল, খোলস ছেড়ে এগোচ্ছে মফস্সল। রবীন্দ্রজয়ন্তীর আয়োজনেও জোর গলায় বলছে— ‘লেটস্ র্যাম্প’।
এ দিন সন্ধ্যায় প্রদ্যোত স্মৃতি সদনে এই ‘কবিস্তুতি’র আয়োজন করেছিল ‘রিয়াজ’, ‘নটরাজ ডান্স অ্যাকাডেমি’ এবং ‘পশ্চিম মেদিনীপুর ফটোগ্রাফি ক্লাব’। ‘নটরাজ ডান্স অ্যাকাডেমি’র কর্ণধার ঈশিতা চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, “কবিপক্ষের আগেই এই অনুষ্ঠান। তাই নাম রেখেছি কবিস্তুতি। অন্য রকম এই উপস্থাপনা দর্শকদের ভাল লেগেছে, এটাই প্রাপ্তি।”
ঠাকুরবাড়ির এ কাল-সে কালের পোশাকগুলোর ডিজাইন করেছেন ‘রিয়াজ’-এর কর্ণধার ফ্যাশন ডিজাইনার দেবযানী ঘোষ। রকমারি শাড়ির মধ্যে নজর কেড়েছে মসলিন, আর ছিল সেমিজ। দেবযানী বলছিলেন, “এক সময়ে তো ঘোমটা ছাড়া শাড়িই পরা হত না। ঠাকুরবাড়ি সেই আগলটা ভাঙে। রবীন্দ্রনাথের মেজদি স্বর্ণকুমারীদেবী ছিলেন এ ক্ষেত্রে অগ্রণী। এ দিনের উপস্থাপনায় সেই দিকটিও তুলে ধরা হয়েছে।”
এ দিনের অনুষ্ঠানের গোটাটাই ছিল রবিময়। র্যাম্পের সঙ্গে ছিল রবীন্দ্রগানও। কখনও বেজেছে ‘ভালবেসে সখী’, কখনও ‘কতবার ভেবেছিনু’। ‘পশ্চিম মেদিনীপুর ফটোগ্রাফি ক্লাব’- এর অন্যতম কর্তা কৃষ্ণা ভিলানি মনে করালেন, “শহর মেদিনীপুরে এমন কবিপ্রণাম এই প্রথম।” অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা শতাব্দী গোস্বামী বলছিলেন, “এই শো-এর স্বাদটাই অন্য রকম। সকলে মিলে সার্থক ভাবে সেটা করতে পেরেছি, এটাই বড় ব্যাপার।”
অনুষ্ঠানে আসা লোকজনও প্রশংসা করছিলেন এমন অভিনব আয়োজনের। এক দর্শক বলছিলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথই তো সেই খোলা হাওয়ার স্বাদ দিয়েছেন। তাই সীমার মাঝেও তিনি অসীম। তাঁকে স্মরণ করতে এমন নতুন ভাবনাই তো চাই।’’