মাধবন। বলিউডে অবশ্য তিনি বেশি পরিচিত ম্যাডি হিসাবে। ১৪ বছরের ছেলের গর্বিত বাবা তিনি। স্টার কিড বললে সবাই ধরেই নেন, ভবিষ্যতের বলিউড তারকা। কিন্তু ব্যতিক্রম এই স্টার কিড। শুধু মাধবনকেই নয়, সারা দেশকেও গর্বিত করে তুলেছে এই স্টার কিড। কী ভাবে জানেন?
১৯৭০ সালে জামশেদপুরে এক তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে মাধবনের জন্ম। মাধবনের বাবা রঙ্গনাথন শেষাদ্রি টাটা স্টিলের ম্যানেজমেন্ট এগজিকিউটিভ অফিসার ছিলেন। মা সরোজা ছিলেন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ম্যানেজার।
ছোট থেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার তীব্র ইচ্ছা ছিল মাধবনের। কিন্তু বাবা-মা চেয়েছিলেন ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে পড়াশোনা করবেন ছেলে।
বাবা-মার ইচ্ছা অনুযায়ী তাই ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে পড়াশোনা করেন। মহারাষ্ট্রের কোলাপুরের একটি কলেজ থেকে স্নাতক হন তিনি। কলেজে পড়াকালীন ২২ বছর বয়সে এনসিসি-তে যোগ দেন।
প্রশিক্ষণের জন্য সাতজনের একটি এনসিসি দলকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে মাধবনও ছিলেন। এই সুযোগটা একেবারেই হাতছাড়া করেননি মাধবন। ব্রিটিশ সেনা, রয়্যাল নেভি, রয়্যাল এয়ার ফোর্স-এ প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
কিন্তু কাট অফ-এর চেয়ে তাঁর বয়স ৬ মাস বেশি হওয়ায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা তাঁর পূরণ হয়নি। দেশে ফিরে এরপর মুম্বইয়ের কিষেণচাঁদ চেলারাম কলেজ থেকে পাবলিক স্পিকিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন।
এই সময় তিনি পাবলিক স্পিকিংয়ে ইন্ডিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ বিজেতা হন। ১৯৯২ সালে তাঁকে ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে জাপানের টোকিয়োয় ইয়ং বিজনেসম্যান কনফারেন্সে পাঠানো হয়েছিল।
মহারাষ্ট্রে থাকাকালীন তাঁর একটি পাবলিক স্পিকিং ক্লাসে যোগ দিতে আসেন সরিতা বিরজে। এই ক্লাসেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় মাধবনের। বছর কয়েক পরে বিয়ে করেন তাঁরা।
ক্লাস থেকে ফিরে তিনি নিজের পোর্টফোলিয়ো বানিয়ে মডেলিং এজেন্সিতে জমা দেন। ১৯৯৬ সাল থেকে বিজ্ঞাপনে সুযোগ পেতে থাকেন। তাঁর চকোলেট বয় ইমেজ দর্শকরা বেশ পছন্দ করেন। পরিচালক মণি রত্নম তাঁকে ১৯৯৯ সালে একটি তামিল ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন।
ক্রমে দক্ষিণী ছবির সুপারস্টার হয়ে ওঠেন মাধবন। ১৯৯৯ সালে সরিতা বিরজেকে বিয়ে করেন। তখনও মাধবন মেনস্ট্রিম ফিল্মে প্রবেশ করেননি। তবে টুকিটাকি ফিল্ম, বিজ্ঞাপন করছিলেন।
২০০৫ সালে তাঁদের একমাত্র সন্তান বেদান্তের জন্ম হয়। আর মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বাবা-মাকে গর্বিত করে তুলেছে তাঁদের সন্তান বেদান্ত।
সম্প্রতি এশিয়ান এজ গ্রুপ চ্যাম্পিয়নশিপের জুনিয়র ইন্টারন্যাশনাল সুইম মিট-এ ফ্রিস্টাইল রিলে-তে রুপো জিতেছে সে। বাবা-মার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে দেশকেও গর্বিত করে তুলেছে।
এই প্রতিযোগিতায় তাইল্যান্ড সোনার পদক পেয়েছে এবং জাপান ব্রোঞ্জ জিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
গত বছর বেদান্ত তাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সুইমিং মিট-এ ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে ব্রোঞ্জ জিতেছিল। ছেলের রুপোর মেডেল পরা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে মাধবন।
বলিউড নয়, ভবিষ্যতে সাঁতারে দেশকে আরও পদক এনে দেওয়াই লক্ষ্য বলে জানিয়েছে বেদান্ত।