সুস্মিতা সেন, লারা দত্ত অথবা ঐশ্বর্য রাই বচ্চন, বুদ্ধি আর সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন সম্মানজনক ‘মিস ইন্ডিয়ার’ খেতাব। কিন্তু এঁদেরও আগে এই সম্মানের খেতাব মাথায় উঠেছিল এক কলকাতাবাসীর। নাম এস্টার ভিক্টোরিয়া অ্যাব্রাহাম। পোশাকি নাম প্রমীলা।
১৯৪৭-এ তিনিই প্রথম, যিনি এই খেতাবটি জেতেন। ভারতের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী এবং প্রখ্যাত রাজনৈতিক মোরারজি দেশাইয়ের থেকে এই খেতাব গ্রহণ করেছিলেন প্রমীলা।
জন্ম হয়েছিল কলকাতার এক বাগদাদি ইহুদি পরিবারে। কিন্তু রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম নেওয়ায় নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ ছিল না তাঁর। ইচ্ছা ছিল প্রচুর। মাত্র ১৭ বছরেই বাড়ি ছাড়েন তিনি।
পাড়ি দেন মুম্বই। সেখানে পারস্যের একটি ভ্রাম্যমান থিয়েটার দলের সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁর কাজ ছিল প্রোজেক্টর পরিবর্তনের মাঝে ১৫ মিনিটের নাচের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দর্শকের মনোরঞ্জন করা।
শুধুমাত্র এই কাজ করার জন্যই যে তাঁর জন্ম হয়নি তা ওই ছোট বয়সেই উপলব্ধি করেছিলেন প্রমীলা। শুরু করেন বড় পর্দায় অভিনয়। স্টান্ট অভিনেতা হিসেবেও তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেন। ‘ উলটি গঙ্গা’, ‘জঙ্গল কিং’ প্রমুখ ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
শুধু কি তাই ? সিনেমা জগতে তিনিই প্রথম মহিলা প্রযোজক। প্রযোজনা করেছেন প্রায় ১৬ টিরও বেশি সিনেমা। তাঁর প্রযোজনা সংস্থার নাম ছিল ‘সিল্ভার প্রোডাকশন’।
জানলে আরও আশ্চর্য হতে হয় যে, ৩১ বছর বয়সে তিনি যখন এই খেতাব জেতেন তখন তিনি গর্ভবতী। এ প্রসঙ্গে পরে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আগেকার দিনে এই সমস্ত প্রতিযোগিতাগুলিতে মূলত প্রতিযোগীদের মুখের সৌন্দর্যের নিরিখে নম্বর দেওয়া হত তাই এ ক্ষেত্রে তাঁর কোনও অসুবিধা হয়নি।
কুড়ি বছর পর ১৯৬৭ তে তাঁর মেয়ে নাকি জাহানও ‘মিস ইন্ডিয়ার’ মুকুট মাথায় পরেন। এখনও পর্যন্ত কোনও মা –মেয়ে দুজনেই এই খেতাবের অধিকারী হননি।
তাঁর ছোট ছেলে হায়দার আলিও লেখক। বিখ্যাত সিনেমা ‘ যোধা আকবর’-এর চিত্রনাট্য তাঁরই লেখা।
প্রমিলার অভিনীত শেষ ছবি ২০০৬-এ মুক্তিপ্রাপ্ত অমল পালেকর পরিচালিত ‘থাং’ । ২০০৬-এর ১৯ অগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই ভারতসুন্দরী।