(বাঁ দিকে) শ্রীদেবী, ম্যাথু পেরি (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
অসময়ের বৃষ্টিতেও পাশে থাকবেন একে অপরের। এমনই অঙ্গীকার করেছিলেন ছয় বন্ধু। সেই ছয় বন্ধুর মধ্যে এক জন এখন অতীত। গত রবিবার মিলেছে সেই দুঃসংবাদে। জীবনাবসান হয়েছে ‘ফ্রেন্ডস’ খ্যাত চ্যান্ডলার তথা জনপ্রিয় আমেরিকান অভিনেতা ও কৌতুকশিল্পী ম্যাথু পেরির। শনিবার বাড়ির স্নানঘর থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেতার নিথর দেহ। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে জীবনাবসান জনপ্রিয় তারকার। লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে স্নানঘরের বাথটাবে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। ম্যাথুকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টায় সফল হননি চিকিৎসকেরা। তার পরেই ঘোষণা করা হয় তাঁর মৃত্যুর খবর। ম্যাথুর এই অকালমৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করতে বেগ পেতে হয়েছে ম্যাথুর অনুরাগীদের। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে থেমে যাবে তাঁর হাসি? ভাবতে পারেননি তাঁর অনুরাগীরা। বছর পাঁচেক আগে প্রায় একই রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিল বিনোদন জগৎ। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ করে মৃত্যু হয় শ্রীদেবীর। স্রেফ বলিউডে নয়, অন্যান্য ভাষার ছবিতেও চুটিয়ে কাজ করেছিলেন শ্রীদেবী। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় তারকার তকমাও অর্জন করেছিলেন তিনি। কাকতালীয় ভাবে, ৫৪ বছর বয়সেই মৃত্যু হয় তাঁরও। কোন যোগসূত্রে বাঁধা শ্রীদেবী ও ম্যাথুর অকালপ্রয়াণ?
ম্যাথুর মৃত্যুর পর প্রাথমিক ভাবে পুলিশের তরফে জানানো হয়, জাকুজ়ির জলে ডুবে মারা গিয়েছেন ‘ফ্রেন্ডস’ খ্যাত অভিনেতা। দীর্ঘ দিন মদ ও ব্যথার ওষুধে আসক্ত থাকলেও গত বছর খানেক ধরে সব রকম নেশার থেকে দূরে ছিলেন ম্যাথু। মৃত্যুর সময় তাঁরর বাড়িতে কোনও নিষিদ্ধ মাদক পাওয়া যায়নি। তবে মিলেছিল বেশ কিছু অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ট্যাবলেট। তা হলে ঠিক কী ভাবে মৃত্যু হল অভিনেতার? ম্যাথুর দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যদিও স্পষ্ট ভাবে কোনও কিছু বলা না হলেও তাঁর মৃত্যুর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকত্ব ধরা পড়েনি এখনও। যদিও টক্সিকোলজির রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কোনও কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
অন্য দিকে, ২০১৮ সালে দুবাইয়ের এক বিলাসবহুল হোটেলে বাথ টাবের জলে ডুবে মারা যান শ্রীদেবী। তাঁর মৃত্যু ঘিরেও প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ ও কৌতূহল তৈরি হলেও পরে তদন্তকারীদের তরফে জানানো হয়, স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে তাঁর। স্বামী বনি কপূরের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে হঠাৎ করে কী ভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শ্রীদেবী, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই। এমনকি, স্ত্রীর মৃত্যুর পরে একটানা জেরার মুখেও প়়ড়েছিলেন বনি। লাই ডিটেক্টর টেস্টেরও সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে।
মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে মদে আসক্ত ছিলেন ম্যাথু। শুধু মদ নয়, নেশা করার জন্য ব্যথার ওষুধও ব্যবহার করতেন তিনি। এক সময় দিনে ৫৫টি ব্যথার ওষুধও খেয়েছেন। অন্তত ১৫ বার রিহ্যাবে গিয়েছেন, ৬০০০ অ্যালকোহলিক অ্যানোনিমাসের মিটিংয়েও থেকেছেন ম্যাথু। তা সত্ত্বেও গুরুতর অসুস্থতার সম্মুখীন না হওয়া পর্যন্ত নেশার গ্রাস থেকে নিজেকে বার করতে পারেননি ‘ফ্রেন্ডস’ তারকা। অন্য দিকে, মদ খাওয়ার অভ্যাস ছিল শ্রীদেবীরও। তবে তাঁর মৃত্যুর পরে ময়নাতদন্তে ধরা পড়েনি কোনও অস্বাভাবিকত্ব? তবে কি নেহাত দুর্ঘটনাই অকালে কেড়ে নিল দুই প্রতিভাবান শিল্পীর প্রাণ? না কি নেপথ্যে রয়েছে মানসিক অসুস্থতার প্রভাব? প্রিয় দুই তারকার অকালমৃত্যুতে উত্তর খুঁজছেন অনুরাগীরা।