Matthew Perry

১৪ বছর বয়স থেকে মদের আসক্তি ‘চ্যান্ডলার’-এর, দিনে ৫৫টি ব্যথার ওষুধ খেতেন এক সময়!

রবিবার মিলেছে দুঃসংবাদ। ৫৪ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন ‘ফ্রেন্ডস’ খ্যাত তারকা ম্যাথু পেরি। নব্বইয়ের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় আমেরিকান সিটকম ‘ফ্রেন্ডস’-এর অন্যতম প্রধান চরিত্র ছিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

লস অ্যাঞ্জেলেস শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৫২
Share:

ম্যাথু পেরি। ছবি: সংগৃহীত।

রবিবার শুরু হয়েছে অপ্রত্যাশিত এক দুঃসংবাদে। জীবনাবসান হয়েছে আমেরিকান অভিনেতা ও কৌতুকশিল্পী ম্যাথু পেরির। শনিবার বাড়ির স্নানঘর থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেতার নিথর দেহ। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে জীবনাবসান জনপ্রিয় তারকার। লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে স্নানঘরের বাথটাবে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। ম্যাথুকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টায় সফল হননি চিকিৎসকেরা। এক ‘মির‌্যাকেল’-এর আশায় বুক বেঁধেছিলেন তারকার অনুরাগীরা। বছর পাঁচেক আগেই তো সব আশা প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন তিনি!

Advertisement

‘ফ্রেন্ডস রিইউনিয়ন’-এ সিরিজ়ের কলাকুশলীরা। ছবি: সংগৃহীত।

নব্বইয়ের দশকে জনপ্রিয় আমেরিকান টেলিভিশন শো ‘ফ্রেন্ডস’-এর প্রধান ছয় চরিত্রের অন্যতম ছিল চ্যান্ডলার বিং। চ্যান্ডলারের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের নজরে এসেছিলেন ম্যাথু। নিজের অভিনয়ে কৌতুকের সঙ্গে সংবেদনশীলতার এক অদ্ভুত সেতুবন্ধন করেছিলেন তিনি। সবেচেয়ে ভরসাযোগ্য বন্ধু বললে মুহূর্তের মধ্যে মনে পড়ত চ্যান্ডলারের নামই। তবে পর্দায় কৌতুক চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মনোরঞ্জন করলেও ক্যামেরার নেপথ্যে প্রতিনিয়ত লড়াই করে গিয়েছেন ম্যাথু। ১৯৯৪ সালে ‘ফ্রেন্ডস’ শুরু হওয়ার বছর তিনেক পরে ১৯৯৭ সালে এক দুর্ঘটনায় আহত হন ম্যাথু। সেই সময় তাঁকে ব্যথার ওষুধ হিসাবে ভাইকোডিন দিয়েছিলেন চিকিৎসক। সেই থেকে শুরু ম্যাথুর ভাইকোডিন আসক্তি। এক সময় দিনে ৫৫টি ভাইকোডিন ট্যাবলেটও খেয়েছেন তিনি। মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে মদে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন ম্যাথু। সেই আসক্তির সঙ্গে আজীবন যুঝেছেন তিনি। প্রায় ছ’হাজার অ্যালকোহলিক অ্যানোনিমাস মিটিংয়ে গিয়েছেন। ৩০ বছর ধরে থেরাপিতে গিয়েছেন। এমনকি, অন্তন ১৫ বার রিহ্যাবেও গিয়েছেন ম্যাথু। মদ ও ব্যথার ওষুধে আসক্তি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় প্যানক্রিয়াটাইটিসে ভুগেছেন তিনি। সেই সময় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে চিকিৎসা চলাকালীন প্রায় ১০ কেজি ওজন কমে গিয়েছিল তাঁর। যা ধরা পড়েছিল ম্যাথুর চেহারাতেও। ‘ফ্রেন্ডস’-এর ষষ্ঠ সিজ়নে যে ম্যাথুকে দেখেছিলেন দর্শক, সপ্তম সিজ়নে তাঁর চেহারা দেখেই বোঝা গিয়েছিল শরীর একেবারে ভেঙে গিয়েছে অভিনেতার।

তবে জীবনের এই ওঠাপড়ার মাঝেও তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর বন্ধুরা। ‘ফ্রেন্ডস’-এর জেনিফার অ্যানিস্টন, কোর্টনি কক্স, ম্যাট লেব্লঙ্কের মতো তারকারা সব সময় পাশে থেকেছেন ম্যাথুর। তবে সবচেয়ে শক্ত করে ম্যাথুর হাত ধরে ছিলেন জেনিফার। ‘ফ্রেন্ডস’-এর শুটিং চলাকালীন জেনিফারকে মনে ধরেছিল ম্যাথুর। তা যে একেবারেই জানতেন না জেনিফার, তা নয়। তবে তাঁদের বন্ধুত্বে কখনও ছেদ পড়েনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কমপক্ষে ১৪ বার অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল ম্যাথুকে। ২০১৮ সালে এক অস্ত্রোপচারের পর কোমায় চলে গিয়েছিলেন ম্যাথু। ক্ষণেকের জন্য থেমে গিয়েছিল তাঁর হৃদ্‌স্পন্দন। তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা নেমে গিয়েছিল দুই শতাংশের নীচে। তার পরেও লড়াই থামাননি ম্যাথু। ফিরে এসেছিলেন সেই লড়াই জয় করেও। তার বছর পাঁচেক পরে ‘দ্বিতীয় জীবন’-এ ছেদ পড়ল ম্যাথুর। বন্ধুদের একা করে চলে গেল সবার প্রিয় চ্যান্ডলার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement