প্রতীকী ছবি
এত দিন যা ঘটেনি, বৃহস্পতিবার বিকেলে চলচ্চিত্র উৎসবে তা-ই ঘটল। বিকেল ৩টেয় নন্দন ২-এ চিনের পরিচালক জিয়া জাং কে-র নতুন ছবি ‘সুইমিং আউট টিল দ্য সি টার্নস ব্লু’ দেখতে গিয়ে অনেকেই ফিরে আসতে বাধ্য হলেন। কারণ, হলের দরজা বন্ধ। এক তরুণ পুলিশকে কাতর অনুনয় করলেন, ‘‘দাদা, দরজাটা খুলতে বলুন। আমরা না হয় মাটিতে বসে ছবি দেখব।’’ উত্তরে সেই পুলিশকর্মী করজোড়ে বললেন, ‘‘দাদা, এ বার কোভিড পরিস্থিতিতে মাটিতে বসার ব্যবস্থা নেই।’’ অবস্থা বুঝে ভিড়ও নম্র ভাবে সরে গেল। শোনা গেল, দুপুর ৩টের ছবির জন্য অনেকে দুপুর ২টো থেকে হলের ভিতরে বসে আছেন।
ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এমন ঘটনা নতুন নয়। গদারের ছবি নন্দনের সিঁড়িতে বসে দেখতে হয়। ভিড়ের দাপটে অরসন ওয়েলসের ‘সিটিজেন কেন’ এক বার অনেকে শিশির মঞ্চের মেঝেতে বসে দেখেছেন। কিন্তু কোন ছবি কোন হলে দেওয়া উচিত, তা নিয়ে ২৬ বছরেও উৎসব কর্তৃপক্ষের হেলদোল থাকবে না?
এ বার অনেক ছবিরই দু’টি করে শো ছিল। কিন্তু জিয়া জাং-এর এই ছবির মাত্র একটিই শো। তা-ও আবার ৭৯ আসনের নন্দন-২ প্রেক্ষাগৃহে। এ বছর চিনের একমাত্র এন্ট্রি, এবং সেটিও ভেনিসে একদা সেরা ছবির জন্য স্বর্ণসিংহে সম্মানিত পরিচালকের। তাঁর ছবি কেন আরও বেশি আসনের নন্দন, রবীন্দ্র সদন বা শিশির মঞ্চে দেওয়া হল না, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আসলে উদ্বোধনের দিন মুখ্যমন্ত্রী যা-ই বলুন না কেন, অতিমারি পরিস্থিতিতে কোনও হলেই ১০০ শতাংশ দর্শক নেই। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন কেউ ভাঙেননি, প্রতি হলেই অন্তত অর্ধেক চেয়ার দড়ি দিয়ে বেঁধে ‘ব্লকড’ লেখা। দর্শকও এ দিন সংযমের পরিচয় দিয়ে হলে ঢুকতে না পেরে চেঁচামেচি করেননি, নীরবে সরে গিয়েছেন।
অতিমারিতে এ রকমই ঘটে থাকে!