একের পর এক আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। ক্রমশ একের পর এক সুস্থও হয়ে উঠছেন টলিউড তারকারা।
করোনা প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের থেকে এ বারের পর্যায়ে যেন তুলনায় কম দাপট দেখিয়েছে। মূলতঃ, সর্দি, হালকা জ্বর, গলা ব্যথা মূল উপসর্গ। অনেকের তার সঙ্গে কাশি এবং মাথা-সহ সারা শরীরেও ব্যথা।
আবার অনেকেই উপসর্গহীন। তারকারা কিন্তু কোভিড পজিটিভ হয়েও মনের দিক থেকে ইতিবাচক ছিলেন। ফলে, চিকিৎসাশাস্ত্রের নয়া বিধান মেনে সাত দিন নিভৃতবাসে কাটিয়ে সুস্থ তাঁরা। তালিকায় রয়েছেন দেব অধিকারী, পার্নো মিত্র, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, শতরূপা সান্যাল, চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তী প্রমুখ। ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন রাজ চক্রবর্তী, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, কবি শ্রীজাত, শ্রীলেখা মিত্র, রুদ্রনীল ঘোষ, ঋদ্ধি সেন, বনি সেনগুপ্ত, কৌশানি মুখোপাধ্যায়, পিয়া সেনগুপ্ত, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। নতুন আক্রান্তের তালিকায় রাজা চন্দ, ইমন চক্রবর্তী।
মাত্র চার দিনের মাথাতেই করোনা নেগেটিভ দেব অধিকারী! সাংসদ-তারকা রবিবার রাতে টুইট করে জানিয়েছেন, তিনি আবার পরীক্ষা করিয়েছিলেন। এ বার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। পাশাপাশি এও লিখেছেন, ‘এক সপ্তাহ না হওয়া পর্যন্ত নিভৃতবাসেই থাকব। সবার ভালবাসা এবং শুভ কামনা পেয়ে আপ্লুত।’ সোমবার শ্রীজাত-র নিভৃতবাসের শেষ দিন। কবি নিজ মুখেই জানিয়েছেন, ''আগের চেয়ে ভাল আছি। তবে দুর্বলতা, কাশি, সর্দি এখনও রয়েছে। বাকি সব আগের চেয়ে ভাল।'' অন্যদের তুলনায় অনেকটাই উপসর্গহীন ছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। শনিবার রাতে ফের করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। অভিনেতা করোনা-মুক্ত। টুইট করে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু করবেন তিনি। ভাল আছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং রফিয়াদ রশিদ মিথিলাও। তাঁরাও করোনা-মুক্ত। ১৪ জানুয়ারি থেকে 'মন্টু পাইলট ২'-এর শ্যুট শুরু করার কথা সৃজিত-ঘরনির।
৪ জানুয়ারি কোভিড রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন রাজ চক্রবর্তী-শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ জানুয়ারি তাঁদেরও নিভৃতবাস শেষ। তার পরেই তাঁরা কোলে নিতে পারবেন এক মাত্র সন্তান ইউভানকে। রাজের কথায়, তিনি এবং শুভশ্রী ভাল আছেন। জ্বর নেই। আর কোনও উপসর্গও নেই। তবে দুর্বলতা একেবারে কমেনি। আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গেও। কেমন আছেন বিজেপির তারকা সদস্য? অভিনেতা জানিয়েছেন, জ্বর নেই। নেই কাশি, গলাব্যথাও। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ আর বিশ্রাম চলছে। তবে সব কমে গেলেও ক’দিন বিশ্রামেই থাকবেন তিনি। ১২ জানুয়ারি আবার পরীক্ষা করাবেন। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কাজে যোগ দেবেন।
কোভিড থেকে ভুগে উঠলেন পরিচালক শতরূপা সান্যাল এবং তাঁর মেয়ে চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তীও। এখন কেমন আছেন? পরিচালকের কথায়, ‘‘গলা ব্যথা, কাশি ছিল প্রথমে। পরে হালকা জ্বর, গায়ে ব্যথা, দুর্বলতা। ভয় না পেয়ে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিত পথেই চিকিৎসা করালাম ঘরে বসেই। আমার বড় মেয়ে চিত্রাঙ্গদাও কোভিড পজিটিভ। গলা ব্যথা ছাড়া ওর কোনও উপসর্গ ছিল না।’’ শতরূপার দাবি, দু’জনেই নিজেদের বাড়িতে নিভৃতবাসে ছিলেন। কাউকে আসতেও দেননি। শুক্রবার দু’জনেরই আবার কোভিড পরীক্ষা করিয়েছেন। ফলাফল নেগেটিভ। শনিবার তাঁদের ফ্ল্যাট স্যানিটাইজ হয়েছে।
উপসর্গহীন বনি-কৌশানিও। শরীরে বাড়তি কোনও অস্বস্তিও নেই দুই তারকার। তবে তাঁদের নিভৃতবাস এখনও চলছে। উপসর্গহীন ঋদ্ধি সেনও। যেহেতু কোভিড পজিটিভ তাই তিনি এখনও নিভৃতবাসে। তাঁর মা রেশমি সেন করোনামুক্ত। তবে আরও কয়েকটি দিন তিনি বিশ্রামে থাকবেন। আগের তুলনায় অনেকটাই ভাল শ্রীলেখা মিত্র। শুরুতে জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, মাথা যন্ত্রণা, সারা শরীরে ব্যথা ছিল তাঁর। আস্তে আস্তে সে সমস্তই বশে এসেছে। অভিনেত্রীরও নিভৃতবাস চলছে। মন্দারমণিতে ‘আম্রপালি’র শ্যুট করতে গিয়েই করোনায় আক্রান্ত ছবির অধিকাংশ জন। বনির পাশাপাশি আক্রান্ত পরিচালক রাজা চন্দও। তিনিও আপাতত নিভৃতবাসে। ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং তাঁর পরিবার। বুধবার রাত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন ইমন চক্রবর্তী এবং নীলাঞ্জন ঘোষ। দু’দিন অপেক্ষার পরে শনিবার রিপোর্ট পেয়েছেন শিল্পী দম্পতি। তাঁরাও কোভিড পজিটিভ। তার পরেই ইনস্টাগ্রাম, টুইটারে সে কথা জানিয়েছেন ইমন। নিজের অসুস্থতার খবর জানাতে তিনি ব্যবহার করেছেন ‘প্রাক্তন’ ছবির বিখ্যাত গানের একটি পংক্তি, ‘আমার দরজায় খিল দিয়েছি, আমার দারুণ জ্বর!’