কাজ চলছে টেলিপাড়ায়
টলিউডে একের পর এক আক্রান্ত সৃজিত মুখোপাধ্যায়, পার্নো মিত্র, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, চিত্রাঙ্গদা, শতরূপা সান্যাল সহ একাধিক তারকা।খবর, একই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ও। নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়েছে প্রযোজক-পরিচালক সুশান্ত দাসের শরীরে। তার পরেও করোনা কিন্তু দমাতে পারেনি টেলিপাড়ার মনোবল। প্রযোজক থেকে পরিচালক হয়ে, অভিনেতা, কলাকুশলী প্রত্যেকেই আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, অকারণে ভয় পেতে আর রাজি নন তাঁরা। গত দু’বছরে রোগটির সঙ্গে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছেন। বুঝেছেন, অতিমারিকে নিয়েই চলতে হবে। ফলে, যাবতীয় কোভিড বিধি মানার পাশাপাশি মেনে চলছেন ব্যক্তিগত সতর্কতাও। সেই জায়গা থেকেই টেলিপাড়ার বার্তা, ‘‘কেউ আতঙ্কিত হবেন না। অযথা আতঙ্ক ছড়াবেন না। আমরা কোভিড বিধি মেনেই কাজ করছি।’’
তার পরেও প্রতি দিনই লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অভিনেতারা রূপটান নেওয়ার পরে আর মাস্ক পরতে পারেন না। চোরা ভয় কি একে বারেই নেই তাঁদের মনে? ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’র ‘মা সারদা’ সন্দীপ্তা স্বীকার করে নিয়েছেন, একটু হলেও শঙ্কা জাগে। কারণ, তাঁরা বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন। ‘‘ওই কারণেই আমি বারে বারে হাত স্যানিটাইজ করছি। বিশেষ করে কিছু ছোঁয়ার পরে। যাতে জীবাণু কম ছড়ায়।’’ একই সঙ্গে আশার কথাও শুনিয়েছেন তিনি, ‘‘শুনেছি অতিমারির তৃতীয় ঢেউ দ্রুত ছড়ালেও তত ভয়ঙ্কর নয়। আক্রান্তরা তাড়াতাড়ি সেরে উঠছেন। প্রাণহানির আশঙ্কা অনেকটাই কম। তাই সাবধানতা, সতর্কতা মানলেই এই সংক্রমণকে দূরে রাখা সম্ভব।’’
১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কড়া বিধি চালু করেছে রাজ্য সরকার। ফের লকডাউনের আশঙ্কায় কি ধারাবাহিকের আগাম পর্ব শ্যুট করে রাখা হচ্ছে? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল প্রযোজক স্নিগ্ধা বসুর কাছে। তাঁর কথায়, ‘'‘সবে বড়দিন কেটেছে। তার রেশ এখনও রয়ে গিয়েছে। ফলে, এখন হুড়োহুড়ি করে কিছু করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি নতুন ধারাবাহিকের একাধিক পর্ব আগাম শ্যুট করে রাখাও যায় না।’’' ওই জন্যে অ্যাক্রোপলিস এন্টারটেনমেন্টের পক্ষ থেকে কোভিড বিধি মেনে চলার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, ব্যক্তিগত ভাবে সবাই যেন সতর্ক থাকেন। তা হলেও রোগ থেকে দূরে থাকা যাবে।
সমস্যা নিয়েই সমাধান খোঁজায় বিশ্বাসী 'রাণী রাসমণি', 'মিঠাই', 'পিলু'-র পরিচালক রাজেন্দ্র প্রসাদ দাসও। তাঁর মতে, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আগামী আরও কয়েকটি বছর হয়তো অতিমারিকে নিয়েই ঘর করতে হবে। তাই অবস্থা বুঝে ব্যবস্থার পক্ষপাতী তিনিও। ব্যাঙ্কিং নিয়ে তাঁর যুক্তি, ‘‘আগামী এক মাস যদি লকডাউন থাকে তা হলে গোটা মাসের পর্ব কি আগাম শ্যুট করে রাখা যায়! তাই রাজ্য সরকার থেকে যখন যেমন নির্দেশ আসবে তখন তেমন পদক্ষেপ করব।’’
একই সুর প্রবীণ অভিনেতা সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তিনি এর আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই জায়গা থেকে তাঁর বক্তব্য, অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সবাই মিলে রোগটির মোকাবিলা করতে হবে। তিনিও শুনেছেন, তৃতীয় ঢেউ ততটাও মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী নয়। ‘‘চিকিৎসকদের থেকেই জেনেছি, প্রবল জ্বর হলেও সেটি ভয়ঙ্কর নয়। ওষুধ এবং নিয়মে থাকলে, টানা বিশ্রাম নিলে শরীর বশে থাকছে। তাই অকারণ রাস্তায় না ঘুরলে, মাস্ক পরে থাকলে, হাত, জিনিসপত্র স্যানিটাইজ করলে কিন্তু তৃতীয় ঢেউ থেকে রেহাই মিলতে পারে’’, এ ভাবেই আশায় বুক বাঁধছেন সুরজিৎ।