আমার হাতেই ক্ষমতা, ‘আমি’ই আমার মন...

আবির-জয়ার অনস্ক্রিন প্রেজেন্স বেশ লাগে। স্টিরিওটাইপড না হয়ে গিয়ে, আবির নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন দেখে ভাল লাগে। জয়া বরাবরের মতোই স্বাভাবিক। জয়ের পাশে অদিতি একেবারে বিপরীত।

Advertisement

অন্বেষা দত্ত

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:১৬
Share:

রোগটা আমাদের প্রায় সকলের। নিজের বাইরে গিয়ে দুনিয়াটাকে দেখার অভ্যেস হারিয়ে ফেলার রোগ। নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েই থাকতে ভালবাসি আমরা।

Advertisement

বছর কয়েক আগে টাইমস ম্যাগাজিনের ‘পার্সন অব দি ইয়ার’ ঘোষণা করা হয় ‘আই’ বা আমিকে। আমিই সব। আমার হাতেই ক্ষমতা। যে কোনও রাষ্ট্র নায়ক, সেলেব্রিটি অভিনেতা থেকে খেলোয়াড়, গায়ক— যে কারও কাছে সরাসরি পৌঁছে যাওয়ার চাবিকাঠি। সরকার বদলে দেওয়ার বিপ্লব করতে পারি আমিই। আবার সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রহে আটকে থাকা আমিত্ব ক্ষত তৈরি করে আমার সমাজে, পরিবারে। পাশাপাশি বসে দুটো মানুষ মোবাইলে মগ্ন থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ভাঙে সম্পর্ক!

জয় (আবির চট্টোপাধ্যায়) তেমনই মানুষ। এই ছবিতে শুধু আমি নিয়েই তার কারবার। আদ্যোপান্ত স্বার্থপর। ক্ষমতালোভী, সাফল্যসন্ধানী, অ্যারোগ্যান্ট জয়ের লোকের সঙ্গে কারণে-অকারণে দুর্ব্যবহার নিয়মিত অভ্যেস। জয় চ্যাটার্জি ওরফে জেসি আসলে ত্রাস। ব্যবসা তার মাছের চোখ। বাগদত্তা শিশু চিকিৎসক অদিতি রায় (জয়া আহসান) বহু বুঝিয়েও তার মধ্যে বদল আনতে পারেনি। যদি বা বদল আসে, তাও কি সেটা শুধু মাত্র সিনেমা বলেই?

Advertisement

জয় নিজের বাইরে দেখতে শেখে। কী ভাবে? সেটা থ্রিলিং এক জার্নি। আত্মার সেই অন্বেষণ তার চোখ খুলে দেয়।

আরও পড়ুন: কম দিনে শুট হয়েও বক্স-অফিস হিট যে বলিউড ছবিগুলি

থিমটা স্বার্থপর দৈত্যের ভাল হয়ে যাওয়ার গল্পের সঙ্গে মেলে। তবে এমন সাধারণ বিষয়ও কতটা প্রাসঙ্গিক, সেটা কিছু টানাপড়েনে বুঝিয়েছেন পরিচালক মনোজ মিশিগান। সোশ্যাল মিডিয়া, কনজিউমারিজম, গ্লোবালাইজেশনের মতো অস্ত্র মানুষকে একা হওয়ার দিকে আরও ঠেলছে। মুক্তি কোথায়?

আবির-জয়ার অনস্ক্রিন প্রেজেন্স বেশ লাগে। স্টিরিওটাইপড না হয়ে গিয়ে, আবির নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন দেখে ভাল লাগে। জয়া বরাবরের মতোই স্বাভাবিক। জয়ের পাশে অদিতি একেবারে বিপরীত। সেই বৈপরীত্য দু’জনেই যথাযথ ফুটিয়ে তুলেছেন। শতাফ ফিগার পুলিশের চরিত্রে অসম্ভব স্মার্ট। ছবিতে আছে একদল কচিকাঁচাও। বড়দের চোখ খুলে দেওয়ার অস্ত্র যেন ওরাই।

আমি জয় চ্যাটার্জি

পরিচালনা: মনোজ মিশিগান

অভিনয়: আবির চট্টোপাধ্যায়,
জয়া আহসান, শতাফ ফিগার

৬/১০

প্রশ্ন একটাই। স্বার্থপরতা থেকে বেরিয়ে আসতে যে যাত্রার মধ্যে দিয়ে জয়কে যেতে হল, সেটা কি বিশ্বাসযোগ্য? স্বার্থপর দৈত্যের অভাব নেই। তারা সবাই কি বোধ ফেরাতে শরীরের বাইরে আত্মানুসন্ধান করার সুযোগ পাবে? তা হলে বাকিদের কী ভাবে শুদ্ধিকরণ হবে?

টাইমস ম্যাগাজিন ‘আমি’ থেকে সরে এসে এ বছর ‘পার্সন অব দি উইক’ ঘোষণা করেছে ‘ইউ’ বা তুমিকে। ‘আমি’ কবে সব মোহ-বাধা কাটিয়ে তুমির দিকে হাত বাড়াতে পারব? আমাদের নিয়ে ভাবব? এ প্রশ্নটাও বড় পাওয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement