রাজ ও মন্দিরা
মন্দিরা বেদীর স্বামী প্রয়াত রাজ কৌশলের ইনস্টাগ্রাম ভর্তি শুধু বাঁচতে চাওয়ার কথা। জীবন খুব ছোট, তাই আনন্দে থাকুন— এমন বার্তায় ভরে রয়েছে প্রয়াত পরিচালক ও প্রযোজকের ইনস্টাগ্রাম। ৪৯ বছরের রাজ যেন তাঁর চলে যাওয়ার কথা টের পেয়ে গিয়েছিলেন অনেক আগেই। এমন ভাবনা চিন্তাই চলছে নেটাগরিকদের মনে। তাঁর বেঁচে থাকাকালীন যেই পোস্টের মূল্য ততটা ছিল না, সেগুলো দেখে এখন মর্মাহত নেটাগরিকরা।
একটি ছবিতে লেখা, ‘একটাই জীবন, আগামী কাল কী হবে কেউ জানে না, নিজের মতো করে বেঁচে নাও।’ সঙ্গে নিজের চেহারার সঙ্গে মিলিয়ে একটি কার্টুনের ছবি দিয়েছেন। গালে হাত দিয়ে মনমরা হয়ে যেন বসে রয়েছেন রাজ। চার দিকে ঘড়ি আর ক্যালেন্ডারের ছবি দিয়ে সময়কে ধরার চেষ্টা হয়েছে। নীচে হ্যাশট্যাগে লেখা, ‘ওয়ান লাইফ’ অর্থাৎ ‘একটাই জীবন’।
রাজের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট
দ্বিতীয় পোস্টেও রাজের কার্টুনকে দেখা যাচ্ছে। এই ছবিতে তিনি খুশি। হাতে কেক আর বেলুন। ছবিতে লেখা, ‘একটাই জীবন। বাঁচার মতো করে বাঁচো।’ নীচে সেই একই হ্যাশট্যাগ, ‘ওয়ান লাইফ’।
রাজের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট
শুধু তাই নয়, তাঁর প্রায় প্রতিটা ছবির তলায় জীবন সম্পর্কে কোনও না কোনও ইতিবাচক বার্তা দেওয়া। পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার সময়টা হয়তো তাঁর জানা ছিল না, কিন্তু জীবনের প্রতিটা মুহূর্তকে আনন্দে ভরে তোলার জন্য আগ্রহী ছিলেন রাজ। আর সেই কথাই সবাইকে বলতে চেষ্টা করতেন ‘পেয়ার মে কভি কভি’-র পরিচালক।
মন্দিরা বেদীর স্বামী ও পরিচালক-প্রযোজক রাজ কৌশল চট্টোপাধ্যায় বুধবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হৃদরোগে আত্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যসংবাদ পৌঁছতেই রাজ-মন্দিরার বাড়িতে ভিড় জমেছিল বলি তারকাদের। উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী হুমা কুরেশি, নেহা ধুপিয়া, অভিনেতা অঙ্গদ বেদী, রনিত রায়, অপূর্ব অগ্নিহোত্রী, দিনো মোরিয়া, আশিস চৌধরী প্রমুখ।
২০২০ সালের ২৮ জুলাই তারাকে দত্তক নিয়েছিলেন রাজ এবং মন্দিরা। সেই থেকে তাঁদের পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হল ছোট্ট তারা। মন্দিরা সেই সময়ে নেটমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘সে আমাদের কাছে এসেছে আশীর্বাদ হয়ে। আমাদের ছোট্ট মেয়ে, তারা। তার চোখ দু’টোও তারার মতো ঝলমলে। বীর তার বোনকে স্বাগত জানিয়েছে ভালবেসে। নিখাদ ভালবাসা দেব তাকে। আমরা আজ কৃতজ্ঞ।’
তার পর থেকে দম্পতির নেটমাধ্যম ভরে ওঠে তারা ও পুত্র বীরের ছবিতে। রাজ কৌশলের ইনস্টাগ্রামের পাতা ঘুরে এলে দেখা যাবে, সন্তানদের সঙ্গে খেলাধুলো, সাঁতার কাটা, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটানো, বন্ধুবান্ধদের সঙ্গে পার্টি করা— সত্যিই যেন প্রাণ খুলে বাঁচায় বিশ্বাসী ছিলেন রাজ।
সেই মানুষটার জীবন থেমে আচমকা। রেখে গেলেন দুই সন্তান ও স্ত্রীকে। স্বামীর মৃত্যুর পর মন্দিরার একাধিক ছবি ও ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কান্নায় ভেঙে পরা, বিধ্বস্ত মন্দিরাকে দেখে চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি নেটাগরিকরাও।