তারকাদের সময়ের জন্য বলিউডে অপেক্ষা করতেই হয় পরিচালক, প্রযোজকদের। ৬ মাস থেকে ২ বছর— অপেক্ষার মেয়াদ নিয়ে এ রকম নজির বহু আছে। কিন্তু শোনা যায়, অপেক্ষা করিয়ে রাখার দিক দিয়ে সকলকে টেক্কা দিয়েছিলেন মাধুরী দীক্ষিত।
মাধুরীর জন্য নাকি একবার এক পরিচালককে অপেক্ষা করতে হয়েছিল পাক্কা ২০ বছর।
সে সময় মাধুরী নায়িকাজীবনে খ্যাতির শীর্ষে। ‘অঞ্জাম’ ছবির শ্যুটিঙের সময় তাঁর কাছে গিয়েছিলেন পরিচালক কুন্দন শাহ।
মাধুরীকে একটি ছবির গল্প শোনান কুন্দন। গল্পটি পছন্দ হয় মাধুরীর। তিনি সেই সময় যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন, তার থেকে অনেকটাই অন্যরকম ছিল এই কাহিনি। চিত্রনাট্যে এক যৌনকর্মীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মাধুরীকে ভেবেছিলেন কুন্দন।
কুন্দন সে সময়ে ‘ক্যয়া কহেনা’ ছবি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সেই ছবির কাজ শেষ করেই মাধুরীকে নিয়ে নতুন ছবি শুরু করতে।
গল্প পছন্দ হলেও মাধুরী সময় দিতে পারলেন না। শ্রীরাম নেনে-কে বিয়ে করে তিনি পাড়ি দিলেন আমেরিকা।
বিয়ের পরে বেশ কিছু বছর ছবির দুনিয়া থেকে দূরে ছিলেন মাধুরী। ২০০৫ সালে তিনি বলিউডে এসে ‘আ জা নাচ লে’ ছবির প্রস্তুতি নিতে থাকেন।
সে সময় আরও একবার মাধুরীর কাছে যান কুন্দন। গুঞ্জন, কিন্তু সে বারও মাধুরী আরও কিছুটা সময় চেয়ে নেন।
২০১৩ সালে মাধুরীকে একটি আইটেম নম্বরের সঙ্গে নাচতে দেখা যায় ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবিতে।
সে সময় তৃতীয় বারের জন্য মাধুরীর দ্বারস্থ হন কুন্দন। এ বার আর অপেক্ষা নয়। পরিচালককে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন মাধুরী।
মাধুরী নাকি বলেছিলেন, ব্যক্তিগত জীবনে দুই সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার পর পর্দায় তাঁর আর যৌনকর্মী সাজার ইচ্ছে নেই।
কুন্দন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রস্তাব মাধুরী নাকচ করে দেওয়ার পরে তিনি প্রায় ১ হাজার জনের অডিশন নিয়েছিলেন।
এর পর এক অভিনেত্রীকে পেয়েছিলেন কুন্দন। তিনিও দীক্ষিত। তবে মাধুরী নন, মীনাক্ষী দীক্ষিত। তাঁকে নায়িকা করেই কুন্দন পরিচালনা করেছিলেন ‘পি সে পিএম তক’ ছবিটি।
২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘পি সে পিএম তক’। ছবির বিষয় ছিল, কী ভাবে এক নারী যৌনকর্মী থেকে শেষ অবধি দেশের প্রধানমন্ত্রী হন।
কিন্তু বক্স অফিসে ছবিটির কার্যত কোনও অস্তিত্বই ছিল না। কবে মুক্তি পেয়েছিল, কবেই বা হল থেকে চলে গেল, দর্শকরা প্রায় জানতেই পারেননি।
যে ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মাধুরীকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন কুন্দন সে ধরনের চরিত্রে ‘দেবদাস’ এবং ‘কলঙ্ক’ ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন মাধুরী। এ ছাড়া, তাঁর নায়িকাজীবনের শুরুর দিকের ছবি ‘দয়াবান’ তো আছেই। এই ছবিতে বিনোদ মেহরার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি করেছিল। শোনা যায়, ‘দয়াবান’ ছবিতে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে পরবর্তী সময়ে আক্ষেপ করেছিলেন মাধুরী।
কিন্তু কুন্দনকে তিনি দীর্ঘ দু’দশক অপেক্ষা করিয়ে কেন ফিরিয়ে দিলেন, তার কারণ আজও অজ্ঞাত। যদিও কুন্দনের দাবি, মাধুরী তাঁকে অপেক্ষা করিয়ে রাখেননি। রূঢ় ভাবেও প্রত্যাখ্যান করেননি। কিন্তু মাধুরীর মতো তারকার সম্মতির জন্য তাঁর কাছে বার বার প্রস্তাব নিয়ে যেতেও দ্বিধা হয়নি বলে দাবি কুন্দনের।