মানবী
ওয়েব প্ল্যাটফর্মের নিয়মিত দর্শকের কাছে মানবী গাগরু পরিচিত মুখ। টিভিএফ-এর ‘পিচারস’, ‘ট্রিপলিং’-এর সুবাদে জনপ্রিয় তিনি। এই বছরে মুক্তি পাওয়া ‘শুভ মঙ্গল জ়াদা সাবধান’-এ গগল ত্রিপাঠীর চরিত্র ছিল বড় পর্দায় তাঁর ‘বিগ ব্রেক’। এই ছবির পরে কি বেশি ছবির প্রস্তাব পাচ্ছেন? ‘‘বড় পর্দা শুধু নয়। ওয়েবেও নানা ধরনের প্রস্তাব পাচ্ছি। তবে অনেকের ধারণা, মানবী বলিষ্ঠ নারীচরিত্র ছাড়া কাজ করবেন না। সেটা ঠিক নয়। আমি সব ধরনের চরিত্র করতে চাই। তবে এই স্টিরিয়োটাইপটাও উপভোগ করি,’’ মুম্বই থেকে ফোনের ও পারে ভেসে এল অভিনেত্রীর হাসিভরা কণ্ঠস্বর।
অ্যামাজ়ন প্রাইমের জনপ্রিয় সিরিজ় ‘ফোর মোর শটস প্লিজ়’-এর সিজ়ন টু মুক্তি পাচ্ছে আজ। সেই সিরিজ়ে সিদ্ধির চরিত্রে অভিনয় করেছেন মানবী। বাকি তিন জন যে চরিত্র করেছেন, তার মধ্যে কোনওটা পছন্দ হয়নি? ‘‘প্রথম যখন স্ক্রিপ্ট শুনেছিলাম, দামিনীর চরিত্র (সায়নী গুপ্ত অভিনীত) বেশি পছন্দ হয়েছিল। কারণ বাস্তবে আমি ওই চরিত্রের কাছাকাছি। সিদ্ধি হল এই গার্ল গ্যাংয়ের ‘বেবি’। ওকে সকলে প্যাম্পার করে। কিন্তু এই ধরনের চরিত্রও আমি আগে করিনি। তাই চ্যালেঞ্জটা নিলাম। সিদ্ধির সঙ্গে যে আমার একদম মিল নেই, তা নয়। পরিস্থিতি বদলে যায়, বেসিক ইমোশন একই থাকে,’’ জবাব তাঁর।
এ বার এই সিরিজ়ের আউটডোর শুট হয়েছে ইস্তানবুলে। শুটিংয়ে কতটা মজা করলেন? ‘‘আমাদের চার জনের মধ্যেই বন্ডিং খুব স্ট্রং। এই সিজ়নে সেটা আরও পোক্ত হয়েছে। ইস্তানবুলে শুটিংয়ের শেষ দিনে আমার মেকআপ-শিল্পী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই সায়নী বলে, ‘তুই আমার মেকআপ আর্টিস্ট নে। আমার হয়ে গিয়েছে মেকআপ...’ আবার বাণীও ততক্ষণে ওর মেকআপ শিল্পী পাঠিয়ে দিয়েছে। এমনই আমাদের বন্ডিং। আর একে অপরের স্টাইল স্টেটমেন্টেও ইনপুট দিতাম। কাকে কোনটায় বেশি মানাবে...’’ স্মৃতিচারণ করলেন মানবী।
আরও পড়ুন: মানবিক হৃতিক
বলিউডের একাধিক নামী শিল্পী যখন বড় পর্দা থেকে সরে ডিজিটালে কাজ করছেন, মানবী তখন ডিজিটালের জনপ্রিয়তার কারণেই সেলুলয়েডে বড় সুযোগ পেলেন। ডিজিটাল কি সব শিল্পীকেই এক সারিতে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে? প্রশ্নটা শুনে উৎসাহিত হয়ে মানবী বললেন, ‘‘ইন্টারনেট সকলকেই এক করে দেয়। আপনি কোনও বড় স্টারের ছেলে হোন বা ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে আসা কেউ, ডিজিটালে কোনও ফারাক নেই। ওরা শুধু ভাল কনটেন্ট বোঝে। সত্যি কথা বলতে, টেলিভিশন এবং বড় পর্দা দর্শকের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে একটা বড় ফাঁক তৈরি করেছিল। যাঁরা বিদেশি, যুগোপযোগী, আর্বান কনটেন্ট দেখতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্যই তো এই মার্কেট তৈরি হয়েছে।’’
ভারী চেহারার জন্য ইন্ডাস্ট্রি কি মানবীকে টাইপকাস্ট করে? ‘‘সমাজের বাকি পাঁচ জনের যে মানসিকতা, ইন্ডাস্ট্রিও তার ব্যতিক্রম নয়। আপনি যখন পর্দায় কোনও শিল্পীকে দেখে কমেন্ট করেন, ‘কী মোটা!’, আপনিও সেই ফাঁদেই পা দেন। তবে বডি শেমিং, গায়ের রং নিয়ে বৈষম্যের প্রতিবাদ তো এখন হচ্ছে। তাই ইন্ডাস্ট্রিও বদলাচ্ছে।’’
কোয়রান্টিনে বাকিরা দুশ্চিন্তায় থাকলেও, মানবী কিন্তু এই অখণ্ড অবসর উপভোগ করছেন। ‘‘গত বছর আমার খুব হেকটিক শিডিউল ছিল। ক’দিনের ছুটি নেব ভেবেছিলাম। তার বদলে এত দিনের ছুটিতে আমি নতুন এনার্জি সঞ্চয় করছি,’’ হাসি তাঁর কণ্ঠে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে ধুঁকছে টলিউড, ক্ষতির শঙ্কা ২০০ থেকে ৩০০ কোটির