২০২২ সালে প্রথম ছবি। তাতেই নজর কাড়লেন যে পঞ্চক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রথম ছবি পরিচালকের কাছে ‘প্রথম প্রেম’। ২০২২ সালে টলিপাড়ায় নিজেদের প্রথম ছবি নিয়ে ভাগ্যান্বেষণে নেমেছিলেন অনেকে। শেষ বিচারে সম্ভাবনা জাগালেন যে পাঁচ জন।
১. ঈশান ঘোষ: কয়েক জন বন্ধু এবং সামান্য বাজেট সম্বল করে তৈরি তথাকথিত ‘ছোট’ ছবি ‘ঝিল্লি’। সেই ছবি যে কখনও মুক্তির পাবে, ভাবেননি ঈশান। প্রান্তিক মানুষদের লড়াইকে তুলে ধরেছে তাঁর ছবি। প্রেক্ষাপট শহর কলকাতার পাশে ধাপার জনজীবন। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অরণ্য গুপ্ত, শম্ভুনাথ দে, বিতান বিশ্বাস প্রমুখ। ঈশান পরিচালক গৌতম ঘোষের পুত্র। পিতা গৌতম পুত্রের ছবিটি প্রযোজনা করেছেন। কিন্তু ছবিতে ঈশান রেখেছেন স্বকীয়তার ছাপ। ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ঝিল্লি’ সেরা ছবি হয়েছিল। গত ১১ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে ‘ঝিল্লি’। তবে খুব বেশি প্রেক্ষাগৃহে নয়। সমালোচকেরা অবশ্য প্রশংসায় মুখর।
২. প্রসূন চট্টোপাধ্যায়: পরিচালক প্রসূনের প্রথম ছবি। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রেক্ষাপটে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দুই ছোট্ট বন্ধুর গল্প বলে ‘দোস্তজী’। বিদেশের একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হওয়ার পর গত ১১ নভেম্বর বাংলায় মুক্তি পায় ‘দোস্তজী’। ছবিটি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ‘নিবেদক’ হিসেবে এগিয়ে আসেন তিনি। ছবির মুখ্য চরিত্রে দুই শিশুশিল্পী আরিফ শেখ ও আশিখ শেখের অভিনয়ে বুঁদ হয়েছে বাঙালি। সময়ের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা বেড়েছে। বক্স অফিসেও ছবিটি সফল।
৩. সম্রাট শর্মা: ছোট পর্দায় দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। অতঃপর তিনি বড় পর্দায় এলেন। পরিচালক হিসেবে এই শর্মা ‘সম্রাট’ হবেন কি না, তা ভবিষ্যতের গর্ভে। কিন্তু তাঁর প্রথম ছবি ‘প্রসেনজিৎ ওয়েডস ঋতুপর্ণা’-র সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে ইন্ডাস্ট্রির দুই ওজনদার নাম প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তাই কি এই জুটি ছবিটি নিবেদনেও রয়েছেন? হাসির মোড়কে বাস্তবের কথা বলে এই ছবি। ছবির নায়িকার নাম ‘ঋতুপর্ণা’। এবং সে ‘প্রসেনজিৎ’ নামের পাত্রকেই বিয়ে করতে চায়। সে বিয়েও হয়। কিন্তু বিয়ের পর নবদম্পতির জীবনে কী কী মোড় আসে, তা নিয়েই গল্প। নব্বইয়ের দশকের বক্স অফিস কাঁপানো টলিপাড়ার সুপারহিট জুটিকে এক রকম ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’ই জানিয়েছে এই ছবি। নস্ট্যালজিয়া এবং মিষ্টি প্রেমের গল্পে আগাপাশতলা ছবিকে মুড়েছেন পরিচালক সম্রাট।
৪. রাহুল মুখোপাধ্যায়: টিনটিন-রোহিনীর মিষ্টি প্রেমের গল্প ‘কিশমিশ’। এটিই পরিচালক রাহুলের প্রথম ছবি। ছবির মুখ্য চরিত্রে বাস্তব জীবনেরও জুটি দেব-রুক্মিণী। আর কী চাই! সেখানেই অর্ধেক বাজি মেরে রেখে দিয়েছিলেন রাহুল। গল্পের পাশাপাশি ছবিতে ভিএফএক্স-এর ব্যবহার, পোশাক পরিকল্পনাও নজর কেড়েছিল। গানগুলিও জনপ্রিয় হয়েছিল। ছবিতে ছিলেন খরাজ মুখোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অঞ্জনা বসু, জুন মালিয়া এবং লিলি চক্রবর্তী। এই নবীন পরিচালক কি বলবেন, ‘‘রাহুল! নাম তো ইয়াদ রহেগা, না?’’
৫. তথাগত মুখোপাধ্যায়: এমনিতে তিনি ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত মুখ। কিন্তু অভিনেতার পাশাপাশি তাঁর ভিতরে যে একজন পরিচালকও লুকিয়েছিল, তা কে জানত! একাধিক স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি পরিচালনার পর এই বছর তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি ‘ভটভটি’ নিয়ে হাজির তথাগত। প্রথম ছবিতে নতুন মুখ ঋষভ বসু এবং বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়। মুখ্য চরিত্র ‘ভটভটি’ এবং তার খুঁজে পাওয়া জলপরিকে নিয়ে কাহিনি। দুষ্টু লোকেরা অবশ্য বলে, তথাগতের জীবনে বিবৃতি ‘জলপরি’র মতোই আবির্ভূত হয়েছিলেন। বক্স অফিসে খুব ভাল ফল করেনি ‘ভটভটি’। কিন্তু ছবির ভিএফএক্স প্রশংসিত হয়েছিল। অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন তথাগতের প্রাক্তন স্ত্রী দেবলীনা দত্ত, মমতা শঙ্কর, দীপঙ্কর দে, রজতাভ দত্তেরা।