রাহুল-অরুণিমা-সিধু-শোলাঙ্কি
লকডাউনে স্থবির জনজীবন। কিন্তু থেমে নেই শিল্পসৃষ্টি। কঠিন সময় পুরনো স্মৃতি উস্কে দিতে অনেকে ফিরে গিয়েছেন রেডিয়ো শোনার অভ্যেসে। ‘গল্পদাদুর আসর’ কিংবা ‘শনিবারের বারবেলা’য় এখনও বাঙালি নস্ট্যালজিক। অডিয়ো শোনার চলই ফিরে এল লকডাউনে গৃহবন্দি শ্রোতাদের কাছে। চাহিদা মেনে তৈরি হচ্ছে নতুন কনটেন্টও।
অভিনেত্রী অরুণিমা ঘোষের মতে, ‘‘শ্রুতিনাটক, গানবাজনা, চ্যাট, গল্প, আড্ডা— বিনোদনের নতুন এবং আধুনিক প্ল্যাটফর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে অডিয়োয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রভাব বিস্তার করছে বিভিন্ন অডিয়ো কনটেন্ট। পেশার নানা দিকও খুলে যেতে পারে এর মাধ্যমে।’’ শ্রুতিনাটকে মন দিয়েছেন অরুণিমা। লকডাউনের আড্ডাতেই শ্রুতিনাটকের আইডিয়া বার করেন তাঁর বন্ধু প্রিয়ম। তাঁরই পরিচালনায় ‘অভিযোগ’ নামে এই শ্রুতিনাটকটি শিগগিরই আসছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে প্রধান চরিত্রে থাকছেন অভিনেত্রী।
৯০ জন শিল্পী মিলে তৈরি ‘কোয়রান্টিন টেলস’ অডিয়ো সিরিজ়ের অন্যতম মুখ্য ভুমিকায় দেখা গিয়েছে শোলাঙ্কি রায়কে। শ্রোতাদের দাবিতেই সিরিজ়ের পার্ট টু নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে, জানালেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী। অডিয়োর চাহিদা বাড়ার কারণ হিসেবে শোলাঙ্কি বললেন, ‘‘নাটক, গান শুনতে শুনতে ঘরের অনেক কাজ সেরে ফেলা যায় আসলে। আমি নিজেও তাই করছি। যে কাজ করতে বিরক্তি লাগত, এখন সহজেই হয়ে যাচ্ছে।’’
‘কোয়রান্টিন টেলস’-এ অতিথি ছিলেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অন্য রকম অভিজ্ঞতা হলেও অডিয়োর জনপ্রিয়তা নিয়ে খানিকটা সন্দিহান রাহুল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরাসরি দর্শক আমাকে দেখতে পাচ্ছেন, এমন কাজের মজা অনেক বেশি। অডিয়ো কোনও ভাবেই এর পরিবর্ত হতে পারে না। তবে পাশাপাশি চলবে।’’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে ‘বনলতা’কে হাওয়ায় চিঠি ভাসিয়ে দিলেন কৌশিক-পুত্র উজান
অডিয়ো কনটেন্ট অডিয়ো-ভিস্যুয়ালের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার আর একটি কারণ খুঁজে বার করলেন অভিনেত্রী রণিতা দাস, ‘‘ভিডিয়ো করতে ভাল ক্যামেরা আছে এমন ফোন দরকার হয়। সাউন্ডের দিকটাও মাথায় রাখতে হয়। মেকআপেরও দরকার পড়ে। এই সমস্যাগুলো অডিয়োর ক্ষেত্রে নেই।’’ সৌপ্তিকের পরিচালনায় ‘লকডাউন ডায়েরিজ়’ অনলাইন নাটকটি পরিবেশন করার পরেই রণিতা-সৌপ্তিকের অডিয়োয় পরীক্ষানিরীক্ষার ইচ্ছে হয়।
সম্প্রতি অডিয়োয় নিজেকে প্রকাশ করলেন সঙ্গীতশিল্পী সিধুও। ‘ক্যাকটাস’-এর কর্ণধারের কথায়, ‘‘একটি ইউটিউব চ্যানেলে পরশুরামের গল্প ‘সরলাক্ষ হোম’ নিয়ে শ্রতিনাটক হল। গল্পের প্রধান চরিত্রে আমি কণ্ঠ দিলাম। কাজটা করে এতটাই আগ্রহ পেয়েছি যে, নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে বাছাই করা গল্প পাঠ করব ভাবছি। সঙ্গে থাকবে গানও।’’
সরকার বাড়ির তিন বোন মানেকা, মৌবনী, মুমতাজ ছোটবেলায় বাবার শোয়ের হাতি, উট, সিংহদের বাড়িতেই দেখেছেন। ‘‘বাবা (পি সি সরকার জুনিয়র) পশুপ্রাণীদের এনেছিলেন বিভিন্ন দেশ থেকে। অনেকে আজ বেঁচে নেই। তবে বাবার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা শুনতে ভাল লাগবে শ্রোতাদের,’’ বললেন মৌবনী।
লকডাউন-পরবর্তী সময়েও শ্রুতি-বিনোদনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী টলিউড।
আরও পড়ুন: রাজ-শুভশ্রী, পায়েল, অরিন্দমদের আবাসনে করোনার হানা!