এক যে ছিল রাজা
ছ’টা ছবি একসঙ্গে মুক্তি পেলে তা যতই ব্যবসা করুক, সেখানে খানিক কাটাকুটি হবেই। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আরও একটা জিনিস প্রত্যাশা মতোই হয়েছে, সেটা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের এক নম্বরে থাকা। মাল্টিপ্লেক্স-সিঙ্গল স্ক্রিন সব কিছুর নিরিখেই সৃজিতের ‘এক যে ছিল রাজা’ বাকিদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে। দ্বিতীয় স্থানে অরিন্দম শীলের ‘ব্যোমকেশ গোত্র’।
এই দুই ছবির সাফল্য নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। কিন্তু তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানের লড়াইটা বেশ ঘাড়ে ঘাড়ে। আইনক্সের পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা অমিতাভ গুহঠাকুরতা জানালেন, তাঁদের মাল্টিপ্লেক্সের ব্যবসা অনুযায়ী প্রথম-দ্বিতীয় স্থানে ‘এক যে ছিল রাজা’ এবং ‘ব্যোমকেশ গোত্র’। তৃতীয় স্থানে ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’, চতুর্থ ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’, পঞ্চমে ‘হইচই আনলিমিটেড’ এবং ষষ্ঠ স্থানে ‘ভিলেন’।
‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’র প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যেমন উচ্ছ্বসিত ছবির ফলাফল নিয়ে, ‘‘কোনও রকম প্রচার ছাড়াই কনটেন্টের জোরে এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে এক কোটির মতো ব্যবসা হয়েছে।’’ অমিতাভর বক্তব্য, ‘‘ছোট ছবি হিসেবে ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’র বেশ ভাল ব্যবসা হয়েছে। ‘কিশোর কুমার...’কেও আমরা হিট বলছি। ‘হইচই...’ অ্যাভারেজ বলা যেতে পারে।’’
এটা মাল্টিপ্লেক্সের হিসেব। সিঙ্গল স্ক্রিনের অঙ্কটা আলাদা। গ্রামাঞ্চলের হলগুলোয় ‘হইচই...’-এর ব্যবসা বেশ ভাল। ‘ভিলেন’ও মন্দ নয়। এই দুই ছবির ব্যবসার উপরে টলিউডের বাণিজ্যিক ছবির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। সিঙ্গল স্ত্রিনে দেবের ‘হইচই...’-এর ব্যবসা সেই আশাটা জাগিয়ে দিচ্ছে বলা যেতে পারে। ছবির ব্যবসা নিয়ে দেবের বক্তব্য, ‘‘কমার্শিয়াল ছবি হিসেবে সিঙ্গল স্ক্রিন-মাল্টিপ্লেক্স দু’জায়গাতেই ভাল ব্যবসা করছে। সপ্তাহান্তে অনেক জায়গায় হাউসফুল ছিল। তবে কয়েকটা হল থেকে আমাদের না জানিয়েই ছবি তুলে দেওয়া হয়েছে।’’
মূল লড়াইটা ‘...রাজা’ এবং ‘কিশোর কুমার’-এর মধ্যে হবে ভাবা হচ্ছিল। এই প্রথম সৃজিত এবং প্রসেনজিৎ মুখোমুখি। কিন্তু গত এক সপ্তাহের ব্যবসার বিচারে সৃজিতের ছবি মাইলখানেক এগিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হলমালিকের কথায়, ‘‘বাকি বাংলায় ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’ একেবারেই ভাল ব্যবসা করেনি।’’ ব্যোমকেশ নিয়ে দর্শক প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক। অনেকের মতে, এটা অরিন্দম শীলের সেরা ব্যোমকেশ। তবে এক এবং দু’নম্বর ছবির ব্যবসার ব্যবধান বেশি নয়। এখন অরিন্দমের ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ সৃজিতের ‘এক যে ছিল রাজা’কে টপকে যায় কি না, সেটাই এখন দেখার।
পুজোয় অনেক ছবি নামী পরিচালক, নামী তারকার হাইপেই বেরিয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাল কনটেন্টই টিকে থাকে। পুজোর ভিড় কেটে যাওয়ার পরে এটা নিশ্চিত যে ছবির নাম লোকের মুখে ছড়াবে, সে ছবিই লং টার্ম ব্যবসা করবে। লড়াই শুরু এ বার...