সরোজ খান। ছবি: সংগৃহীত।
বলিউডের অন্যতম কৃতী ও জনপ্রিয় নৃত্যপ্রশিক্ষক তিনি। ‘এক দো তিন’ থেকে ‘হাওয়া হাওয়াই’-র মতো গানে তাঁর শেখানোর নাচের তালেই নেচেছেন মাধুরী দীক্ষিত, শ্রীদেবীর মতো তাবড় নায়িকারা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে নৃত্যপ্রশিক্ষকের সহকারী হিসাবে বলিউডে পা রেখেছিলেন সরোজ খান। তার এক দশকের মধ্যেই স্বাধীন ভাবে কোরিয়োগ্রাফি শুরু করেন তিনি। সুভাষ ঘাইয়ের ‘হিরো’ ছবিতে নৃত্যপ্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করার পর নজরে আসেন সরোজ। তত দিনে প্রথম বিয়ের ভেঙে দ্বিতীয় বার গাঁটছড়া বেঁধেছেন তিনি। পেশাগত জীবনে চূড়ান্ত সাফল্য সত্ত্বেও ব্যক্তিগত জীবনে কম ঝড়ঝাপ্টার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়নি সরোজকে।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে নিজের নৃত্যগুরু সোহনলালকে বিয়ে করেন সরোজ। তখন যদিও সরোজ খান নন তিনি। জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল নির্মলা নাগপাল। তবে মেয়ে বিনোদন জগতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর নাম পরিবর্তন করে সরোজ রাখেন তাঁর মা। বাড়ির মেয়ে উপার্জনের জন্য নাচ করছে, তা যাতে কেউ জানতে না পারেন— সেই কারণেই এই ব্যবস্থা করেছিলেন সরোজের মা। ১৩ বছর বয়সে যখন সোহনলালকে বিয়ে করেন সরোজ, তখন সোহনলালের বয়স ৪৩ বছর। ১৪ বছর বয়সে প্রথম সন্তানের জন্ম দেন সরোজ। তার পরেই সরোজ জানতে পারেন, সোহনলাল বহু আগে থেকেই বিবাহিত। শুধু তাই-ই নয়, তাঁর নাকি তার সন্তানও আছে। ১৯৬৫ সালে সরোজ দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে সোহনলাল তাদের পিতৃপরিচয় দিতে রাজি না হওয়ায় বিয়ে ভেঙে বেরিয়ে আসেন তিনি। যদিও তার পরে ১৯৬৯ সালে আরও এক বার সোহনলালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন সরোজ। ১৯৭৫ সালে ব্যবসায়ী সর্দার রোশন খানকে বিয়ে করেন সরোজ। তাঁকে বিয়ে করার জন্যই ইসলাম গ্রহণ করেন নৃত্যপ্রশিক্ষক। তার পর থেকেই সরোজ খান নামে পরিচিত হন তিনি।
২০২০ সালে ৭১ বছর বয়সে জীবনাবসান হয় সরোজের। বলিউডে তাঁর অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে তাঁর জীবনীচিত্র বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিচালক হংসল মেহতা ও ভূষণ কুমার। শোনা যাচ্ছে, সরোজের বায়োপিকে অভিনয় করতে পারেন সরোজের অন্যতম প্রিয় নায়িকা মাধুরী। যদিও নির্মাতাদের তরফে এখনও এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি।