মাত্র ৩৩ বছর বয়সে মৃত্যুর সঙ্গে টানা তিন দিন লড়েছিলেন লতা।
২৮ সেপ্টেম্বর ৯২ বছরে পা রাখলেন লতা মঙ্গেশকর। সারা দেশ তাঁকে টুইটে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে অনেক ভাল-মন্দ স্মৃতি তাঁকে জড়িয়ে। এত নাম-যশ-খ্যাতি-প্রতিপত্তি সহজে পাননি কোকিলকণ্ঠী। যত তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছে ততই নাকি তাঁর শত্রুও বেড়েছে। এমনটাই জানা গিয়েছে পদ্মা সচদেবের লেখা ‘লতা মঙ্গেশকর: অ্যায়সা কাঁহা সে লাউঁ’ গ্রন্থে। পরে প্রবাসী সাংবাদিক নাসির মুন্নি কবির লতাজির একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেখানেও জানা যায়, ১৯৬২-তে খাবারে বিষ মিশিয়ে নাকি খুন করার চেষ্টা হয়েছিল তাঁকে! পরে এই খবরের সত্যতায় সিলমোহর দিয়েছিলেন শিল্পীর বোন ঊষা মঙ্গেশকর।
লতা তখন মাত্র ৩৩। খ্যাতির চূড়ায়। হঠাৎই এক ভোরে তাঁর পেটে প্রচণ্ড ব্যথা। এর পরেই সবুজ বমি করতে থাকেন তিনি। আস্তে আস্তে সারা শরীর অসাড়। হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতাটুকুও নেই। অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গায়িকা। চিকিৎসককে খবর দিতেই তিনি বাড়িতে এক্স রে-র ব্যবস্থা করেন। ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন তাঁকে। তাঁর করা এক্স রে থেকে জানা যায়, পাকস্থলীতে বিষ রয়েছে। সে বার টানা তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছিলেন লতা। ১০ দিন পরে অবস্থার উন্নতি হয়। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু তখন ভীষণ দুর্বল। তখনই চিকিৎসক জানান তাঁকে কেউ বিষপ্রয়োগ করে খুন করতে চেয়েছিল। বিষক্রিয়ার প্রভাবে অনেক দিন পর্যন্ত লতা গরম খাবার খেতে পারতেন না। বরফের টুকরো মেশানো তরল খাবার খেতেন তিনি।
কে এ ভাবে তাঁকে বিষপ্রয়োগ করে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন, জানা যায়নি। তবে লেখক পদ্মা তাঁর বইয়ে জানিয়েছেন, লতার রাঁধুনি এর পরেই নাকি পারিশ্রমিক না নিয়ে আচমকা কাজ ছেড়ে চলে যান। এবং তিনি এর আগে বলিউডের বেশ কিছু তারকার বাড়িতে কাজ করেছিলেন। লতার প্রাণসংশয়ের খবর ছড়াতেই টানা বেশ কিছু দিন সন্ধ্যা ৬টায় তাঁর বাড়িতে আসতেন বিখ্যাত গীতিকার মজরুহ সুলতানপুরী। তিনি এসে তাঁর প্রিয় গায়িকার সঙ্গে সময় কাটিয়ে যেতেন। তাঁকে দেওয়া স্যুপ আগে নিজে চেখে দেখতেন। তার পরে সেটি খেতে দেওয়া হত লতা মঙ্গেশকরকে।