শ্রুতি দাস।
তিনি কৃষ্ণাঙ্গী, এটাই তাঁর বড় দোষ। আরও দোষ, শহরতলি থেকে এসে শহর কলকাতাকে জয় করেছেন তিনি। এই দুই 'দোষে'র ভাগী শ্রুতি দাস। তাই লাগাতার তিনি নেটাগরিকদের বর্ণবৈষম্যের শিকার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কৃষ্ণকলি’-র রূপ যে কেবল কবিতাতেই আটকে রয়েছে, সে কথা আরও এক বার প্রমাণিত বৃহস্পতিবার। এ দিন নেটমাধ্যমে এক অশালীন পোস্ট তুলে ধরেন অভিনেত্রী। জানান, বর্ধমানের কাটোয়ার এক পরিচিত বাসিন্দা তাঁকে অশ্রাব্য কটূক্তি করেছেন। এর পরেই তিনি বিষয়টি জানিয়ে দ্বারস্থ হন লালবাজারের। সাইবার অপরাধ দমন শাখায় মেল করে অভিযোগও দায়ের করেন। খবর, শ্রুতির করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করেছে লালবাজার। আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তদন্তও শুরু হয়েছে।
প্রথম ধারাবাহিক ‘ত্রিনয়নী’ সম্প্রচারণের পর থেকেই নেটাগরিকদের কুমন্তব্য শ্রুতির নিত্যসঙ্গী। কেন 'কালো' মেয়ে ধারাবাহিকের নায়িকা হবে? এই আপত্তি থেকে লাগাতার কটূক্তি শুনতে হয়েছে তাঁকে। শ্রুতি যেমন এ সবে দমেননি, তেমনই দমেননি নেটাগরিকেরাও। বৃহস্পতিবার অভিনেত্রীর পরিচিত এক নেটাগরিক নেটমাধ্যমে লেখেন, ‘শ্রুতি দাসকে এই ধারাবাহিক ('দেশের মাটি') থেকে বাদ দেওয়া হোক।’ তাঁর দাবি, তিনি খুব কাছ থেকে শ্রুতিকে দেখেছেন। অভিনেত্রী নাকি শরীরের বিনিময়ে ‘কাজ’ জোগাড় করেন। সঙ্গে সঙ্গে শ্রুতির সমর্থনে শুরু হয় প্রতিবাদ। অনুরাগী নেটাগরিকেরাই অভিনেত্রীর হয়ে মুখ খোলেন। জানান, প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের কথা তাঁরা মানতে রাজি নন।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেন শ্রুতি।
এদিকে স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘দেশের মাটি’-তে রাজা-মাম্পি জুটির থেকেও কিয়ান-নোয়া জুটি প্রাধান্য পাওয়ায় ক্ষোভ উগরে দেওয়া হচ্ছে ফ্যান পেজেও। শ্রুতি এই ধারাবাহিকে ‘নোয়া’-র চরিত্রে অভিনয় করছেন। নোয়া কিয়ানের স্ত্রী। ফ্যান পেজে কিছু দর্শকের দাবি, কিয়ান-নোয়ার রসায়নের থেকেও তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ রাজা-মাম্পি। তাই নোয়াকে প্রাধান্য দিলে ধারাবাহিক দেখা বন্ধ করে দেবেন তাঁরা। শ্রুতিও তাঁর সামাজিক পাতায় সাফ জানিয়েছেন, ‘বয়কট স্টার জলসা’, ‘বয়কট দেশের মাটি’-- এ সব তাঁকে শুনিয়ে লাভ নেই। নেটাগরিকদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, ‘আমি নায়িকা হতে আসিনি, অভিনেত্রী হতে এসেছি। যিনি বা যাঁরা আমায় যথাযথ চরিত্র দিয়েছেন, আমি তাঁর বা তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’