প্রয়াত ছন্দা সেন। ছবি: সংগৃহীত।
বিধানসভায় পুষ্প প্রদর্শনী দেখতে যেতেন নিয়মিত। আকাশবাণী ছিল তাঁর কর্মক্ষেত্র। খবর পড়তেন দূরদর্শনেও। নিরাসক্ত কণ্ঠে সংবাদপাঠ ছিল সেই যুগের রীতি। পথ প্রদর্শক যাঁরা ছিলেন তাঁদেরই এক জন ছন্দা সেন। গত জুন মাসেও তাঁর পুরনো বন্ধুর হাতে ফুলের তোড়া দেখে বিহ্বল হয়ে বলেছিলেন, ‘‘মনে পড়ে? আমরা যেতাম বিধানসভায় পুষ্প প্রদর্শনী দেখতে!’’
প্রয়াত সেই সংবাদপাঠিকা ছন্দা সেন। বুধবার রাত ২.২৫ নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে প্রয়াত হন তিনি। বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৮ বছর। ১৯৭৪ সালে তিনি আকাশবাণী কলকাতার সংবাদ বিভাগে যোগ দেন সংবাদ পাঠক হিসাবে। পরের বছর যোগ দেন দূরদর্শনে। কলকাতার ভবানীপুরে পৈতৃক বাড়িতেই থাকতেন ছন্দাদেবী। পড়াশোনা করেছেন লেডি ব্রেবর্ন কলেজে। তাঁর স্বামী ও একমাত্র কন্যা বর্তমান।
দূরদর্শনের জন্মলগ্ন থেকে তাঁর উপস্থিতি পর্দায়। আপাত রাশভারী ছন্দা সেনের ভিতরে ছিল না সামান্যতম অহঙ্কার। আকাশবাণী ও দূরদর্শনের সমস্ত স্তরের কর্মীদের সঙ্গে ছিল তাঁর আলাপ। আকাশবাণীতে তাঁর দীর্ঘ দিনের বন্ধু জলি ব্রহ্ম বলেন, “অনেক দিন একসঙ্গে কাজ করেছি। বয়সে অনেকটাই বড়। কিন্তু কখনও মনে হয়নি বয়সে বা অভিজ্ঞতায় বড়। আমরা ‘তুই’ সম্বোধন করেই কথা বলতাম। গত এক বছর ধরে নানা রকম সমস্যায় ভুগছিলেন। জুন মাসে একবার ভাবনীপুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে এসেছিলাম।”
ছন্দা সেনের হৃদ্যন্ত্র সংক্রান্ত কিছু সমস্যা ছিল। সমস্যা ছিল চোখেও। গত এক বছরে বহু বার অসুস্থ হয়েছেন। গত কয়েক দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন এসএসকেএম-এ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে।
আকাশবাণীর অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক কৃষ্ণশর্বরী দাশগুপ্ত বলেন, “আগে দূরদর্শনে ছন্দাদিকে খবর পড়তে দেখতাম। তার পর ১৯৯১ সালে যখন যোগ দিলাম আকাশবাণীতে, তখন আলাপ হল ওঁর সঙ্গে। বয়সে বড় হলেও খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। পরে একসঙ্গে কাজ করেছি। প্রাত্যহিকী বলে একটি অনুষ্ঠান হত আকাশবাণীতে। ছন্দাদি কাজ করেছেন মহিলা মহলেও।”