‘মনে হচ্ছিল বাবা কোথাও হাসছেন!’
দিন কয়েক আগে, ঝলমলে এক সন্ধ্যায় মঞ্চে উঠলেন শান। পাশে এক নবীন গায়িকা। একসঙ্গে গান ধরলেন ‘ইট্স দ্য টাইম টু ডিস্কো’! শানের গলায় এ গান তো সকলেই শুনেছেন। কিন্তু পাশের তরুণীর কণ্ঠে যে মায়াবী সুর, মোহময় আবেদন, তা এর আগে কেউ শোনেননি। কে সেই গায়িকা? তিনি আর কেউ নন, কেকে-র কন্যা তামারা। সঙ্গে ছিলেন পুত্র নকুলও। বাবার জন্মদিনে প্রথম বার এত মানুষের সামনে এসে গাইলেন দু’জন।
কোটি মানুষের হৃদয় ভেঙে চলে গিয়েছেন বলিউড গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে। গত ৩১ মে নজরুল মঞ্চে জীবনের শেষ গান গেয়েছিলেন কেকে। তার আড়াই মাস পর জন্মদিন গায়কের। এই প্রথম জন্মদিন, যেখানে কেকে নেই।
তবে শূন্যতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াল তাঁর পরিবার। স্ত্রী জ্যোতি আগে থেকেই নতুন করে বাঁচার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, কেকে-র দেখানো পথে। এ বার বাবার মশাল তুলে ধরলেন দুই ছেলেমেয়েও। তামারা আর নকুল গান গাইতে মঞ্চে উঠলেন প্রথম বার। বাবার জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানালেন গানে-গানেই। ২৩ অগস্ট দর্শকও রোমাঞ্চিত হয়েছিল সেই অনুষ্ঠানে। যেন কেকে-কে অনুভব করা যাচ্ছে আবার। ছেলেমেয়েই ফিরিয়ে এনেছেন বাবাকে।
সেই অনুষ্ঠানের ছবি, ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন কেকে-ভক্তরা। কেউ লিখেছেন ‘গায়ে কাঁটা দিচ্ছে...!’ কেউ লিখলেন, ‘কেকে তাঁর সব শক্তি ওদের মধ্যে রেখে গিয়েছেন।’
কেকে-র মেয়ে তামারা সে দিনের অনুষ্ঠানের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘প্রথম পারফরমেন্স! আশ্চর্য অভিজ্ঞতা ছিল! আমাদের সঙ্গে যোগদানকারী সমস্ত তাবড় শিল্পীকে ধন্যবাদ! আর শান আঙ্কলের সঙ্গে ‘ইট্স দ্য টাইম টু ডিস্কো’ গাওয়ার সময় দারুণ মজা হয়েছে। মনে হচ্ছিল বাবা কোথাও হাসছেন! যা ঘটছে তা বিশ্বাস করতে পারছি না, বাবা নেই আমি এখনও মানি না।’
গত ৩১ মে কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন কেকে। তাঁর স্মৃতিতে কলকাতায়ও এ বছর অনুষ্ঠান হয়। হৃদয়ের অসুখ নিয়ে কাজ করা ‘হৃদয়া’ নামক সংস্থা কেকে-র জন্য জন্মদিনেই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে গান গেয়েছিলেন উষা উত্থুপ, সপ্তক ভট্টাচার্য, দেবজিৎ সাহা, দুর্নিবার সাহা, গৌরব সরকার, শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো শিল্পী।