Kamaleshwar

ধর্মভেদ চলবে না, লোকসভা নির্বাচন দেখিয়ে দিল: ফলাফল দেখে দাবি কৌশিক, বাদশা, কমলেশ্বরের

দেশের শাসনব্যবস্থা নির্দিষ্ট করে লোকসভা নির্বাচন।দেশবাসী তাই অনেক সজাগ। তাঁরা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন, দাবি বাংলা বিনোদন দুনিয়ার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ২০:৫৫
Share:

লোকসভার ফল দেখে কী বলছেন কৌশিক, বাদশা, কমলেশ্বর? নিজস্ব চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ছিল, ‘অব কে বার ৪০০ পার’। শুধু তা-ই নয়, মোদী তথা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ছিল, দল একাই ৩৭০টিরও বেশি আসন পাবে। ২০২৪-এর সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। সংখ্যাগরিষ্ঠতা দূর অস্ত, বিজেপি একা ২৫০টি আসনও পায়নি। ফলে, সরকার গড়তে মোদী-শাহ নির্ভরশীল এনডিএ-এর অন্য শরিকদের উপরে। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির আশা ছিল, ভাল রকম জয় হাসিল করবে তারা। সেখানেও ব্যর্থতা। তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ২৯টি আসন। বিজেপির ১২। ২০১৯-এ এই সংখ্যা ছিল ১৮। একই ভাবে বাংলায় বামদল নিশ্চিহ্ন। দেশ এবং রাজ্য মিলিয়ে এই সার্বিক ফলাফলে কতটা খুশি বাংলার বিনোদন দুনিয়ার তথাকথিত বামমনস্কেরা? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল কৌশিক সেন, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, বাদশা মৈত্রের সঙ্গে।

Advertisement

‘‘এটা কি বিধানসভা ভোট? যে রাজ্যে বামদলের ফলাফল নিয়ে বক্তব্য রাখব!’’ অভিনেতা, নাট্য নির্দেশক কৌশিক কথা শুরুই করেছেন এই বক্তব্য দিয়ে। তাঁর যুক্তি, ‘‘লোকসভা সারা দেশের নির্বাচন। যা দেশের শাসনব্যবস্থা নির্ধারিত করে। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে আমি এই ফলাফলে খুশি।’’ কৌশিকের দাবি, দেশের তথাকথিত দরিদ্র কৃষক বা মজুর শ্রেণিও যে কতটা সজাগ, এই নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে। বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদী শুরু থেকে মিথ্যে বলে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর দল অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছেন, ভোট জেতার জন্য। তাঁরা দেশে ধর্মের জিগির তুলে ভেদ ছড়াতে চেষ্টা করেছেন। নির্বাচনের জয়লাভের চক্করে এ-ও ভুলে গিয়েছিলেন, ভারত পরধর্মসহিষ্ণু। এখানে জাতিভেদ, ধর্মভেদের স্থান নেই। তাঁরা ভুললেও সে কথা দায়িত্ব নিয়ে মনে করিয়ে দিয়েছেন দেশের জনগণ। কৌশিক সকল দেশবাসীকে তাই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

প্রায় একই সুর পরিচালক কমলেশ্বরের কথায়। তাঁর দাবি, ‘‘ফলাফল বলছে, ভারতবর্ষের মানুষ ততটা বিজেপি তথা এনডিএ জোটের উপরে বিশ্বাস রাখতে পারেননি। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তৃণমূলের উপরে ভরসা করেছেন। এগ্‌জ়িট পোল মেলেনি। এখন দেখার, কারা, কী ভাবে কেন্দ্রে সরকার গঠন করবেন।’’ বাংলায় বাম দল নিশ্চিহ্ন। যাদবপুর কেন্দ্রে সৃজন ভট্টাচার্য কোনও প্রভাব ফেলতে পারেননি শাসকদলের প্রার্থী সায়নী ঘোষের উপরে। কী কারণে এই বিপর্যয়? প্রশ্নের জবাবে পরিচালক জানান, এর কারণ খুঁজতে গেলে সম্মিলিত বিশ্লেষণ জরুরি। এখানে ব্যক্তিবিশেষের মতামত খুব একটা গ্রহণীয় নয়।

Advertisement

কৌশিকের কথার রেশ ধরেই নিজের বক্তব্য রেখেছেন অভিনেতা বাদশাও। তিনিও খুশি লোকসভা নির্বাচনের সার্বিক ফলে। বলেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের ‘বুলডোজ়ার’ নীতি যে কাজে এল না, তাতেই আমি খুশি। কখনও ধর্ম, তো কখনও জাতিভেদ। এ ভাবে ঘরে ঘরে হিংসা ছড়িয়ে দিতে কোনও কসুর করেননি নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দল। পাঁচ বছর সেই অন্যায় সহ্য করার পর ইভিএম যন্ত্রে মানুষ তার জবাব দিয়েছে। সত্যিই ভাল লাগছে।’’ পাশাপাশি, তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলার শাসকদলকে। রাজ্যবাসী তাদের উপরে ভরসা রেখেছে। ফলে, দলের দায়িত্ব আরও বাড়ল বলে তিনি মনে করছেন। রাজ্যে বাম দলের ভূমিকা অবশ্যই তাঁকে হতাশ করেছে। যদিও পার্লামেন্টে বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাম দলের প্রার্থী সদস্য হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন। এই খবর কিছুটা হলেও তাঁকে শান্তি দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement