জন্মদিনের আনন্দের মাঝে আক্ষেপ কাঞ্চনের। ছবি: সংগৃহীত।
টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি রাজনীতির জগতেও নিজের ছাপ ফেলেছেন অনেক দিন। উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। তবে রাজনীতির জন্য যে অভিনয় জগতে আনাগোনা কমেছে, তেমনটা নয়। দুই দিকই চলছে সমানতালে। ৬ মে অভিনেতার জন্মদিন। উইকিপিডিয়া বলছে ৫৩-এ পা দিয়েছেন। অন্য দিকে, বিধায়ক কাঞ্চনেরও বয়স হল দু’বছর। এ দিনেই শপথ নিয়েছিলেন তিনি। তাই শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই শুরু হয়েছে উদ্যাপন। যদিও এই দিনটিতে আনন্দ উদ্যাপন যেমন রয়েছে এক দিকে, অন্য দিকে রয়ে গিয়েছে আক্ষেপও!
কাঞ্চনের জানান, এই দিনটা তিনি বিশেষ বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কাটাতেই পছন্দ করেন। প্রতি বছর জন্মদিনের সকালে কালীঘাটে যাওয়া চাই। অভিনেতার কথায়, ‘‘প্রতিটা মানুষেরই কিছু না কিছু বিশ্বাস থাকে। আমি প্রতিবার জন্মদিনে কালীঘাটে যাই। তবে আজকে উত্তরপাড়ায় যাব। সেখানে কিছুটা সময় কাটাব সেখানকার মানুষজনদের সঙ্গে। কিন্তু ছেলে থাকলে এটা সেরা জন্মদিন হতে পারত।’’ বলতে বলতে আক্ষেপ অভিনেতার গলায়।
১৯৭০ সালে কলকাতার কালীঘাট এলাকায় জন্ম। মিত্র ইনস্টিটিউশনের ছাত্র ছিলেন কাঞ্চন। বাবা ছিলেন কারখানার কর্মী। সামান্য রোজগারেই চলছিল সংসার। বাবা অসুস্থ হতে সংসার চালাতে প্রয়োজন পড়ত মাসিক ১২০০ টাকা। বড় ছেলে হওয়ায় পরিবারের হাল ধরতে অনেক কিছুই করতে হয়েছে তাঁকে। কষ্টের সংসার, তাই সেলসম্যান, পার্লারের ম্যানেজার— কী না করেছেন একটা সময়ে! অভিনয়জীবনেও জায়গা করে নিতে বহু দিন সংগ্রাম করতে হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। কলকাতায় ‘চেতনা’, ‘স্বপ্নসন্ধানী’র মতো একাধিক দলে নাটক করেছেন। প্রথম মঞ্চাভিনয় নব্বইয়ের দশকে ‘অচলায়তন’ নাটকে। টলিউডে তাঁর অভিষেক হয় ‘সাথী’ ছবির হাত ধরে। দেখতে দেখতে প্রায় ১৫০টি ছবি করে ফেলেছেন। একাধিক টিভি সিরিয়ালেও কাজ করেছেন। বছর দুয়েক আগে দাম্পত্যজীবনের কারণে শিরোনামে উঠে আসেন। অভিনেতার বিরুদ্ধে চারিত্রিক ত্রুটি-সহ একাধিক অভিযোগ তোলেন অভিনেতার স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়। ছেলেকে নিয়ে কাঞ্চনের থেকে আলাদা থাকেন এখন। তাই বিশেষ দিনে ছেলের কথাই মনে পড়ছে বাবার। অভিনেতার কথায়, ‘‘ছেলের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে, তিন বার আবেদনের পর এক বার দেখা হয়েছে, সঙ্গে থাকলে সেরা জন্মদিন হতে পারত।’’