দু’বার ক্যানসার , কীভাবে লড়াই চালিয়েছেন ঐন্দ্রিলা? ফাইল-চিত্র।
ভেন্টিলেশনে টেলিভিশন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। বুধবার সন্ধেবেলা আনন্দবাজার অনলাইনে এই খবর প্রকাশ্যে আসা মাত্রই হইহই পড়ে যায় চারিদিকে। দু’বার ক্যানসার জয়ের পর আবারও এমন ঘটনা। অভিনেত্রীর অতীতটা ঠিক কী? কবে এই মারণরোগে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা?
১৯৯৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম ঐন্দ্রিলার। বাবা উত্তম শর্মা, মুর্শিদাবাদের হাসপাতালের চিকিৎসক। মা শিখা শর্মা, একটি নার্সিং হস্টেলের ইন-চার্জ। অভিনেত্রীও কলকাতার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়তেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।
২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জন্মদিনের দিন প্রথম এই মারণরোগের কথা জানতে পারেন ঐন্দ্রিলা। তখন তিনি একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আচমকাই জানতে পারেন অস্থি মজ্জায় কর্কট রোগ বাসা বেঁধেছে। তার পর থেকে জীবনের এক অন্য লড়াই শুরু নায়িকার। পাশে পেয়েছেন কিছু বন্ধুকে। কেউ কেউ আবার ছেড়ে চলে গিয়েছেন। দিল্লিতে চিকিৎসা শুরু হয়। কেমোর পর কেমো, একের পর এক ইঞ্জেকশন, বিকৃত শরীর। তখন মুর্শিদাবাদের বহরমপুরেই থাকতেন ঐন্দ্রিলা ও তাঁর মা-বাবা। রোগগ্রস্ত ঐন্দ্রিলার দিকে এমন ভাবে মানুষ ঘুরে তাকাতেন, যেন তিনি ভিন্গ্রহের প্রাণী। দিল্লি থেকে চিকিৎসকরা সময় দিয়ে দিয়েছিলেন। হাতে আর মাত্র ছ’মাস। কিন্তু টানা দেড় বছর চিকিৎসা চলার পর ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন অভিনেত্রী।
২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল— এই পাঁচ বছর সব ঠিকঠাকই ছিল। সুস্থ হয়ে ওঠার পরই অভিনয় জীবনে পা রাখেন ঐন্দ্রিলা। ২০১৭ সালে ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকের হাত ধরেই টেলিপর্দায় হাতেখড়ি অভিনেত্রীর। ছন্দ কাটে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি মাসে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ডান দিকের কাঁধে আচমকাই যন্ত্রণা শুরু হয়। প্রথমে অবশ্য তিনি ভেবেছিলেন হয়তো শোয়ার দোষে ব্যথা হয়েছে। কিন্তু না, আবারও সেই একই বিপদ। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর ডান দিকে ফুসফুসে একটি ১৯ সেন্টিমিটারের টিউমার আছে। আবারও কেমো, আবারও সেই এক নরক যন্ত্রণা! এ বার আর চিকিৎসাই করাতে চাননি নায়িকা।
মা-বাবা, দিদি আর সব্যসাচীর চেষ্টায় রাজি হন আবারও লড়াই করার জন্য। সবচেয়ে কঠিন মুহূর্ত ছিল অস্ত্রোপচারের সময়টা। ওটি থেকে ফিরবেন তো? সেই সন্দেহ ছিল চিকিৎসকের। তাঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়। ঐন্দ্রিলা কি চান অস্ত্রোপচার করাতে? তখন এতটাই বেঁচে থাকার তাড়না, সিদ্ধান্ত নেন অস্ত্রোপচার করার। শুধু মাত্র কাছের মানুষের ভালবাসার জোরে ফিরে আসা। এই লড়াইয়ের পর বুধবার ঐন্দ্রিলার খবরে গোটা ইন্ডাস্ট্রি চিন্তিত। এখন শুধুই তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার অপেক্ষা।