সৃজিত, যিশু এবং রাজকুমার
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২। তারিখটা ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মাথায়। ওই দিনই মুক্তি পেতে চলেছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম', অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের 'বাবা বেবি ও' এবং রাজকুমার রাও-ভূমি পেডনেকরের ‘বধাই দো’।
অতিমারির ধাক্কা সবে সামলে উঠছে বিনোদন জগত। দর্শকরা ফের একটু একটু করে হলমুখী। তার মধ্যেই একই দিনে তিন তিনটে নতুন ছবি! কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবেন দর্শকরা? চোখ থাকবে কোন তারকার দিকে? কার ছবিই বা বেশি দর্শক টানবে? মঙ্গলবার থেকে লাখ টাকার এই প্রশ্ন ঘুরছে টলিউডের অন্দরমহলে।
মঙ্গলবারই তাদের ২০২২-এর সিনে ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেছে উইন্ডোজ প্রোডাকশন। প্রযোজনা সংস্থার চারটি ছবির একটি, ‘বাবা বেবি ও’ ৪ তারিখেই মুক্তি পাবে বাকি দু’টি ছবির সঙ্গে।
এ দিকে, তিন ছবির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই গড়াবে কোন দিকে? রেষারেষি নাকি সুস্থ প্রতিযোগিতা? চোখ থাকবে সে দিকেও।
আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল সৃজিত মুখোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত এবং অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সৃজিতের থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। তবে সিনে মহলের একাংশের দাবি, জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের ছবি নিয়ে দর্শকদের আলাদা আগ্রহ থাকেই। সেখানে নামীদামি অভিনেতা থাকুন বা না থাকুন। নতুন ছবিতে সৃজিত দর্শকদের উপহার দিচ্ছেন অনিন্দ্য সেনগুপ্ত, শ্রুতি দাস, অর্জুন চক্রবর্তী, মধুরিমা বসাককে। এই প্রজন্মের প্রেম উপস্থাপিত হবে দু'জোড়া যুগলের হাত ধরে।
তুখোড় অভিনেতা হিসেবে রাজকুমার রাও বরাবর প্রথম সারিতে। তাঁরও নিজস্ব দর্শক-অনুরাগী রয়েছেন। তার উপরে সদ্য প্রিয় বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন অভিনেতা। ফলে, রাজকুমারের দিকেই ঝুঁকে তাঁর গোটা রাজপাট। আকর্ষণও অপ্রতিরোধ্য। ‘বধাই দো’ ছবিতে তাঁর যোগ্য সহ-অভিনেতা ভূমি পেডনেকর। তিনিও সু-অভিনেত্রী হিসেবে ইতিমধ্যেই দর্শকমহলে বন্দিত। জুটি হিসেবে প্রথম ছবিতেই রাজকুমার এবং ভূমি একেবারে ভিন্ন স্বাদের চরিত্রে অভিনয় করছেন। হর্ষবর্ধন কুলকার্নির পরিচালনায় এখানে রাজকুমার মহিলা থানার পুলিশ অফিসার! আর ভূমি শরীরচর্চার শিক্ষক।
বাকি রইল ‘বাবা বেবি ও’। উইনডোজ প্রোডাকশনের ছবি মানেই বাংলা ও বাঙালির ঘরের গল্প বড় পর্দায় ধরা পড়ে। সঙ্গে থাকে এক মুঠো চমক। এই ছবিতেও তার কমতি নেই। এই প্রথম জুটি বাঁধছেন যিশু সেনগুপ্ত-শোলাঙ্কি রায়। তার উপরে পর্দায় যিশু যমজ সন্তানের অবিবাহিত বাবা। এ ছাড়া, পরিচালক অরিত্র তাঁর প্রথম ছবি ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ থেকেই দর্শক এবং সমালোচকের কাছে প্রশংসিত। ফলে, এ ছবি ঘিরেও প্রত্যাশা প্রচুর। এই প্রত্যাশা কি কোনও ভাবে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে যিশুকে? আনন্দবাজার অনলাইনকে যিশুর সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘‘শ্যুটের সময়ে আমি প্রচণ্ড ভয় পাই, দুশ্চিন্তা করি। ছবি হয়ে যাওয়ার পরে আর কিচ্ছু থাকে না মাথায়।’’
একই দিনে তিনটি প্রথম সারির ছবির মুক্তি টক্কর না বিনোদন দুনিয়ায় সুস্থ প্রতিযোগিতার উদাহরণ? অভিনেতার যুক্তি, টক্কর ভাবার কোনও কারণ নেই। বরং তিনি চাইছেন, তিনটি ছবিই যেন ভাল ফল করে। কারণ, প্রত্যেকেই প্রচণ্ড পরিশ্রম করে ছবি বানিয়েছেন। অতিমারির খরা কাটিয়ে আবার বিনোদন তার নিজের জায়গায় ফিরছে। এটাই তাঁর কাছে আশার কথা বলে দাবি যিশুর।
৪ ফেব্রুয়ারি যদি শুধুই তাঁর ছবি মুক্তি পেত, তা হলে কি বেশি খুশি হতেন তিনি? অন্তত দর্শক সংখ্যা ভাগ হত না...! কথা শেষের আগেই যিশুর ঠোঁটের গোড়ায় জবাব হাজির, ‘‘দর্শকেরা ভাল ছবি দেখতে পছন্দ করেন। আমার আশা, তিনটি ছবি ভাল লাগলে সবাই তিনটি ছবিই সমান ভাবে দেখতে যাবেন।’’
একই কথা বলেছেন পরিচালকও। তাঁর মতে, সৃজিতের সঙ্গে তাঁর টক্করের কোনও প্রশ্নই নেই। সৃজিত জাতীয় পুরস্কারজয়ী। আর তাঁর এটা দ্বিতীয় ছবি। তাই সকলের ভাবনা সরিয়ে আপাতত নিজের ছবি নিয়েই তিনি বেশি মনোযোগী। ‘বাবা বেবি ও’ যেন সবার ভালবাসা পায়, এই প্রার্থনাই করছেন অরিত্র।