ফাইল চিত্র।
প্র: প্রথম যে দিন জানলেন, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’তে রানিমার ট্র্যাক শেষ হতে চলেছে, কী প্রতিক্রিয়া ছিল?
উ: সকলেই জানতাম, এটা শেষ হবে। কারণ এটা একটা বায়োগ্রাফি। চাইলেই বাড়ানো যায় না। প্রোমো শুটের দিন সকলের মন খারাপ হয়েছিল। চার বছর ধরে ক্রুয়ের সকলে আমাকে দেখেছেন। আমিও এই পরিবারে বড় হয়েছি।
প্র: চার বছরে দিতিপ্রিয়া কতটা বদলেছেন?
উ: এই বয়সে এক কিশোরীর শারীরিক ও মানসিক যা যা পরিবর্তন হয়, আমারও তাই হয়েছে। রানিমার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
প্র: রানিমা আর দিতিপ্রিয়ার কি তবে কোনও মিল ছিল না?
উ: দু’জনেই প্রতিবাদী ও স্পষ্টবাদী। এই বিষয়ে দু’জনেই এক। এ ছাড়া উনি তো মহীয়সী নারী, লেজেন্ড।
প্র: এই চরিত্রে অভিনয় করে দিতিপ্রিয়াও কি ইতিহাস তৈরি করলেন?
উ: না, একেবারেই না (হাসি)।
প্র: আপনি ছাড়া টলিউডের আর কেউ কি এই চরিত্রটি সফল ভাবে করতে পারতেন?
উ: নিশ্চয়ই পারতেন। টলিউডে অনেকে আছেন, যাঁরা খুব ভাল কাজ করছেন। আমাকে এই চরিত্রে দর্শক গ্রহণ করেছেন। দর্শকের আশীর্বাদেই আমি কাজটা করে যেতে পেরেছি।
প্র: রানিমার চরিত্রে অভিনয় করে সেরা কমপ্লিমেন্ট কী পেয়েছেন?
উ: জানবাজারের হাজরা বাড়ির এক পুঁচকে সদস্য আছে, যার এখন পাঁচ-ছ’বছর বয়স। তিন বছর আগেই সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। রানি বুড়ি হোক, তাতে তার এতটুকু অপছন্দ নয়। আমার পাওয়া সেরা বিয়ের প্রস্তাব এটাই (হাসি)। আর একবার বাবার বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে গিয়েছিলাম। অনেক রাত তখন, বিয়েবাড়ি প্রায় ফাঁকা। সেখানে বাংলাদেশের এক পরিবার এসেছিল। সেই পরিবারের একটি মেয়ে আমাকে সামনে দেখে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেছিল। আমি একটু অবাক হয়েছিলাম। আমাকে সামনে দেখে সে বিশ্বাস করতে পারছিল না। বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতে গিয়েও দেখেছি, সকলেই রানিমাকে ছুঁয়ে দেখতে চায়, আমিই আসলে সে কিনা!
প্র: এর পরে কী পরিকল্পনা?
উ: আপাতত আমি টেলিভিশন থেকে বিরতি নেব। চার বছরে রানিমার যে ইমেজ তৈরি হয়েছে, তার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এটা খুব জরুরি। হাতে ছবির কাজ রয়েছে। সে সব শেষ করে, নিজেকে আরও একটু গ্রুম করে তার পরে টিভিতে ফিরব। ধারাবাহিকের প্রস্তাব এর মধ্যেও পেয়েছি। তবে এখনই নয়।
প্র: মাঝে একেবারে শর্ট হেয়ার করে ফেললেন। সেটাও কি এই ইমেজ ছেড়ে বেরোনোর জন্যই?
উ: না, না ওরকম কিছু না। আমি লুক চেঞ্জ করতে ভালবাসি। ছোট চুল ক্যারি করা সহজ। আমাকে ভাল মানায়।
প্র: আর পড়াশোনা?
উ: আশুতোষ কলেজে সোশিয়োলজি নিয়ে ভর্তি হয়েছি। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে, না হলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবে।
প্র: ‘বব বিশ্বাস’-এ অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারব না।
প্র: পাভেলের সঙ্গেও তো একটি ছবি করছেন?
উ: পাভেলদা যতটা বলেছে, ততটাই বলতে পারব। ছবির অন্যতম লিড চরিত্রে আমি। আর সত্যি ঘটনা অবলম্বনে ছবিটি তৈরি হবে।
প্র: এত কম বয়সে এত বড় সাফল্য কি বাড়তি চাপ তৈরি করে?
উ: আমি চাপটা মাথায় নিই না। বরাবরই চ্যালেঞ্জিং চরিত্র করেছি। সে ‘অভিযাত্রিক’-এ অপর্ণা হোক, বা ‘অচেনা উত্তম’-এ সাবুদির (সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়) ভূমিকায়। তবে এ বার আমার বয়সি কোনও চরিত্র করতে চাই। কনটেম্পোরারি গল্পে কাজ করতে চাই।
প্র: মূলধারার ছবির নায়িকা হতে চান?
উ: ইচ্ছে এক রকম থাকে। হয় অন্য কিছু। এখনও অবধি আমি অন্য ধারার ছবির প্রস্তাবই পেয়েছি। কমার্শিয়াল ছবির নায়িকার অফার পাইনি।
প্র: টলিউডের একঝাঁক শিল্পী রাজনীতিতে যোগ দিলেন। আগামী দিনে আপনার কাছে প্রস্তাব এলে কী করবেন?
উ: সবে তো আঠেরো হল। রাজনীতি নিয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। এ বছর প্রথম ভোট দিলাম। সেটা নিয়ে এক্সাইটেড ছিলাম।
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে ফিসফাস, সাফল্য পাওয়ার পরে দিতিপ্রিয়ার অ্যাটিটিউড নাকি বদলেছে?
উ: অনেকে অনেক কিছুই বলে। আমার কাছের মানুষজন কী বলছে, সেটা জরুরি। তারা এমন কিছু বলেনি। আর দর্শকের সঙ্গে যখন ইন্টার্যাক্ট করি, তাঁদেরও এমন মনে হয় না। তাই এই সব কথায় গুরুত্ব দিই না।