রাইমা সেন।
প্র: ‘দ্বিতীয় পুরুষ’-এর শুটিং করতে গিয়ে কতটা নস্ট্যালজিক হয়েছিলেন?
উ: ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর যে সিকুয়েল হতে পারে, সেটা কখনও ভাবিনি। কিন্তু সৃজিত (মুখোপাধ্যায়) আর মণি (মহেন্দ্র সোনি) যখন ফোন করে ছবির কথা বলল, খুশিই হয়েছিলাম। সৃজিতের সঙ্গে এত বছর পরে কাজ করলাম। আগে একটু হট-হেডেড ছিল। বিয়ে করে বেশ শান্ত হয়ে গিয়েছে (মুচকি হাসি)। আবীরের (চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে অনেক দিন পরে কাজ করলাম। ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর সময়ে একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম। কিন্তু এ বার পুরনো কানেকশন, চেনাজানা ইউনিট, সব মিলিয়ে ব্যাপারটা কমফর্টিং ছিল।
প্র: এই ছবিতে আগেরটির মতোই পুরুষ চরিত্র অনেক বেশি। সেই সুবাদে সেটে একটু বেশি অ্যাটেনশন পেতেন?
উ: পরম-সৃজিত-আবীর একসঙ্গে থাকলে, ওরা আমারও এক ধাপ উপর দিয়ে যায়। সারাক্ষণ আমার লেগ-পুল করেছে শুটিংয়ে। আসলে ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর সময়ে আমি সৃজিতকে এত ভাল করে চিনতাম না, পরমকেও না। আবীরকে একটু-আধটু। কিন্তু এখন তো এত বছরের চেনা সকলে। তাই এ বার শুটিংয়ের শেষে জমিয়ে আড্ডা হত।
প্র: বিরিয়ানি ও ডাল-ভাতের মিম ফলো করছেন?
উ: শুনেছি অনেক মিম হয়েছে।
প্র: পরমব্রত এবং আবীরের মধ্যে কে বিরিয়ানি আর কে ডাল-ভাত?
উ: যার নামই বলব, আর এক জন রেগে যাবে। আমি নিরপেক্ষ। দু’জনেই আমার কাছে সমান।
প্র: দু’জনেই ডাল-ভাত, না বিরিয়ানি?
উ: ডাল-ভাত (জোরে হাসি)।
প্র: গত বছর ‘তারিখ’ ছাড়া আর কোনও বাংলা ছবিতে আপনাকে দেখা যায়নি। কেন?
উ: গত বছর অ্যামাজ়ন প্রাইমের জন্য ‘দ্য লাস্ট আওয়ার’-এর সিজ়ন ওয়ান শুট করলাম। বিনয় পাঠকের সঙ্গে ‘আলিয়া গায়েব হো গয়ি’র শুট করেছি। অতুল কুলকার্নির সঙ্গে ‘আনিয়া’ করলাম। এগুলো এ বছর রিলিজ় করার কথা। আর সিয়াটেলে ‘গ্রে স্টোরিজ়’ নামে আর একটি ওয়েব সিরিজ় করেছি। যেটায় আমার সঙ্গে আছেন গৌরব গেরা। এগুলো করতে গিয়ে বাংলায় বেশি কাজ করা হয়নি।
প্র: হিন্দির জন্য বাংলায় কাজ কম করছেন?
উ: তামিলেও একটা ছবি করেছি। অন্য ভাষায় যখন এত কাজ পাচ্ছি, বাংলায় সেরা পরিচালক বা অন্য ধরনের স্ক্রিপ্ট ছাড়া আর কাজ করব না। সে দিন চলে গিয়েছে, যখন যা-ই অফার করা হত, তাই করতে হত।
প্র: আনন্দ প্লাসের শেষ সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আপনি নাকি পার্টি করা কমিয়ে দিয়েছেন?
উ: ওই সাক্ষাৎকারটা বোধ হয় এপ্রিল ফুল-এর দিন বেরিয়েছিল (মুচকি হাসি)। আসলে আমি যত বেশি কাজ করি, পার্টি তার চেয়েও বেশি করি।
প্র: আপনার সাম্প্রতিক একটি পার্টির ছবি নিয়ে তো খুব চর্চা হয়েছে...
উ: কোনটা? (বেশ উত্তেজিত)
প্র: আপনি, পাওলি দাম আর অর্জুন দেবের ছবিটা।
উ: ২০১৯-এর লাস্ট স্যাটারডে সেলিব্রেট করতে আমরা তিন জনে নাইট ক্লাবে গিয়েছিলাম। দ্যাট ওয়াজ় গ্রেট। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ওই ছবি বাদে আরও কিছু ছবি দিয়েছিলাম।
প্র: কিন্তু ওই ছবির পিছনে গল্প আছে? ইনস্টাগ্রামে এখন নেই ছবিটা!
উ: আমি ভীষণ মুডি। পরে হয়তো মনে হয়েছে, আমাকে দেখতে ভাল লাগছে না, তাই ডিলিট করে দিয়েছি। এমনিতে আমি, অর্জুন আর পাওলি প্রায়ই হ্যাংআউট করি।
প্র: সেখানে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে গসিপ হয়?
উ: মনে হয়, আমি টলিউডে কোনও কিছুরই কেন্দ্রে নেই। তাই আমাকে কেউ গসিপ দেয় না।
প্র: পাওলিও কোনও গসিপ দেন না?
উ: ও কী গসিপ দেবে? বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আর পাওলির এটা বড় গুণ, কোনও দিন কাউকে নিয়ে গসিপ করে না। পার্নোর (মিত্র) সঙ্গেও কথা হয়।
প্র: পার্নোও গসিপ করেন না?
উ: (মেকআপ শিল্পী যিনি পার্নোরও ভাল বন্ধু, তাঁর দিকে তাকিয়ে) পার্নো গসিপ দেয় তোমাকে? (মেকআপ শিল্পী মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলেন)। তা হলে ওর সঙ্গে গসিপ করে, আমার সঙ্গে নয়। আসলে আমি তো সকলের সামনে বলে দিই, ‘‘ওহ, এটা হয়েছিল?’’(হাসি)
প্র: কবে বিয়ে করবেন প্রশ্নটা শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে যান না?
উ: আমার বিয়ে হলে কার কী সুবিধে হবে? (উত্তেজিত)
প্র: পাওলি, নুসরত (জাহান) বিয়ে করলেন। আপনারটাও তো পাঠকেরা জানতে চান।
উ: আমি হ্যাপিলি সিঙ্গল। বাবা-মা যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়েছেন, রোজগার করছি, ট্রাভেল করছি। কারও কাছে জবাবদিহি করার নেই। শুধু বিয়ে করার জন্য বিয়ে করব না, যদি না পাগলের মতো কারও প্রেমে পড়ি। আর তাকেও আমার সব কিছুর সঙ্গে অ্যাডজাস্ট, কম্প্রোমাইজ় করতে হবে।
প্র: বোন রিয়াকে দেখেও বিয়ের ইচ্ছে হয় না?
উ: রিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, ম্যারেড লাইফ কেমন? ও বলল, ‘সেম, কোনও পার্থক্য নেই। ইট’স অ্যাজ় গুড অ্যাজ় হ্যাভিং আ নিউ বয়ফ্রেন্ড।’ ও আর শিবম খুব ভাল আছে। আমাকে বিয়ে করতে হলে কিছু নতুনত্ব তো চাই।
প্র: দেশ জুড়ে এত বিষয়ে এত প্রতিবাদ। কিছু বলবেন না?
উ: সাক্ষাৎকারের আগে মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই প্রশ্নটা করলে কী বলব? মা বলেছেন, ‘নো কমেন্টস’।
প্র: ছাত্র নির্যাতনের প্রতিবাদেও কিছুই বলবেন না?
উ: ভায়োলেন্স সাপোর্ট করি না। একজন বলেছেন, ছাত্রদের না মেরে তাদের বোঝাতে। সেটা আমারও মত।
প্র: কিন্তু আপনি কোনও মন্তব্য না করলে লোকে তো জানতেও পারবেন না, আপনি কী ভাবছেন?
উ: আমাকে ফলো করলে দেখবেন, কোনও দিনই রাজনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য করি না। বিতর্কে ঢুকি না। কোথা থেকে কী হয়ে যাবে, ট্রোলড হব...
প্র: ট্রোলিংকে ভয় পান?
উ: আমি তো পোস্টই করি না। তাই ট্রোলড হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু অন্যদের তো দেখি। ট্রোলিং অ্যাফেক্ট তো করেই।