দিতিপ্রিয়া খুঁটিয়ে গৌরবের বিয়ের প্ল্যানিং শুনছেন।
গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের হুঁশ নেই। তাঁর বিয়ে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির উত্তেজনার শেষ নেই! কী পরছেন, মেনু কী? মধুচন্দ্রিমায় কোথায় যাবেন? কী বলছেন শ্বশুরবাড়ি? মুখ খুললেন আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে
গৌরব চট্টোপাধ্যায়-দেবলীনা কুমারের বিয়ের উত্তেজনায় ইন্ডাস্ট্রির চোখে সত্যিই ঘুম নেই...
গৌরব: (হাল্কা হেসে) তাই? গৌরবের সত্যিই বিয়ে নিয়ে মাতামাতি নেই। হুঁশ থাকার মতো অবস্থাতেই নেই আমি। ডাবল শিফটে কাজ চলছে। সারা দিন শ্যুটিং। তাতেই কাহিল। রাত হচ্ছে বাড়ি ফিরতে। সময় যেন পাখা মেলে উড়ছে।
তিন বছর আগের প্রথম দেখা মনে পড়ছে?
গৌরব: এক্কেবারেই নয়। ঘোর বাস্তবে রয়েছি। বিয়েতে কী পরব কী পরব না, সে টুকুও ভাবার ফুরসৎ পাচ্ছি না। ডিজাইনার বন্ধু অভিষেক রায়ের হাতে পুরোটা ছেড়ে দিয়েছি। ও জানে, আমার পছন্দ। সেই মতো পোশাক বানাচ্ছে। তাছাড়া, আমি ভীষণ আন-রোম্যান্টিক। এই ধরনের ভাবনা-চিন্তা একেবারেই আসে না।
রোম্যান্টিক না হয়েই প্রেম! ক্রেডিট কার?
গৌরব: যাঁরা আমার বিপরীতে থেকেছেন (হাসি)। শুধু তো দেবলীনা নয়, আরও অনেকের সঙ্গেই ডেট করেছি। তাঁরা তাঁদের মতো করে আমাকে নিয়ে থেকেছেন।
কোন বিশেষ গুণের জন্য দেবলীনা ‘ঘরণী’?
গৌরব: এটা ও ভাবে বলা যায়! একটা সময়ের পর মনে হয়েছে, আমরা এক ছাদের নীচে জীবন কাটাতে পারি। সেই ভাবনা থেকেই এই পদক্ষেপ।
প্রথম আলাপের দিন নাকি শর্টস পরে গিয়েছিলেন? দেবলীনা ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন?
গৌরব: প্রথম আলাপের দিন কিনা মনে নেই। তবে হ্যাঁ, একবার শর্টস পরে চলে গিয়েছিলাম। দেবলীনা পছন্দ করেনি। বারণ করেছিল।
দেবলীনার পোশাক নিয়ে আপনার এ রকম কোনও আপত্তি আছে?
গৌরব: শাড়ি থেকে শর্টস--- কোনও কিছুতেই আপত্তি নেই।
টিম ‘রাণী রাসমণি’ আইবুড়ো ভাতের এলাহি আয়োজন করেছিল...
গৌরব: সাধারণত এই ধরনের গ্যাদারিং থেকে দূরে থাকারই চেষ্টা করি। দেবলীনাকেও বলি, জন্মদিন বা কোনও বিশেষ দিনে অনেক লোকজন ডেকে বিশাল কিছু করো না। সবাই আমায় নিয়ে এত হইহই করলে অস্বস্তিই হয়। টিম মেটদের কথা আলাদা। রোজ ওঁদের সঙ্গে ওঠাবসায় কমফোর্ট জোন তৈরি হয়েই গিয়েছে। ওঁরাও আমার ফিলিংস বোঝেন। আয়োজনেও সেই ছাপ ছিল। ঘরোয়া ভাবে কাঁসার থালা, বাটি, গ্লাসে, খাবার, জল সাজিয়ে যখন দিল, সত্যিই মনটা ভরে গিয়েছিল।
এই শীতেই সাত পাকে বাঁধা পড়তে চলেছে গৌরব-দেবলীনা
‘রানিমা’ কী বলছেন? ‘বাবা জীবন’-এর বিয়ে বলে কথা!
গৌরব: (হেসে ফেলে) ভীষণ উত্তেজিত দিতিপ্রিয়া। সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে শুনছে। আবার টিপসও দিচ্ছে আমাকে। বলেছে, অনুষ্ঠানের দিনগুলোয় হাল্কা মেকআপ কোরো। এখন ছেলেরাও সাজছে। আমি জানতাম না বিষয়টা। শুনে অবাক হয়েছি।
সঙ্গীত, মেহেন্দি, বিয়ে, রিসেপশন--- সব অনুষ্ঠান হবে?
গৌরব: সঙ্গীত হবে জানি। মেহেন্দি হবে কিনা জানি না। বিয়ের অনুষ্ঠান হবে ছোট করে।
মেনু ঠিক হয়ে গিয়েছে? হানিমুনে কোথায় যাবেন?
গৌরব: মেনু বাড়ির সবাই মিলে ঠিক করছেন। মানে আমার দুই বোন, ভাই, মা-কাকিমারা। আমি শুধু বলেছি, আমার পছন্দের বিরিয়ানি যেন থাকে। এখনও অতিমারি কমেনি। তাই আপাতত হনিমুনও হচ্ছে না। আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। বেড়ানোর সময় অনেক পাব। বিয়ের পরেই যে যার মতো কাজে ব্যস্ত হয়ে যাব।
কাজের কথা পরে। আগে বলুন, দুই পরিবার আপনাদের ‘পছন্দ’ দেখে খুশি?
গৌরব: দেবলীনাকে আমার দুই বোন আগে থেকেই চিনত। পরে বাড়ির সবার সঙ্গে আলাপ করাই। ওর সঙ্গে মিশে ভাল লেগেছে সবার। আর আমি বিয়ের কথা বলার আগে দেবলীনাদের বাড়ি যাইনি। যে দিন গেলাম, উষ্ণ, আন্তরিক অভ্যর্থনা পেয়েছি।
বিয়ের মেনুতে পছন্দের বিরিয়ানি চান গৌরব
আরও পড়ুন: ‘শরীরের সঙ্গে যুদ্ধ চলল ২ বছর’, আশার আলো দেখতে মরিয়া মোনালি
শ্বশুরমশাই মেয়র পারিষদ। এটা প্লাস পয়েন্ট...
গৌরব: আমি কিন্তু প্ল্যান করে কিচ্ছু করিনি। আমি কখনও, কারওর থেকে কোনও বাড়তি সুযোগ নিইনি। নেবও না। এটা ইন্ডাস্ট্রি থেকে কাছের মানুষ সবাই খুব ভাল করে জানেন।
আপনি বরাবরই ‘অভিনেত্রী বৌ’ চেয়েছেন?
গৌরব: আমার কারওর কাছে চাওয়া বলুন বা এক্সপেকটেশন কিচ্ছু নেই। আজ বলে নয়, কোনও দিনই নেই। আমাকে নিয়ে এক সঙ্গে থাকতে পারলে, চলতে পারলেই হল। যা হয়েছে বা হচ্ছে, পুরোটাই কাকতালীয়।
বহু জন আনন্দিত। কিছু জন অখুশিও। তাঁরা আগের বিয়ে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাকে ট্রোলও করছেন। দেখেছেন?
গৌরব: তাই? দেখিনি তো! ট্রোল করছেন, করুন। কী বলব। আটকাবই বা কী করে! আমি এ সব নিয়ে তাই ভাবছিই না।
আরও পড়ুন: ‘চুরি’ করেননি, মধুর ভান্ডারকারের অভিযোগ উড়িয়ে জানালেন কর্ণ
অনিন্দিতার সঙ্গে আপনার, দেবলীনার সম্পর্ক ভাল, চ্যাট শো বলছে। অনিন্দিতা আসছেন বিয়েতে?
গৌরব: সেটা ওকে জিজ্ঞেস করলেই মনে হয় ভাল হয়। (একটু চুপ থেকে) এই প্রশ্ন না করলেই নয়?
এ বার দেবলীনার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করবেন?
গৌরব: স্ক্রিন শেয়ারের একেবারেই পক্ষপাতী নই। ওটা ভাল ক্লিক করে বলে মনে হয় না। ব্যক্তি জীবন ব্যক্তিগতই থাক। নিজেদের মতো করে কাজ করাটাই মনে হয় বুদ্ধিমানের। কী বলেন?