Bollywood

ঘর ছাড়েন, ছিলেন সেনাবাহিনীতেও, নানা ওঠাপড়া খৈয়ামের জীবনে

তাঁর সুরে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েছিলেন গায়িকা জগজিৎ কউর। সামাজিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন দুই ভিনধর্মী প্রণয়ী। লতা-আশার সমসাময়িক জগজিৎ কম কাজ করেছেন। তাঁর গানও ছিল জনপ্রিয়তার তুঙ্গে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ১৪:০৯
Share:
০১ ১৬

উচ্চশিক্ষিত পরিবারের ছেলে। কিন্তু বালক সাদাতের মন বসত না পড়াশোনায়। তাকে টানত গান আর ছবি। গ্রাম ছেড়ে শহরে পালিয়ে আসত সে। হিন্দি ছবি দেখবে বলে। তখন কে আর জানত একদিন সাদাত-ই সঙ্গীতসাধক খৈয়াম হয়ে নতুন সুরে বাঁধবেন দেশকে।

০২ ১৬

খৈয়ামের জন্ম ১৯২৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশের নওয়ানশহর জেলা ছিল তাঁর জন্মস্থান। শৈশবে গান শিখবেন বলে দিল্লি পালিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়ির চাপে ফিরতে হয়েছিল সে বার।

Advertisement
০৩ ১৬

কিন্তু হার মানলেন না খৈয়াম। আবার ঘর ছাড়লেন। এ বার তাঁর গন্তব্য ছিল লাহৌর। বিখ্যাত সুরকার বাবা চিশতীর কাছে গান শিখবেন বলে। ছ’মাস থাকলেন তাঁর সহকারী হয়ে। ১৯৪৩ সালে ১৭ বছর বয়সে ফিরে এলেন লুধিয়ানায়।

০৪ ১৬

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কিছুদিন ছিলেন সেনাবাহিনীতেও। কিন্তু বুঝলেন এ জীবন তাঁর নয়। পাড়ি দিলেন আজকের মুম্বই, সে কালের বম্বেতে। কয়েক বছর পরে শিকে ছিঁড়ল। সুরকার হিসেবে কাজ করলেন ১৯৪৮ সালে, ‘হীর রঞ্ঝা’ ছবিতে।

০৫ ১৬

তাঁর প্রথম কাজ শর্মাজি-বর্মাজি নামের জুটিতে। তিনি ছিলেন শর্মাজি। কিন্তু সে জুটি ভেঙে গেল। দেশভাগের পরে বর্মাজি নামের আড়ালে থাকা সুরকার রহমান বর্মা চলে গেলেন পাকিস্তানে। এরপর একাই কাজ করা শুরু করলেন।

০৬ ১৬

প্রথম ব্রেক ১৯৫০ সালে, ‘বিবি’ ছবিতে। মহম্মদ রফির কণ্ঠে তাঁর গান সুপারহিট সেই ছবিতে। সাফল্য এল তিন বছর পরে, ‘ফুটপাথ’ ছবিতেও। তালাত মামুদের কণ্ঠে জনপ্রিয় হল তাঁর সুর।

০৭ ১৬

সুরকার হিসেবে প্রথম বড় সাফল্য ও পরিচিতি এল ‘ফির সুবহ হোগি’ ছবিতে। রাজ কপূর-মালা সিনহা অভিনীত এই ছবিতে মুকেশ ও আশা ভোঁসলের কণ্ঠে তাঁর সুর তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

০৮ ১৬

‘শোলা অর শবনম’ ছবিতে কইফি অজমির লেখা গানে সুর দেন তিনি। এরপর ‘শগুন’, ‘আখরি খত’, ‘সঙ্কল্প’ ছবিতে নিজের জনপ্রিয়তাকে আরও দৃঢ় করেন খৈয়াম।

০৯ ১৬

১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় আইকনিক ছবি ‘কভি কভি’। যশ চোপড়ার এই ছবিতে সাহির লুধিয়াভির কথা আর খৈয়ামের সুর মিলে জন্ম নেয় মাইলফলক গান ‘কভি কভি মেরে দিল মে খায়াল আতা হ্যায়’।

১০ ১৬

এই ছবির আরও প্রতিটি গান মানুষের মনেক মণিকোঠায় থেকে গিয়েছে চিরতরে।

১১ ১৬

সাত ও আটের দশক ছিল খৈয়ামের সুরসৃষ্টির স্বর্ণযুগ। তাঁর সেরা কাজের তালিকায় আছে ‘ত্রিশূল’, ‘থোড়ি সি বেওয়াফাই’, ‘বাজার’, ‘দর্দ’, ‘নুরি’, ‘নাখুদা’, ‘সওয়াল’, ‘খানদান’, ‘রাজিয়া সুলতান’-এর মতো ছবি।

১২ ১৬

খৈয়ামের আর এক আইকনিক সুরস‌ৃষ্টি ‘উমরাও জান’ ছবিতে। ১৯৮১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে আশা ভোঁসলের কণ্ঠে ‘ইন আঁখো কি’ এবং ‘দিল চিজ ক্যায়া হ্যায়’ নতুন যুগের সূচনা করে বলিউডে।

১৩ ১৬

কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ খৈয়াম ভূষিত হয়েছেন পদ্মভূষণ, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, জাতীয় পুরস্কার এবং ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে। তাঁকে ভারতীয় হিন্দি সিনেমার দুনিয়ায় গজল ঘরানার সুরে অপ্রতিদ্বন্দ্বী বলে মানা হয়।

১৪ ১৬

তাঁর সুরে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েছিলেন গায়িকা জগজিৎ কউর। সামাজিক বাধার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন দুই ভিনধর্মী প্রণয়ী। লতা-আশার সমসাময়িক জগজিৎ কম কাজ করেছেন। তাঁর গানও ছিল জনপ্রিয়।

১৫ ১৬

তাঁদের একমাত্র সন্তান, অভিনেতা প্রদীপ খৈয়াম প্রয়াত হন ২০১২ সালে। তাঁর স্মৃতিতে একটি ট্রাস্ট তৈরি করেছিলেন খৈয়াম দম্পতি। দুঃস্থ অভিনেতা ও টেকনিশিয়ানসদের সাহায্য করার লক্ষ্যে। খৈয়াম জানিয়েছিলেন তাঁর সম্পত্তির বড় অংশ দান করা হবে ওই ট্রাস্টে।

১৬ ১৬

ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন খৈয়াম। ৯২ বছর বয়সে চলে গেলেন ১৯ অগস্ট। রেখে গেলেন তাঁর শাশ্বত সুরভাণ্ডার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement