ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনও রাখঢাক নেই তাঁর। তাই কৈশোরে থেকে কার কার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, বাবার পাশে বসেই অবলীলায় তা বলতে পারেন সারা আলি খান। কিন্তু সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুতে এ বার তাঁর সেই ‘বোল্ড’ ভাবমূর্তি নিয়েও কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে।
‘কেদারনাথ’ ছবির শুটিংয়ের সময় সারা ও সুশান্তের মধ্যে সম্পর্ক শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। সে নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি সারা। তবে সুশান্তের আগেও যত বারই সম্পর্কে জড়িয়েছেন সারা, কোনও বারই তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
অভিনয়ে হাতেখড়ির আগে সারার সঙ্গে বীর পাহাড়িয়ার সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়। বীর প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের পৌত্র। তাঁদের নিয়ে একসময় বহু লেখালেখি হতো। এমনকি বীর এবং সারা, দু’জনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক সঙ্গে তোলা ছবিও শেয়ার করতেন।
বীরের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা গণমাধ্যমে স্বীকারও করেছিলেন সারা। কিন্তু সারার জনপ্রিয়তা যত বাড়তে থাকে, বীরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ততই তলানিতে এসে ঠেকে। এক সময় দু’জনের ব্রেকআপ হয়ে যায়। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর রাতারাতি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বীরের সব ছবি মুছে ফেলেন সারা।
কেদারনাথ ছবির মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন সারা। যদিও শাহিদ কপূরের ভাই ঈশান খট্টরের সঙ্গে কর্ণ জোহরের প্রযোজনাতেই অভিনয়ে হাতেখড়ি হওয়ার কথা ছিল তাঁর। পরবর্তী কালে সেই ছবিতে অভিনয় করেন শ্রীদেবী-কন্যা জাহ্নবী কপূর।
তবে একসঙ্গে ছবি না করলেও সেখান থেকে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতার সূত্রপাত হয় বলে শোনা যায়। পরবর্তী কালে ‘কফি উইথ কর্ণ’ অনুষ্ঠানে সারা জানান, কপূর ভাইদের মধ্যে এক জনকে ডেট করেছেন তিনি। কপূর ভাই বলতে তিনি আসলে ঈশানকেই বুঝিয়েছেন বলে জল্পনা শুরু হয়। তবে খুব অল্প দিনের মধ্যেই সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। ঈশানের দাদা শাহিদের সঙ্গে আবার এক সময় করিনা কপূরের সম্পর্ক ছিল, যিনি এখন সারার বাবা সইফ আলি খানের ঘরণী।
ঈশানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে অনিল কপূরের ছেলে হর্ষবর্ধনের সঙ্গেও সারার ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল বলে শোনা যায়। মায়ানগরীতে ‘ক্যাসানোভা’ হিসেবে পরিচিত হর্ষবর্ধন। বলা হয়, তাই মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অমৃতা সিংহ ভাল ভাবে নেননি। তবে এ নিয়ে মেয়ের উপর কোনও জোর খাটাননি তিনি।
পরবর্তী কালে হর্ষবর্ধনও অভিনয় জগতে পা রাখেন। কিন্তু সারার মতো জনপ্রিয়তা পাননি তিনি। বরং কেরিয়ারের শুরুতেই তাঁর গায়ে ‘ফ্লপ হিরো’ তকমা সেঁটে যায়। তাতেই নাকি সারার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে ইতি পড়ে।
কেরিয়ারের প্রথম ছবি ‘কেদারনাথ’-এর শুটিংয়ের সময় সুশান্ত সিংহ রাজপুতের সঙ্গে সারা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে প্রয়াত অভিনেতার ঘনিষ্ঠ লোকজন জানিয়েছেন। বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে দু’জনে তাইল্যান্ড বেড়াতেও গিয়েছিলেন। সুশান্তের ফার্ম হাউসেও নাকি সারার নিয়মিত আনাগোনা ছিল। কিন্তু আচমকাই তাঁদের সম্পর্কে ছেদ পড়ে।
সুশান্তের মৃত্যুর পর যে সমস্ত তথ্য সামনে এসেছে, তা থেকে জানা গিয়েছে, সারাকে নাকি প্রোপোজ করবেন বলেই ঠিক করেছিলেন সুশান্ত। কিন্তু তার আগেই দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। একটি চ্যাট শো-তে প্রথম ছবির নায়কের সঙ্গে সারাকে প্রেম না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন করিনা। তাঁদের কথামতোই সারা সম্পর্ক থেকে সরে এসেছিলেন কিনা, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।
সুশান্তের পর কার্তিক আরিয়ানের সঙ্গে নাম জড়ায় সারা আলি খানের। তবে কার্তিকের প্রতি নিজের ভাললাগার কথা সারাই প্রথম প্রকাশ করেন। বাবা সইফের সঙ্গে ‘কফি উইথ কর্ণ’ অনুষ্ঠানে সারা জানান, কার্তিকের সঙ্গে প্রেম করতে চান তিনি। তার কিছু দিন পরেই ইমতিয়াজ আলির ‘লভ আজকাল’-এর সিক্যুয়েলে একসঙ্গে কাজ শুরু করেন সারা ও কার্তিক।
সেইসময় শুটিংয়ের বাইরেও এক সঙ্গে নানা জায়গায় দেখা যেতো তাঁদের। এমনকি দু’জনের নিভৃতে সময় কাটানোর ছবিও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কার্তিকের অনুরাগীরা সারাকে ‘বৌদি’ বলে ডাকতেও শুরু করেন। কিন্তু ছবিটি মুক্তি পাওয়ার আগেই সারা ও কার্তিকের বিচ্ছেদের খবর শোনা যায়। ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ার কিছু দিনের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরকে আনফলো করে দেন সারা ও কার্তিক।