ছবি: ফেসবুক
স্কুল থেকে কলেজ। ১৯৯৩ থেকে ২০০০। যেন প্রমাণ সময়ের দূরত্ব, যে সময়ে এক জন স্কুল পেরিয়ে কলেজে যায়। এই সময়ের মধ্যেই নচিকেতার স্কুল বাসে করে চলে যাওয়া ‘নীলাঞ্জনা’ বাঙালি মননে ফিরে এসেছিল কলেজ পড়ুয়া ‘ঝিন্টি’ হয়ে। আজ এত দিন পর, দু’জনের যদি দেখা হয়ে যায়? শিলাজি্তের সঙ্গে নচিকেতার নয়, ঝিন্টি আর নীলাঞ্জনার? কেমন হবে?
আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকারে শিলাজিতের কাছে এসেছিল এই প্রশ্ন। তিনি বললেন, ‘‘বেশ ভাল এই বিষয়টা। কেমন হবে হঠাৎ দু’জনের দেখা হয়ে গেলে, তা কিন্তু ভাবার বিষয়। নচিকেতাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন আপনারা!’’ বাংলা আধুনিক গানে অসংখ্য কালজয়ী চরিত্র তৈরি করেছেন ’৯০-পরবর্তী শিল্পীরা। অঞ্জনের বেলা বোস, নচিকেতার নীলাঞ্জনা, রাজশ্রী, শিলাজিতের ঝিন্টি, সুদেষ্ণা, প্রেমিক বাঙালির মনে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছে। তাদের দু’জনেরই সাক্ষাৎ...! হেসে ফেললেন শিলাজিৎ।
১৯৯৩ সালে নচিকেতার ‘এই বেশ ভাল আছি’ অ্যালবামটি প্রকাশ পায়। বাংলা সঙ্গীতে যেন বিস্ফোরণ ঘটে। সেই সময়ের নাগরিক জীবনের ক্লান্তি, হতাশা, ভালবাসা, আনন্দ, সব আয়নার মতো তুলে ধরেন নচিকেতা। সেই অ্যালবামের শেষ গানটি ছিল 'নীলাঞ্জনা-১'। এর পরের বছরের অ্যালবাম ‘কে যায়’, সেখানে রয়েছে 'নীলাঞ্জনা ২'। তবে ’৯৩-এর গানটি যেন পাকাপাকি স্থান করে নেয় শ্রোতাদের স্মৃতিরেখায়। প্রায় ৩০ বছরের মুখে দাঁড়িয়েও এই গানের জনপ্রিয়তা অমলিন।
শিলাজিতের ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’ মুক্তি পায় ‘এই বেশ ভাল আছি’-র সাত বছর পরে, ২০০০ সালে। প্রবল জনপ্রিয় হয় এই গানের অ্যালবাম। সেখানেই ঝিন্টির সঙ্গে পরিচয় বাঙালির। আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকারে শিলাজিৎ বলেছেন, ‘‘একটা বৃষ্টির দুপুরে গানটি মাথায় আসে। সে দিন আমি ফোনে প্রেম করছিলাম। মেয়েটির নাম ছিল ঝুমুর। আমরা দু’জনেই অনেকটা দূরে আছি। সে বলে, 'যদি কাছে যেতে পারতাম।' আমি বলেছিলাম, 'তুই বৃষ্টি হলে ভাল হত।' সেই মাথায় রয়ে গিয়েছিল এই কথাটা। পরে ভাবলাম, এই কাব্যটা সাধারণ মানুষের পছন্দ হবে। তাই সেখান থেকেই ‘ঝিন্টি তুই বৃষ্টি হতে পারতিস’ গানটা তৈরি হয়।’ একটি মিউজিক ভিডিয়োয় শিলাজিৎ ঝিন্টিকে নিয়ে এক সময় বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হয় ঝিন্টি বাঙালি নয়, কে যে সে, ঠিক জানি না।’’
স্কুল পড়ুয়া নীলাঞ্জনার সঙ্গে কলেজ পড়ুয়া ঝিন্টির যদি সত্যিই দেখা হয় এত বছর পর, তা হলে কী হতে পারে? বোঝা মুশকিল। হয়তো কোনও প্রেমহীন সময়ে দু’জনে শহরের কোনও প্রান্তে বসে তারা যাচাই করে নিতে পারবে পাল্টে যাওয়া সময়ের হৃদয়ের ওঠাপড়া। কী হবে? শ্রোতাদের ভাবনায় থাকুক, মনের অন্দরে গল্প বোনা হোক রাত জেগে।