অভিষেক চৌবে।
প্র: সত্যজিৎ রায় বলতে প্রথমেই কী মনে পড়ে আপনার?
উ: দীর্ঘ দিন রাঁচীতে ছিলাম, এক বাঙালি পাড়ায়। সেই সময়ে একদিন মা-বাবার সঙ্গে বসে দূরদর্শনে ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবিটা দেখি। সত্যজিৎ রায়ের ছবির সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ ওটাই।
প্র: পরিচালক সত্যজিৎ রায় আপনাকে কতটা প্রভাবিত করেছে?
উ: যে ভাবে উনি আমাদের নিজস্ব গল্প বেছে নিতেন, নিজের দেশের মানুষদের বুঝতেন আর তুলে ধরতেন ছবিতে, সেটা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পক্ষেই সম্ভব। সত্যজিৎ রায়ের এই দিকটি আমাকে ভীষণ প্রভাবিত করেছে।
প্র: ‘হাঙ্গামা হ্যায় কিউঁ বরপা’র গল্পটিই বাছলেন কেন?
উ: ‘রে’ অ্যান্থলজির শো-রানার সায়ন্তন (মুখোপাধ্যায়) আমার কাছে যখন প্রস্তাবটা আনেন, ‘বারীন ভৌমিকের ব্যারাম’ গল্পটা খুব মনে ধরেছিল। মনে হয়েছিল, পরিচালক হিসেবে অনেক সুযোগ পাব। গল্পের সূক্ষ্ম হিউমরটা ভাল লেগেছিল।
প্র: মনোজ বাজপেয়ী এবং গজরাজ রাওকে একসঙ্গে নির্দেশনা দেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: এক কথায় অনবদ্য! ওঁরা দু’জনেই ‘ব্যান্ডিট কুইন’-এ অভিনয় করলেও একসঙ্গে দৃশ্য ছিল না। দিল্লি শহর আর সেখানকার থিয়েটারকে ঘিরে দু’জনেরই অনেক স্মৃতি। ওঁরা সেটে এলেই ফুরফুরে মেজাজে থাকতাম সকলে। নিজেদের ব্যবহারে বুঝতে দিতেন না, ওঁরা আসলে কত বড় অভিনেতা। মনোজ আবার খুঁটিনাটির দিকে ভীষণ নজর দেন।
প্র: পরিচালক হিসেবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে কী ভাবে দেখেন আপনি?
উ: ওটিটি না থাকলে এমন একটা সময়ে দর্শক কী দেখতেন, সেটা কেউ ভেবে দেখেছে কখনও? আমাদের মতো পরিচালক-সহ ছবির সঙ্গে জড়িত প্রতিটি মানুষই কাজ হারাত। আমিও বড় স্ক্রিনে ছবি দেখার অপেক্ষায় আছি আরও অনেকের মতোই। কিন্তু একজন লেখক ও পরিচালক হিসেবে ওটিটি আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।
প্র: সত্যজিৎ রায়ের কোনও ছবিকে রিক্রিয়েট করতে চান?
উ: সে সাহস আমার নেই। ওঁর ছবিগুলিকে না ছোঁয়াই কাম্য। তবে কলকাতাকে বেস করে বাঙালি অভিনেতাদের নিয়ে ছবি তৈরির ইচ্ছে রয়েছে আমার।
প্র: সদ্য পেরিয়েছে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুবার্ষিকী। ওঁর সঙ্গে কাজ করার বিশেষ স্মৃতি কী?
উ: প্রচণ্ড গরমে ‘সোনচিড়িয়া’র ক্লাইম্যাক্স শুট করছিলাম। কস্টিউম পরার পরে কখনও নিজের চরিত্র থেকে বেরোত না। ক্যামেরা রেডি হলেই মাটি থেকে ধুলোবালি তুলে মুখে মেখে নিয়ে তৈরি হয়ে যেত। কাজের প্রতি ওর এই নিষ্ঠা ভোলার নয়।