তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়
অভিনেত্রী ও গল্পকার তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়কে অনেকেই চেনেন। তবে পরিচালনায় তিনি নতুন। সে যাত্রা অবশ্য পরিকল্পনামাফিক নয়। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি ‘রোম রোম মে’-এর প্রদর্শনে এসেছিলেন তন্নিষ্ঠা। ‘‘আমার ছবির আইডিয়ার জন্ম কলকাতায়। ‘লায়ন’-এর শুটিংয়ের সময়ে নওয়াজ়উদ্দিনকে (সিদ্দিকি) ভেনিসে আমার এক অভিজ্ঞতার কথা বলেছিলাম। ও আমাকে গল্পটা লিখতে বলে। পরে মুম্বইয়ে দেখা হলে, নওয়াজ় আবার জিজ্ঞেস করে। লেখার সময়ে ভাবিওনি, আমি পরিচালনা করব। তবে নওয়াজ়ই বলে, আমি যে ভাবে ফিল করেছি, সেটা আর কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারবে না...’’ বুসান, রোমের ফেস্টিভ্যালেও প্রদর্শিত হয়েছে তন্নিষ্ঠার এই ছবি।
আন্তর্জাতিক ছবির নিয়মিত মুখ তন্নিষ্ঠা বলছিলেন, ‘‘বাইরের পরিচালকরা যখন এখানকার শিল্পীদের নিয়ে ছবি করেন, বিষয় হিসেবে এই দেশ এক্সপ্লোর করেন। আমরা বিদেশে গেলে শুধু গানের শুটিং করে চলে আসি। আমার ছবিতে রোম নিছক লোকেশন নয়। রোমের ইতিহাস, নারীবাদ, রেনেসাঁসের সঙ্গে ছবিটার গভীর যোগ। আর ইটালির অভিনেতাদের চরিত্রও গুরুত্বপূর্ণ।’’
মূল ধারার কমার্শিয়াল ছবিতে তন্নিষ্ঠাকে তেমন দেখা যায় না। ‘‘আমি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অভিনেতা। এমন এক শিল্পী, যার মাথা সব সময়ে অ্যাক্টিভ। তাই এমন চরিত্র করতে পারব না, যেখানে শিল্পীর আদৌ কিছু করার নেই। তবে বলিউডের নাচ-গানের খুব ভক্ত আমি। মণি রত্নম বা সঞ্জয় লীলা ভন্সালী যে ধরনের ছবি বানান, যে ভাবে ভারতীয় সংস্কৃতি সেলিব্রেট করেন, সেটাও ভাল লাগে। আর ছবির ফর্ম এখন বদলাচ্ছে।’’
হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে কনটেন্টের বদলের জন্য দর্শককেই কৃতিত্ব দিলেন অভিনেত্রী। ‘‘দর্শক বদলাচ্ছেন। ভিন্ন স্বাদের ছবি দেখছেন। তাঁদের উৎসাহেই আমরা অন্য ধরনের ছবি করতে পারছি।’’
তবে বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে ঘোরার পরেও তন্নিষ্ঠার মতে, ‘‘ফেস্টিভ্যালের ছবির প্রতি সাধারণ দর্শকের ধারণা বদলায়নি। ইউরোপের দেশগুলিতে ছ’-সাত বছর বয়স থেকেই শিশুদের এই কালচারের সঙ্গে পরিচয় করানো হয়। আসলে কালচার ভাষার মতো। একটা ভাষা না জানলে সেই ভাষার শিল্পের সমাদর হবে কী করে?’’
বাংলা ছবির প্রযোজকদের প্রতি অভিনেত্রীর বার্তা, ‘‘সংবাদমাধ্যম লিখুক, যাতে আমাকে বাংলা ছবিতে নেওয়া হয়।’’ সময় পেলে নতুন বাংলা ছবিও দেখেন। ‘‘ঋদ্ধির (সেন) ‘নগরকীর্তন’ দেখলাম। খুব ভাল লেগেছে,’’ আপ্লুত অভিনেত্রী।