যে কোনও সাফল্যের পিছনেই রয়েছে কঠোর পরিশ্রম। অথচ অনেক সময় ভাগ্য এমন খেলা দেখায়, যে কঠোর পরিশ্রমের আগেই সাফল্য চলে আসে।
বলিউডে ৩ খানের ক্ষেত্রে অনেকটা সেটাই হয়েছে। নিজের অজান্তেই বলিউডের ৩ খানের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন আরেক খান।
সেই ৩ খান হলেন শাহরুখ, সলমন এবং সইফ। এঁদের ভাগ্যের চাকা যিনি ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি আমির খান। কখন এই ৩ খানকে সুপারহিট করে তুলেছিলেন আমির খান? কেন করেছিলেন? কী ভাবে করেছিলেন?
প্রথমেই শাহরুখ খান। টেলিভিশনে আত্মপ্রকাশ শাহরুখের। ১৯৯১ সালে মায়ের মৃত্যুর পর তিনি মুম্বই চলে আসেন। মুম্বইয়ে এসেই পরপর ৪টি ফিল্মে সই করে ফেলেন। প্রথম থেকেই অবশ্য দর্শকরা শাহরুখকে পছন্দ করতে শুরু করেছিলেন।
কিন্তু ১৯৯৩ সালে ১টি ছবি তাঁর ভাগ্য পুরোপুরি বদলে দেয়। ‘ডর’। সেই ছবিতে ভিলেন হয়েছিলেন শাহরুখ। এখানেই আমিরের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকার কথা শাহরুখের।
কারণ ‘ডর’ ফিল্মে অভিনয় করার কথা ছিল আমিরের। কিন্তু চরিত্রটি পছন্দ হয়নি তাঁর। আমিরের জায়গায় ওই ফিল্মে শাহরুখকে নেন পরিচালক। তাঁকে ভীষণ পছন্দ করেছিলেন দর্শকেরা। ছবি সুপারহিট হয়।
১৯৯৪-এর সুপারহিট ফিল্ম ‘হম আপকে হ্যায় কওন’। মাধুরী দীক্ষিত এবং সলমনের রসায়ন পছন্দ করেছিলেন দর্শকেরা। তবে এর আগে সলমনের ভাগ্য খুব একটা ভাল যাচ্ছিল না। পরপর ৫টি ফিল্ম বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল।
এই ফিল্মেও অভিনয় করার কথা ছিল আমিরের। পরিচালকের থেকে স্ক্রিপ্ট শোনার পর পছন্দ হয়নি তাঁর। আমিরের মনে হয়েছিল, নায়িকার চরিত্র অনেক বেশি প্রভাবশালী। তিনি সরে এসেছিলেন। সেই ফিল্মের হাত ধরেই ফের উঠে দাঁড়ান সলমন।
তবে নিজের অজান্তে আমির সবচেয়ে বেশি উপকার করেছেন সইফ আলি খানের। ছবির নাম ‘ওমকারা’। সাল ২০০৬।
উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ‘ওথেলো’-র কাহিনি অবলম্বনে তৈরি ওই ফিল্মের প্রস্তাব পরিচালককে প্রথমে কিন্তু আমিরই দেন। পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজ স্ক্রিপ্ট তৈরি করে আমিরকে শোনান। স্ক্রিপ্ট আমিরের এতটাই পছন্দ হয়েছিল, যে ফিল্মে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি সহ-প্রযোজনারও দায়িত্ব নিয়ে নেন।
সেখানেই গোল বাধে। ফিল্মের অনেক কিছুই আমির নিজের পছন্দমতো বদলাতে শুরু করেন। পরিচালক যাঁদের যে চরিত্রে ভেবেছিলেন, তা আমিরের মন মতো হচ্ছিল না। বারবার পরিচালকের সঙ্গে এই নিয়ে তাঁর মতবিরোধ হতে থাকে এবং অবশেষে ফিল্ম থেকেই সরে দাঁড়ান আমির।
২০০৬ সালে ‘ওমকারা’ মুক্তি পায়। আমিরের বদলে ফিল্মে ‘ল্যাংড়া ত্যাগী’র চরিত্রে সুযোগ পান সইফ। বাকিটা ইতিহাস।